আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলেও প্রভাব নেই পাইকারিতে

ভোজ্যতেল

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ১৬ জুন, ২০২২ at ৮:৩৯ পূর্বাহ্ণ

আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ার পরদিনই দেশের বাজারে প্রভাব পড়তে শুরু করে। অথচ দেশে ভোজ্যতেলের একটি চালান আসতে সময় লাগে আড়াই থেকে তিন মাস পর্যন্ত। আন্তর্জাতিক বাজার বাড়লে যেভাবে দাম বৃদ্ধি হয়, কমলে এর তেমন কোনো প্রভাব লক্ষ্য করা যায় না। ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত দেড় মাসে মালয়েশিয়ার পাম তেলের দাম প্রতি মণে কমেছে অন্তত ১ হাজার রিঙ্গিত (মালয়েশিয়ান মুদ্রা)। সেই অর্থে দেশে পাম তেলের দাম কমেনি। বর্তমানে খাতুনগঞ্জের পাইকারী বাজারে পাম তেল বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার ৭৫০ টাকায়। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন তেলের দাম কমেছে মণপ্রতি ২০০ ডলার পর্যন্ত। বর্তমানে খাতুনগঞ্জে প্রতি মণ সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ৭ হাজার টাকায় ।
খাতুনগঞ্জের তেল ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমাদের দেশে পাম তেল আসে মালয়েশিয়া এবং ইন্দোনেশিয়া থেকে। অপরদিকে সয়াবিন আসে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা থেকে। বর্তমানে দেশগুলোতে ফসল উৎপাদনের মৌসুম চলছে। যার কারণে পাম ও সয়াবিন তেলের সরবরাহও বেড়েছে। ফলে আন্তর্জাতিক বাজার কমছে। তবে আমাদের দেশে সরকার ভোজ্যতেলের দাম নির্ধারণ করে দেয়ায় আন্তর্জাতিক বাজার কমার কোনো সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।
জানা গেছে, খাতুনগঞ্জের বাজারে পণ্য বেচাকেনা ও লেনদেনে যুগ যুগ ধরে কিছু প্রথা চালু আছে। নিজেদের সুবিধার অনেক প্রথা আছে যেগুলো আবার আইনগতভাবেও স্বীকৃত নয়। এরমধ্যে অন্যতম হচ্ছে ডেলিভারি অর্ডার (ডিও) স্লিপ। তেল কিংবা অন্য কোনো পণ্য কেনাবেচায় ডিও বেচাকেনার মাধ্যমে বিভিন্ন আগাম লেনদেন হচ্ছে। দেখা যায়, পণ্য হাতে না পেলেও ওই ওই স্লিপটিই বেচাকেনা হচ্ছে। কোনো কোম্পানি বাজার থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ পণ্যের ডিও কিনে নেয়। যে দরে ডিও কেনা হয়, তার বাজার দর যদি বেড়ে যায়, তখন পণ্যটি ডেলিভারি দিতে তারা গড়িমসি করে। আবার দেখা যায়, কোম্পানির পণ্যই আসেনি কিন্তু ডিও কিনে রেখেছেন অনেক বেশি। এর ফলেও কোম্পানি বাজারে পণ্য ডেলিভারি দিতে পারে না। ফলে এসব পণ্যের দামও নিয়ন্ত্রণে থাকে না।
খাতুনগঞ্জের ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী জাহানারা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. আবু বক্কর দৈনিক আজাদীকে বলেন, পাম তেল ও সয়াবিন তেলের আন্তর্জাতিক বাজার কমতে শুরু করেছে। গত দেড় মাসে শুধুমাত্র পাম তেলের দরপতন হয়েছে ৫০০ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত। সামনে আরো কমবে। এছাড়া সয়াবিনের দামও নিম্নমুখী। এখন আসলে পাম ও সয়াবিনের উৎপাদনের মৌসুম। তবে আমাদের দেশের সরকার দাম নির্ধারণ করে দেয়ায় দাম এক প্রকার স্থিতিশীল রয়েছে।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এসএম নাজের হোসেন দৈনিক আজাদীকে বলেন, আমরা সব সময় দেখি, ভোজ্যতেলের আন্তর্জাতিক বাজার বাড়ার সাথে সাথে ব্যবসায়ীরা দেশের বাজারে দাম বাড়িয়ে দেন। অনেক সময় দাম বাড়াতে সরকারকে বাধ্য করে। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজার কমলে তাদের কোনো ভ্রক্ষেপ থাকে না। বিষয়টি সরকারকে যথাযথভাবে মনিটরিং করতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঢাকার জমি, ফ্ল্যাট মালিক সবারই আছে কালো টাকা : অর্থমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে ভারী বর্ষণের আভাস