ইফতারি বাজারে মন্দা

লকডাউন ও গণপরিবহন বন্ধের প্রভাব

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ২৮ এপ্রিল, ২০২১ at ৭:২৩ পূর্বাহ্ণ

রমজান এলেই বিকেল থেকে ইফতারি বিক্রির ধুম লেগে যেতো। ক্রেতারা মুখরোচক বিভিন্ন ধরনের ইফতারি আইটেম কিনতে হোটেল রেস্টুরেন্টে ভিড় করতেন। কিন্তু গত বছরের মতো এবারও করোনা পরিস্থিতি সব কিছু পাল্টে দিয়েছে। এখন অল্প কিছু ইফতারি নিয়ে দোকানিরা বসে থাকলেও খুব একটা দেখা মিলছে না ক্রেতার । ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত বছরের চেয়ে এ বছরের অবস্থা একেবারে খারাপ। লকডাউনের কারণে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ। তাই ইফতারি বাজারেও পড়েছে ভাটা। আগে দূর দূরান্ত থেকে ইফতারি কিনতে অনেকে ছুটে আসতেন। এখন সেই দৃশ্য আর দেখা যাচ্ছে না।
গতকাল বিকেলে নগরীর জিইসি মোড়, ২ নং গেট, ওয়াসা মোড় ও নিউ মার্কেট এলাকার ইফতারির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বিক্রেতারা রেশমী জিলাপি, শাহী জিলাপি, বুরিন্দা, চনাবুট, পিঁয়াজু, বেগুনি, ছমুচা, অন্থন, চিকেন স্পিং রোল, চিকেন জালি কাবাব, চিকেন সাসলিক, চিকেন উইংস, চিকেন ড্রামস্টিক, উইংস চপ, স্পাইসি চিকেন ফ্রাই, গ্রীল চিকেন, চিকেন শর্মা, শর্মা বার্গার, বাটার নান, শাহী পরাটা, চিকেন চপ, চিকেন টিক্কা, চিকেন বটি কাবাব, বিফ সিক কাবাব, জাফরানি শরবত, বোরহানি, ফিন্নি, চিকেন শাহী হালিম, বিফ শাহী হালিমের পসরা সাজিয়ে ক্রেতার অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন। কিন্তু বাজারে প্রত্যাশিত ক্রেতার দেখা নেই। ব্যক্তিগত বাহন নিয়ে কিছু কিছু ক্রেতাকে অবশ্য মুখরোচক এসব পণ্য কিনতে দেখা যায়।
নিউমার্কেট সাদিয়া’স কিচেনের ম্যানেজার মোহাম্মদ ইয়াছিন দৈনিক আজাদীকে বলেন, রমজান মাসে এ পর্যন্ত ইফতারির বেচাবিক্রির অবস্থা খুব খারাপ। আমরা সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেবল পার্সেল ইফতারি বিক্রি করছি, যেহেতু সরকার করোনা পরিস্থিতির কারণে বসে খাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তবে গণপরিবহন বন্ধ থাকার কারণে ক্রেতার সংখ্যা একেবারে কম। গত বছর করোনাকালে আমরা এ পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়নি।
আফিফ হাসান রেজা নামের একজন ক্রেতা জানান, করোনার কারণে এখন বাইরে থেকে ইফতারি তেমন কেনা হচ্ছে। মনে একটা সন্দেহ থাকে। তারপরও আজকে (গতকাল) বাচ্চারা হালিম খেতে চাচ্ছিল, তাই ছুটে আসা।
নিউ মার্কেট এলাকার ‘ডিলাইট’ শপের ম্যানেজার কাউসার উদ্দিন বলেন, গত বছরের তুলনায় বেচাবিক্রি প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। এখন ইফতারি বিক্রি করার সময়, দম ফেলার সময় ফুসরত থাকতো না। ক্রেতাদের দীর্ঘ লাইন পড়ে যেত। এখন ইফতারি বিক্রি করতে হচ্ছে একেবারে ঝিমিয়ে ঝিমিয়ে।
একই অবস্থা দেখা যায় নগরীর অলিগলির ইফতারির দোকানগুলোতেও। দামপাড়া ১নং গলিতে কথা হয় বিক্রেতা ইসমাইল হোসেনের সাথে। তিনি জানান, প্রথমদিকে অর্ধেক ইফতারি আইটেম অবিক্রিত থেকে যেতো। পরবর্তীতে ইফতারি তৈরি কমিয়ে দিই। তারপরও বিক্রি কমে গেছে। করোনার আগে ইফতার বাজার সরগরম থাকতো। পাড়ার সবাই ইফতারি কিনতে লাইন ধরতো। কিন্তু মানুষের মধ্যে করোনার ভীতি এসে যাওয়ায় অনেকে বাইরের ইফতারি আর কিনছেন না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহুইপ শামসুল পরিবারের সম্মান ক্ষুণ্নের জন্য নানা কল্পকাহিনী
পরবর্তী নিবন্ধযাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল অনিশ্চিত