ইসির ‘নিরীক্ষায়’ ৩৯টি ‘পরীক্ষায়’ ৪০ দল

দল নিবন্ধন

| শনিবার , ২৯ অক্টোবর, ২০২২ at ১০:২৫ পূর্বাহ্ণ

নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলো ঠিকঠাক শর্ত পালন করছে কিনা, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে তার তদারকিতে নামছে নির্বাচন কমিশন। কেন্দ্রীয় ও মাঠ পর্যায়ে দলের অফিস; নির্বাচিত কমিটি এবং সব স্তরে ৩৩ শতাংশ নারীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হচ্ছে কিনা- তা জানতে চেয়ে নিবন্ধিত দলগুলোর কাছে হালনাগাদ তথ্য চেয়েছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। ত্রিশ কার্য দিবসের মধ্যে এ বিষয়ে কমিশনকে তথ্য দিতে নিবন্ধিত ৩৯টি দলের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদককে চিঠি দেওয়া হয়েছে। খবর বিডিনিউজের।

ইসির উপ সচিব আব্দুল হালিম খান জানান, আগামী সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে কমিশন নতুন দল নিবন্ধনের আবেদন নিচ্ছে; পাশাপাশি নিবন্ধিত পুরনো দলগুলোর কাছে তথ্য চাইছে। নির্বাচনী আইনের ক্ষমতা বলে ইসি সময়ে সময়ে দলগুলোর কাছে যে কোনো তথ্য চাইতে পারে। যেসব শর্ত মেনে দলগুলো নিবন্ধন পেয়েছিল, তা যথাযথভাবে পালন করা হচ্ছে কিনা, তা যাচাই করতে পারে ইসি। দলগুলোর কাছ থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়ার পর তা কমিশনের কাছে উপস্থাপন করা হবে বলে জানান ইসির এ কর্মকর্তা।

নবম সংসদ নির্বাচনের আগে ২০০৮ সালে দল নিবন্ধনের এ নিয়ম চালু করে ইসি। গত এক যুগে ৪৪টি দল কমিশনের নিবন্ধন পেয়েছে। এর মধ্যে পাঁচটি দলের নিবন্ধন বাতিল হয়েছে। বর্তমানে নিবন্ধিত দল রয়েছে ৩৯টি। ২০১৭ সালে নিবন্ধিত দলগুলোর কমিটি ও অফিসের খোঁজে মাঠে নামে ইসি। শর্ত পালনে ব্যর্থ দলগুলোর নিবন্ধন বাতিলের উদ্যোগ নেওয়া হয়। নিবন্ধন শর্ত প্রতিপালন না করায় একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৮ সালে ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন এবং ভোটের পরে ২০২০ সালে প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক পার্টি-পিডিপি, ২০২১ সালে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপার নিবন্ধন বাতিল করে ইসি। কাজী ফারুকের ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলনের কাছে কমিশন যেসব তথ্য চেয়েছিল তা দিতে ব্যর্থ হয় দলটি। ২০০৮ সালে শর্তসাপেক্ষে নিবন্ধন পেলেও স্থায়ী সংশোধিত গঠনতন্ত্র দিতে না পারায় নবম সংসদ নির্বাচনের ২০০৯ সালে ফ্রিডম পার্টির নিবন্ধন বাতিল হয়। দশম সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৩ সালে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন আদালত অবৈধ ঘোষণা করে। একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ইসির প্রকাশিত গেজেটে বলা হয়, আদালত জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করায় আরপিও অনুযায়ী দলটির নিবন্ধন বাতিল করা হল।

কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশনের ঘোষিত রোডম্যাপে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে দল নিবন্ধনের কাজ শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে। নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, স্বাভাবিকভাবেই (দলগুলোকে) চিঠিপত্র দেই; কিছু তথ্য দেন। আমরা কিছুটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করি, মাঠ পর্যায়ের নির্বাচন কর্মকর্তাদের কাছে তথ্য পাঠাই, তারা যাচাই করে আমাদের পাঠায়। যিদি সবগুলো (দলগুলোর নিবন্ধনশর্ত প্রতিপালন) তথ্য ঠিক থাকে, তাহলে তো নিবন্ধন টিকে যায়। শর্ত ঠিকভাবে প্রতিপালন না করলে, যাচাই বাছাইয়ের পর সঠিক তথ্য না পেলে কমিশন পর্যালোচনা করে পদক্ষেপ নেবে বলে জানান তিনি।

এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে অন্তত ৪০টি দল নিবন্ধন চেয়ে ইসিতে আবেদন করেছে। নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, নতুন দল নিবন্ধন চলমান প্রক্রিয়া। শর্ত পূরণ করেছে কিনা, গঠনতন্ত্র ঠিক আছে কিনা- সব ঠিক থাকলে নিবন্ধন পাবে। শর্তপূরণ করতে না পারলে নিবন্ধন পাবে না। এবার আগ্রহী দলগুলোর মধ্যে জামায়াতের সাবেক নেতাদের সম্পৃক্ততা থাকায় বিডিপি ও এবি পার্টি আলোচনায় রয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ২০০ ব্যবসায়ীর নিয়ন্ত্রণে চট্টগ্রামের হুন্ডি বাণিজ্য
পরবর্তী নিবন্ধপ্রধানমন্ত্রীর মাছ ধরার ছবি নেটিজেনদের মন জয় করেছে