আসামির দায়ের কোপে বিচ্ছিন্ন পুলিশের কবজি

মামলার বাদী ও আরেক কনস্টেবল আহত

লোহাগাড়া প্রতিনিধি | সোমবার , ১৬ মে, ২০২২ at ৪:৪৯ পূর্বাহ্ণ

লোহাগাড়ার পদুয়ায় আসামির দায়ের কোপে পুলিশ কনস্টেবল মো. জনি খানের (২৮) বাম হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এ ঘটনায় অপর কনস্টেবল শাহাদাত হোসেন (২৭) ও মামলার বাদী আবুল হোসেন কালু (৪০) আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকাল ১০টার দিকে ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের আঁধার মানিক লালারখিল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানায়, গত ২৪ মার্চ অনধিকার প্রবেশ ও মারামারির অভিযোগে পদুয়া লালারখিল এলাকার আবুল হোসেন কালু বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। উক্ত মামলায় একই এলাকার মৃত আলী হোসেনের পুত্র কবির আহমদকে (৩৫) আসামি করা হয়। গতকাল সকালে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ভক্ত চন্দ্র দত্তের নেতৃত্বে এএসআই মজিবুর রহমান, কনস্টেবল মো. জনি খান ও কনস্টেবল শাহাদাত হোসেন আসামি কবির আহমদকে গ্রেপ্তার করতে তার বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় আসামি কবির আহমদ গ্রেপ্তার এড়াতে ধারালো দা দিয়ে পুলিশের ওপর হামলা করেন। এতে দায়ের কোপে কনস্টেবল মো. জনি খানের বাম হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এছাড়া আরেক কনস্টেবল শাহাদাত হোসেন ও মামলার বাদী আবুল হোসেন আহত হন। তাদেরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ঘটনার পরপর আসামি কবির আহমদ পালিয়ে যায়।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঘটনাস্থলে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। টিনের বেড়া ও ছাউনিযুক্ত বসতঘরে আসামি কবির আহমদের বসবাস। তবে তিনি সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন না। মাঝেমধ্যে আসেন। কিছুক্ষণ অবস্থান করে চলে যান। ঘটনার পর থেকে ঘটনাস্থলের আশপাশের কয়েকটি বাড়ি জনশূন্য দেখা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানান, পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে কবির আহমদ তার বাহিনীকে খবর দেয়। তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে ধারালো অস্ত্র নিয়ে পুলিশের ওপর আক্রমণ করে। মামলার বাদী আবুল হোসেন কালু ও আসামি কবির আহমদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জায়গা-জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এছাড়া তারা এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করে। আসামি পক্ষের লোকজনের ভয়ে এলাকায় কেউ মুখ খুলতে সাহস পান না। ঘটনাস্থল থেকে ধারালো দাসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে পুলিশ।
লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মোহাম্মদ সোহেল বলেন, ধারালো দায়ের কোপে আহত দুই কনস্টেবলসহ ৩ জনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তার মধ্যে এক কনস্টেবলের বাম হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। অন্য দুজনের হাতেও ধারালো দায়ের আঘাত ছিল। আহত কনস্টেবল মো. জনি খান ও মো. আবুল হোসেন কালুকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। আহত অপর কনস্টেবল শাহাদাত হোসেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই আলাউদ্দিন তালুকদার বলেন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বাম হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন কনস্টেবল মো. জনি খানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য হেলিকপ্টারযোগে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। সেখানে তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শিবলী নোমান বলেন, পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন। ঘটনার সাথে জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। জড়িতদের গ্রেপ্তারপূর্বক আইনের আওতায় আনতে পুলিশি তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআগে কেনা সয়াবিন নতুন দরে বিক্রি
পরবর্তী নিবন্ধভারত জানালেই পি কে হালদারকে আনার বিষয়ে ব্যবস্থা