আত্মোপলব্ধি

মীনহার সুলতানা নিকা | সোমবার , ৮ আগস্ট, ২০২২ at ৭:৫০ পূর্বাহ্ণ

মানুষ নন্দিত হয় তাঁর গুণের কারণে। একই সময়ে নিন্দিত হয় দোষের কারণে। দোষগুণ মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। বর্তমান সময়ে মনের মধ্যে দোষের অহংকার পুষে রাখার মানুষের সংখ্যা প্রচুর। এই অহংকারই তিলে তিলে ধ্বংস করে দেয় একজন মানুষকে। ইতিহাস সাক্ষী, আত্ম অহংকার করে কেউ কখনো বড়ো হতে পারেনি। বরং নিন্দিত হওয়ার ক্ষেত্রে অহংকার নামক মন্দ দোষের অবদানই সবচেয়ে বেশি। কখনো কখনো আমাদের মাঝে আত্ম অহংকার এতোটাই প্রভাব বিস্তার করে, আমরা ভুলেই যাই যে, যে মাটির উপর অহংকার নিয়ে পা ফেলছি, সে মাটির নিচেই আমরা একদিন লীন হব! আজ পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেলে কাল এই পৃথিবী আমার জন্য অতীতের একদিন হবে। তাহলে কীসের এতো অহংকার? আমরা বেমালুম ভুলে যাই, জীবন কতো তুচ্ছ। সময়ের সমষ্টি দ্বারা সৃষ্ট আমাদের জীবন। সময়ই আমাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করে। যে জীবনের উপর নিজের কোনো নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা থাকে না, সে জীবন নিয়ে করি আমরা এতো অহংকার ! প্রত্যেক মানুষেরই অহংকার থাকে। অহংকার করে মানুষ বাঁচতে চায়। সহজাত প্রবৃত্তির কারণেই মানুষের মনোজগৎ অহংকারে আবৃত থাকে। তবে, অহংকার হতে হবে সৎ ও মানবিক। তাহলেই তাঁর সাফল্য নিশ্চিত। যে অহংকার অমানবিক ও অন্যকে ছোটো করার মন মানসিকতায় ভরপুর, সে অহংকারই নিঃস্ব ও ধ্বংস করার জন্য যথেষ্ট। আমাদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে গেছে অহংকার নামক মানসিক ব্যাধি, যা আমাদের সকল সৎ উপলব্ধি ভুলিয়ে দিচ্ছে। এটি এমন এক মারাত্মক ব্যাধি, যা একজন ব্যক্তিকে বিনয়ী ও সফল তাঁর সাফল্যের উচ্চস্থান থেকে মুহূর্তের মধ্যে নিচে ছুঁড়ে ফেলে দেয়। অহংকার নিয়ে কোনো মানুষই সুখী হতে পারে না। সুখী হওয়ার জন্য চাই নির্মোহ ভালোবাসা। ভালোবাসা দিয়ে পুরো বিশ্ব জয় করা সম্ভব। বিচ্ছেদের গল্পে অহংকারকে বিসর্জন দিয়ে আসুন নিরহংকার গল্প লিখি। নিরহংকার মানবিক মানুষ হই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসুস্থতার জন্য প্রয়োজন সচেতনতা
পরবর্তী নিবন্ধবঙ্গমাতা