ইতিহাসের দ্বারপ্রান্তে আইসল্যান্ড। প্রথম ইউরোপীয় দেশ হিসেবে নারী সংখ্যাগরিষ্ঠ পার্লামেন্ট গড়ছে দেশটি। কেবল আনুষ্ঠানিক ঘোষণাটাই এখন বাকি। আইসল্যান্ডে সদ্য সমাপ্ত জাতীয় নির্বাচনে চূড়ান্ত ফলের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আলথিংগি নামে দেশটির ৬৩ আসনের পার্লামেন্টে এবার নারী নির্বাচিত হয়েছেন ৩৩ জন, অর্থাৎ, ৫২ শতাংশ আসনে জয়ী হয়েছেন নারীরা। খবর বিডিনিউজের।
বিবিসি জানায়, ২০১৭ সালের সর্বশেষ নির্বাচনের তুলনায় এবার নারীরা ৯টি আসন বেশি পেয়েছেন। ইউরোপের কোনও দেশের পার্লামেন্টে এর আগে নারী এমপি’র সংখ্যা ৫০ শতাংশ পার হয়নি। অবশ্য সুইডেনে নারীরা ৪৭ শতাংশ আসনে জিতে এর কাছাকাছি গিয়েছিল। অন্যান্য দেশের মতো আইসল্যান্ডের পার্লামেন্টে আইনগতভাবে নারী প্রতিনিধি নির্বাচনের কোনও কোটা ব্যবস্থা নেই। তারপরও নির্বাচনে অংশ নিতে চাইলে রাজনৈতিক দলগুলোর নির্দিষ্টসংখ্যক আসনে নারী প্রার্থী দেওয়ার নিয়ম রয়েছে।
লিঙ্গসমতার জন্য দীর্ঘদিন ধরেই পরিচিতি পেয়ে আসছে আইসল্যান্ড। লিঙ্গসমতা নিয়ে ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরামের মার্চের প্রকাশিত বার্ষিক সূচকে দেখা গেছে, টানা ১২ বছরের মতো এই সূচকে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে আইস্যান্ড। আইসল্যান্ডে নারী কর্মীদের মাতৃত্বকালীন ছুটির মতো পুরুষরাও পিতৃত্বকালীন ছুটি পান। অনেক বছর ধরেই লিঙ্গসমতার এমন আরও দৃষ্টান্ত আছে দেশটিতে। ১৯৬১ সালে প্রথম দেশ হিসেবে নারী ও পুরুষকে সমান মজুরি দিতে আইন পাস করে দেশটি।
আইসল্যান্ড প্রথম দেশ যারা ১৯৮০ সালে বিশ্বের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করেছিল। এবার বিরোধীদল পাইরেট পার্টি থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন লিনিয়া রুন তাহা করিম। তার বয়স ২১ বছর। দেশের সর্বকনিষ্ঠ এমপি হচ্ছেন তিনি। বিশ্বে বর্তমানে মাত্র পাঁচটি দেশে অন্তত অর্ধেক নারী এমপি রয়েছে। সর্বোচ্চ ৬১.৩ শতাংশ নারী এমপি নিয়ে শীর্ষে আছে আফ্রিকার দেশ রুয়ান্ডা।
এরপর কিউবায় ৫৩.৪ শতাংশ, নিকারাগুয়ায় ৫০.৬ শতাংশ, মেঙিকো ও সংযুক্ত আরব আমিরাত দুদেশেই ৫০ শতাংশ এমপি নারী। আর যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে এই হার যথাক্রমে ৩৪.২ এবং ২৭.৬ শতাংশ।