আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম সহজ করতে ব্যবসায়ীদের কিছু প্রস্তাবনা

কাস্টমস হাউসে আলোচনা

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ২২ নভেম্বর, ২০২২ at ৯:৫২ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম কাস্টমসে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম সহজীকরণ ও বাণিজ্যের স্বার্থে আইন সংশোধনসহ বিভিন্ন বিষয়ে সমস্যা ও প্রস্তাবনা তুলে ধরেন সেবাগ্রহীতারা। গতকাল সোমবার সকালে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের সভাকক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার ফাইজুর রহমান সেবাগ্রহীতাদের সমস্যার কথা শুনেন এবং কাস্টমসের কার্যক্রম আরো ব্যবসাবান্ধব করার আশ্বাস দেন।

সভায় পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সহসভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, আমদানি নীতি আদেশ অনুযায়ী ‘ফ্রি অব কস্ট’ এর ভিত্তিতে আমদানিকৃত কাঁচামাল দ্রুত শুল্কায়ন ও জেটি কাস্টমস কর্তৃক খালাসকালে পণ্য পরীক্ষণের জন্য নির্দেশনা প্রদান করা প্রয়োজন। পোশাক শিল্পের শর্ট শিপমেন্ট সংক্রান্ত তথ্য এ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে দ্রুত হালনাগাদ করতে নির্দেশনা প্রদান করা প্রয়োজন। বিল অব এন্ট্রি বাতিল কার্যক্রম সহজীকরণ এবং লিয়েন ব্যাংক কর্তৃক প্রত্যয়নের ভিত্তিতে বিল অব এক্সপোর্ট (শিপিং বিল) দ্রুত বাতিল করা প্রয়োজন। আরেকটি বিষয় হলো, কোনো পণ্যের এইচএস কোড বন্ড লাইসেন্সে অন্তর্ভুক্ত না থাকলে পরবর্তীতে বন্ডার কর্তৃক তা বন্ড লাইসেন্সে অন্তর্ভুক্ত করে শুল্কায়নের জন্য উপস্থাপন করা হলে জরিমানা আরোপ না করার ব্যবস্থা রাখা প্রয়োজন। এছাড়া আমদানিকৃত পণ্য চালানের সংশ্লিষ্ট এইচএস কোড বন্ড লাইসেন্সে উল্লেখ না থাকলে অঙ্গীকারনামা নিয়ে দ্রুত শুল্কায়ন সম্পন্ন করা প্রয়োজন।

সভায় বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে চট্টগ্রাম কাস্টমসের যেসব জটিলতা তৈরি হয় তা দ্রুত সমাধান করা অত্যন্ত জরুরি। এনবিআরের কিছু পলিসিগত জটিলতার কারণে পণ্যের এইচএস কোড জটিলতা সৃষ্ট হয়। যা একেবারেই অপ্রয়োজনীয়। এর মাধ্যমে সরকারের কোনো লাভ হয় না। তাই পলিসির পরিবর্তন এসে এই এইচএস কোড সংক্রান্ত সমস্যা স্থায়ীভাবে বন্ধ করা খুবই জরুরি।

শিপিং এজেন্ট এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ বলেন, অনলাইনে আইজিএম (আমদানি পণ্যের বর্ণনা) দাখিল করতে গেলে মাঝে মধ্যে নিজের অজান্তেই ভুল হয়ে যায়। যা সংশোধন করতে কাস্টমসের দপ্তরে গিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয়। এই হয়রানি বন্ধে অনলাইনে আইজিএম সংশোধনের একটি ব্যবস্থা রাখা জরুরি। এছাড়া কনটেনার পণ্যের অনলাইন ইজিএম দাখিলের ব্যবস্থা থাকলেও কার্গো পণ্যের ক্ষেত্রে সেই ব্যবস্থা নেই, যা যুক্ত করা প্রয়োজন।

বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরোওয়ার্ডার্স এসোসিয়েশনের (বাফা) সহ-সভাপতি খায়রুল আলম সুজন বলেন, আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে জাটিলতা নিয়ে আলোচনার জন্য প্রতি মাসে অন্তত একটি সভা চাই। যেখানে সমস্যা তুলে ধরে তার তড়িৎ সমাধান পাওয়া যাবে। বাফা চায় বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক ক্রান্তিকালকের এই সময়ে দেশের সকল ব্যবসায়ী বিশেষ করে দেশের অন্যতম প্রধান শুল্কস্টেশন নির্ভর ব্যবসায়ী এবং শুল্কস্টেশনের কর্মকর্তা কর্মচারীর সম্মেলিত প্রচেষ্টায় দেশের অর্থনীতির অগ্রযাত্রাকে অব্যহত রাখতে। তাই দ্রুত সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সমাধানের পদক্ষেপ নিতে হবে। আইজিএমের দাখিলকৃত তথ্য সংশোধনের ক্ষেত্রে সময় ও ব্যয় দুটোই কমানো প্রয়োজন। এক্ষেত্রে ফি ৫০০ টাকা ও সর্বোচ্চ তিন দিনের মধ্যে সংশোধনের যাবতীয় কাজ শেষ করার ব্যবস্থা রাখার প্রস্তাব রাখছি।

চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার ফাইজুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম চেম্বারের পরিচালক অঞ্জন শেখর দাশ, সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি একেএম আকতার হোসেন, প্রথম সহ-সভাপতি আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহমুদ ইমাম বিলুসহ প্রমুখ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে বর্ণাঢ্য আয়োজনে সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপিত
পরবর্তী নিবন্ধজঙ্গিদের প্রধান আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা বিএনপি : তথ্যমন্ত্রী