আসামি না হয়েও সাড়ে ৪ মাস হাজতবাস

আদালতে জবানবন্দি

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ৪ জুলাই, ২০২২ at ৭:৫১ পূর্বাহ্ণ

দীর্ঘদিন মালেশিয়ায় ছিলেন জাসেদুল হক। ২০১৭ সালে দেশে ফিরেন। এর মধ্যে কোনো সমস্যা হয়নি। সমস্যা দেখা দেয় গত ২১ ফেব্রুয়ারি। রামু থানা পুলিশের হাতে চট্টগ্রাম আদালতের একটি সাজাপরোয়ানা মূলে গ্রেপ্তার হন। তখন থেকে আজ অবদি জাসেদুল হক নামের ওই যুবক কারাগারে বন্দি জীবন কাটাচ্ছেন। নাম ঠিকানার মিল থাকায় অন্য একজনের জায়গায় তিনি কারাভোগ করছেন বলে অভিযোগ তার পরিবারের। বিষয়টি কক্সবাজার কারা কর্তৃপক্ষও জানে। এ সংক্রান্তে কারা কর্তৃপক্ষের দেওয়া একটি চিঠির বিষয়ে গতকাল চট্টগ্রামের চতুর্থ মহানগর দায়রা জজ আদালতে একটি শুনানিও অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে জাসেদুলকে কারাগার থেকে হাজির করা হয়। একপর্যায়ে ‘তিনি কেন কারাগারে’ এ বিষয়ে বিচারকের কাছে তার বক্তব্য তুলে ধরেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী ওমর ফুয়াদ আজাদীকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, কারাগারের একটি চিঠির উপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে জাসেদুলের বক্তব্য রেকর্ড করেন বিচারক।
পরে সব রেকর্ডপত্র আমরা উচ্চ আদালতে পাঠিয়ে দিয়েছি। এখন তার বিষয়ে উচ্চ আদালতই সিদ্ধান্ত নিবেন। বেঞ্চ সহকারী আরো বলেন, তিনি যে প্রকৃত আসামি নন তা প্রথমে আমাদের আদালতকে জানানোর কথা ছিল। কিন্তু তা না করে উচ্চ আদালতে জামিন চেয়ে আবেদন করেন। সে অনুযায়ী ৬ মাসের জামিনও পান তিনি। কিন্তু বের হতে পারছেন না। তাদের ভুলের কারণেই এ অবস্থা হয়েছে। কারণ জামিন নিয়েছেন প্রকৃত আসামি হিসেবে।
এদিকে জাসেদুল হকের ভাই সাজেদুল হক প্রকাশ সাহেদ খান আজাদীকে বলেন, আমার ভাই মালেশিয়ায় গেছেন ২০১০ সালে। অন্যদিকে যে মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন সেই মামলার সৃষ্টি হয়েছে ২০১১ সালে। বিমান বন্দরসহ সব জায়গায় তার বিদেশ যাওয়ার বিষয়টির রেকর্ড রয়েছে। এ ছাড়া ২০১৭ সালে মালেশিয়া থেকে ফিরে আসার পরও কোনো সমস্যা হয়নি। কিন্তু গত ২১ ফেব্রুয়ারি রামু থানা পুলিশ হঠাৎ তাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। তখন আমরা পুলিশকে বলেছিলাম সে প্রকৃত আসামি নয়, কিন্তু তারা কথা শুনেননি। প্রকৃত আসামির ছবি জেলখানায় রয়েছে। সে কিছুদিন কারাগারেও ছিল। পরে জামিনে গিয়ে লাপাত্তা হয়ে পড়ে। শুধুমাত্র নামের মিল থাকায় ভাইকে কারাগারে থাকতে হচ্ছে। আর প্রকৃত আসামি বাইরে হাওয়া খাচ্ছে। ভাইকে ফাঁসাতেই ওই লোক তার নাম ব্যবহার করেছে।
আদালতসূত্র জানায়, গত বছর পাহাড়তলী থানার ওই মাদক মামলায় জাসেদুল হক নামের প্রকৃত আসামিকে ৫ বছরের কারাদণ্ড, ১ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদণ্ড দেন চট্টগ্রামের চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত। যাকে সাজা দেয়া হয় তিনি কক্সবাজার জেলার রামু থানাধীন রাজাকুল সিকদার পাড়ার ওবায়দুল হকের ছেলে। প্রকৃত আসামি নন দাবি করা জাসেদুলের সাথে এর সবকিছুর মিল রয়েছে। আদালতসূত্র আরো জানায়, ২০১১ সালের ১ মার্চ পাহাড়তলী থানাধীন হালিশহর রোডের একটি ক্লাবের সামনে থেকে ১৫০ পিস ইয়াবাসহ জাসেদুল হক নামের প্রকৃত আসামিকে গ্রেপ্তার করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একটি টিম।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅস্ত্র দিয়ে মালিককে ফাঁসাতে গিয়ে ফেঁসে গেলেন দুই সহযোগীসহ কর্মচারী
পরবর্তী নিবন্ধ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আদালতের পার্কিং এলাকা থেকে নির্মাণ সামগ্রী অপসারণের আহ্বান আইনজীবী সমিতির