আরো সাড়ে ৬ হাজার টন পেঁয়াজ আসছে

পাইকারিতে ফের মূল্যবৃদ্ধি

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০ at ৬:৫৩ পূর্বাহ্ণ

পাইকারিতে আবারও বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। গত দুই সপ্তাহ ধরে উঠানামা করছে পেঁয়াজের বাজার। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরবরাহ সংকটের কারণে মূলত দাম বাড়ছে। এছাড়া ভারত ছাড়া ভিন্ন দেশের পেঁয়াজ এখনো দেশের বাজারে প্রবেশ করেনি। ফলে অনেক ব্যবসায়ীর দোকান-গুদামে পেঁয়াজ নেই। অন্যদিকে গতকাল চট্টগ্রাম সামুদ্রিক বন্দরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কেন্দ্র (প্ল্যান্ট কোয়ারেন্টিন স্টেশন) থেকে ১৪টি আইপির বিপরীতে ৬ হাজার ৪২৫ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি নেয়া হয়েছে। সবমিলিয়ে ৩০৬ আইপিতে এক লাখ ৪১ হাজার ১৬৫ টন পেঁয়াজ আনার অনুমতি নেন আমদানিকারকরা। দৈনিক আজাদীকে বিষয়টি নিশ্চিত করে কেন্দ্রের উপপরিচালক আসাদুজ্জামান বুলবুল বলেন, এসব পেঁয়াজ চীন, মিশর, তুরস্ক, মিয়ানমার, নিউজিল্যান্ড, নেদারল্যান্ড, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইউক্রেন, ভারত এবং পাকিস্তান থেকে আসার কথা রয়েছে।
চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে ভারতীয় পেঁয়াজ আগের দিনের চেয়ে কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকায়। কয়েকজন আড়তদার জানিয়েছেন, তিন চারদিন ধরে খাতুনগঞ্জের বাজারে পেঁয়াজের ট্রাক আসছে না। যা কিছু এসেছিল তার অধিকাংশই পচা। ভারতীয় সীমান্তে কয়েকদিন আটকে থাকায় এসব পেঁয়াজ পচে গেছে। তাই আড়তদারদের বেছে বেছে ভালো পেঁয়াজগুলো আলাদা করে বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে ব্যবসায়ীদের লোকসান গুণতে হচ্ছে।
হামিদুল্লাহ মিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস দৈনিক আজাদীকে বলেন, বাজারে বর্তমানে পেঁয়াজের মজুদ কমে এসেছে। ভারত থেকে যে পরিমাণ পেঁয়াজ আসার কথা ছিল সেগুলোও আসেনি। ইতোমধ্যে পচে যাওয়ায় অনেক পেঁয়াজ ভারতীয়রা তাদের সীমান্ত থেকে ফেরত নিয়েছেন। আমরা শুনেছি, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে মিয়ানমারের পেঁয়াজ বাজারে ঢুকবে। মিয়ানমারের পেঁয়াজ বাজারে প্রবেশ করলে দাম তখন কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
পেঁয়াজের দরবৃদ্ধি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এসএম নাজের হোসাইন দৈনিক আজাদীকে বলেন, পেঁয়াজ নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। ইতোমধ্যে পেঁয়াজের সিন্ডিকেট গত বছরের মতো ক্রেতাদের ভালোই পকেট কাটছে। এখন পর্যন্ত যেসব পেঁয়াজ বাজারে মজুদ আছে, সবই আগের কেনা। অথচ দাম বাড়ার সাথে সাথে তারা পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দেন। প্রশাসন অভিযান চালাতে গেলে দোকানপাট বন্ধ করে আবার আন্দোলনে নামে। এসব অসাধু পেঁয়াজ ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
উল্লেখ্য, গত ১৪ সেপ্টেম্বর ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক বাণিজ্য অধিদপ্তর থেকে চিঠি ইস্যু করে পেঁয়াজের রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করে। এর আগে গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর দেশের বাজারে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় ভারত। সেই সময় দুই দফায় পেঁয়াজের দাম দ্বি-শতক পেরিয়ে যায়। পরবর্তীতে পেঁয়াজ আমদানিকারকরা মিয়ানমার, চীন, মিশর, পাকিস্তান, তুরস্কের মতো দেশগুলো থেকে পেঁয়াজ এনে বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজলবায়ু পরিবর্তনে পৃথিবীকে রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর ৫ প্রস্তাব
পরবর্তী নিবন্ধজলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের গতি বাড়ানোর তাগিদ