আমার মাতৃভাষা চাটগাঁইয়া

ফারুক হোসেন | সোমবার , ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ at ৫:৪৯ পূর্বাহ্ণ

ফেব্রুয়ারি মাস, ভাষার মাস। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি মায়ের ভাষা বাংলার জন্য জীবন দেন এইদেশের সূর্য সন্তান বরকত, সালাম, রফিক, জব্বার, শফিউর সহ অনেকে। তাঁদের আত্মত্যাগের এই দিনকে আমরা পালন করতাম শহীদ দিবস হিসাবে। ১৭ নভেম্বর ১৯৯৯ সালে জাতিসংঘ একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে স্বীকৃতি প্রদান করেন। এরপর হতে একুশে ফেব্রুয়ারি সারা বিশ্বে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে পালিত হয়ে আসছে। একজন চট্টগ্রামবাসী হিসাবে আমার মাতৃভাষা চাটগাঁইয়া। বাংলাদেশের প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষ চাটগাঁইয়া ভাষায় কথা বলে, যা পৃথিবীর কথ্য ভাষার মধ্যে ৮৮ তম। চট্টগ্রামের ভাষা লিখার জন্য আলাদা কোন বর্ণমালা নেই। বাংলা বর্ণে এটাকে লিখতে হয়। এটা শ্রুতিনির্ভর ভাষা। অর্থাৎ এই ভাষা শিখতে হলে শুনে শুনে শিখতে হবে।

ইদানীং আমার এই মাতৃভাষাবাসীর সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে কমে যাচ্ছে। এর প্রধান কারণ আমরা আমাদের সন্তানদের চাটগাঁইয়া ভাষায় কথা বলতে দিতে চাই না। আগে এই প্রবণতা শহরে সীমাবদ্ধ থাকলেও সেটা এখন শহর ছাড়িয়ে গ্রামেও পৌঁছে গেছে। আমরা বড়রা বাড়িতে চাটগাঁইয়া ভাষায় কথা বললেও ছোটদের সাথে যখন কথা বলি তখন চাটগাঁইয়া ভাষা আর ব্যবহার করি না। এতে করে নতুন প্রজন্ম ধীরে ধীরে সঠিক চাটগাঁইয়া ভাষা হতে বিমুখ হয়ে যাচ্ছে। এটা আমাদের জন্য কত লজ্জার যে আমরা নিজের মায়ের ভাষা হতে নিজেদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বঞ্চিত করছি। এই সব মায়ের ভাষা হারিয়ে না যাবার জন্যই কিন্তু জাতিসংঘ একুশে ফেব্রুয়ারিকে মাতৃভাষা দিবস হিসাবে পালন করে যাচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅশোভনীয় ইংরেজি মিশ্রিত বাংলা ভাষা
পরবর্তী নিবন্ধনিরাপদ সড়কের স্বপ্ন পূরণ হবে কবে?