উচ্চ আদালতে যাচ্ছে নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলন

কর্ণফুলীতে উচ্ছেদ

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ১২ অক্টোবর, ২০২১ at ৫:৪৬ পূর্বাহ্ণ

বারবার তাগাদা সত্ত্বেও কর্ণফুলীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না করায় আগামী ১৫ দিনের মধ্যে হাই কোর্টের আদেশ অবমাননার অভিযোগ এনে সুনির্দিষ্ট প্রতিকার চেয়ে উচ্চ আদালতে যাবে চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলন। গতকাল সোমবার সকালে চাক্তাই খালের মোহনাস্থ কর্ণফুলীর তীরে এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানানো হয়।
সংগঠনের সভাপতি চৌধুরী ফরিদের সভাপতিত্বে সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন অধ্যাপক মনোজ কুমার দেব। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন চুয়েট অধ্যাপক ড. স্বপন কুমার পালিত, চবি অধ্যাপক ড. মঞ্জুরুল কিবরিয়া, চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক আলীউর রাহমান, কর্ণফুলী নদী সাম্পান মাঝি কল্যাণ সমিতি ফেডারেশন সভাপতি এস এম পেয়ার আলী, সিনিয়র সহ সভাপতি জাফর আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লোকমান দয়াল প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, হাইকোর্টের আদেশ জলাশয় সংরক্ষণ আইন ২০০০ এর ‘ধারা ৫ অনুযায়ী খেলার মাঠ, উন্মুক্ত স্থান, উদ্যান ও প্রাকৃতিক জলাধারের শ্রেণী পরিবর্তনের বাধা নিষেধ। এই আইনের বিধান অনুযায়ী খেলার মাঠ, উন্মুক্ত স্থান, উদ্যান এবং প্রাকৃতিক জলাধার হিসাবে চিহ্নিত জায়গার শ্রেণী পরিবর্তন করা যাবে না। এতে বলা হয় যে, বিএস ১নং খতিয়ানের ৮৬৫১ দাগের ১৪৭.১০ একর জায়গা কর্ণফুলী নদী হিসাবে চিহ্নিত করে উচ্ছেদ নোটিশ দিয়েছিলেন এবং মাছ বাজারকে বরাদ্দকৃত ১,৭৫,২৬৩ বর্গফুট বা ৪.০২৬৩ একর নদীর অংশে নতুন মাছ বাজার গড়ে উঠেছে উল্লেখ করে তা উচ্ছেদ করতে বলা হয়। মাছ বাজার ও ভেড়া মার্কেট উচ্ছেদ করার বিষয়ে হাইকোর্টের আদেশের ৪ নম্বর কলামে সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু বন্দর কর্তৃপক্ষ তার তোয়াক্কা না করেই নতুন মাছ বাজার চলমান রেখেছে। ১৫ বছরের চুক্তিনামা দিয়ে কর্ণফুলী নদী দখল ও ভরাট করে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ মহামান্য হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করেছে বলেও সাংবাদিক সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়।
২০১৯ সালের আদেশের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে নতুন মাছ বাজার উচ্ছেদ করা বাধ্যতামূলক ছিল বলে উল্লেখ করে সাংবাদিক সম্মেলনে বলা হয় যে, বন্দর কর্তৃপক্ষ মাছ বাজার উচ্ছেদ না করে নতুন করে বরফকল স্থাপনের জন্য কর্ণফুলী নদীর মাঝখানে শাহআমানত ব্রিজের মাঝপিলার বরাবর ২ হাজার বর্গফুট নদী নতুন করে লিজ দিয়েছে। যা সরাসরি মহামান্য হাইকোর্টের আদেশের লঙ্ঘন।
হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী কর্ণফুলী নদীতে স্থাপিত মাছ বাজার ও বরফকলের চুক্তি বাতিল করতে গত ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখে বন্দর চেয়ারম্যান বরাবরে ১০ দিনের সময়সীমা দিয়ে আবেদন করা হয় বলে উল্লেখ করে গতকাল ওই আবেদনের শেষ দিন ছিল। এই বিষয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষ কোন ধরনের সাড়া দেয়নি। একই আবেদন সিডিএ চেয়ারম্যান বরাবরে জানানো হয়েছিল। সিডিএ থেকেও কোন সাড়া দেয়া হয়নি।
ফিরিঙ্গি বাজার মোড় থেকে মেরিনার্স পার্ক নতুন মাছ বাজার, ভেড়া মার্কেট থেকে বাকলিয়া চরের মোড় পর্যন্ত ৪৭ ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের দখলে থাকা সহস্রাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে গত বছরের ২০ ডিসেম্বর উচ্ছেদ নোটিশ প্রদান করেছিল চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। উক্ত নোটিশ প্রদানের এক বছর দশ মাস গত হলেও রহস্যজনক কারণে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়নি বলেও সাংবাদিক সম্মেলনে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। মহামান্য হাইকোর্টের আদেশ থাকলেও উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা না করে আদালত অবমাননা করা হয়েছে। বিষয়টি আদালতের নজরে এনে প্রতিকার চাওয়া হবে বলেও সাংবাদিক সম্মেলনে জানানো হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা
পরবর্তী নিবন্ধহালিশহরে গৃহায়ণের প্রকল্পে জিকে শামীম কানেকশন!