আগ্রহ যদি যোগাযোগ ও সাংবাদিকতায় চট্টগ্রামে ভরসা পোর্ট সিটি বিশ্ববিদ্যালয়

| বৃহস্পতিবার , ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ৫:৫৬ পূর্বাহ্ণ

তথ্য সংগ্রহ ও প্রকাশের অন্যতম মাধ্যম সাংবাদিকতা তথা মিডিয়া। একসময় বলা হতো জ্ঞানই শক্তি, আর এখন বলা হয় তথ্যই শক্তি। যার কাছে যত বেশি তথ্য, সে তত বেশি প্রভাবশালী- এমনটাই ধারণা সমাজের। ফলে, এ সময়ে এসে সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন দিনকে দিন হয়ে উঠছে গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রেক্ষিতে চট্টগ্রামে যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা শিক্ষার দিগন্ত প্রসারিত করেছে পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পর চট্টগ্রামে পোর্টসিটিই প্রথম বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় যারা কিনা সবার আগে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে সাংবাদিকতা বিভাগ চালু করেছে। তাই সাংবাদিকতা বিষয়ে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে এই ক্যাম্পাস।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপমন্ত্রী জনাব এ.কে.এম এনামুল হক শামীম, এম. পি’র দূরদর্শী ও উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনার প্রয়োগক্ষেত্র ও ফলাফল পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি । তাঁর ভাবনার সাথে মিল রেখে শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য পূরণে বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষ প্রশাসন, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী সবাই মিলে নিশ্চিত করে যাচ্ছে গুণগত শিক্ষা ও মানসমপন্ন শিক্ষাদানের পরিবেশ। ২০১৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রার সাথে যাত্রা হয় প্রতিষ্ঠানটির সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের। শুরুতে ছাত্রছাত্রী সংখ্যা কম থাকলেও বর্তমানে বিভাগের মোট শিক্ষার্থী দুই শতাধিক। এ বিভাগে ব্রডকাস্ট এন্ড প্রিন্ট জার্নালিজম প্রোগ্রামের অধীনে চারবছর মেয়াদী স্নাতক এবং এবং একবছর মেয়াদী স্নাতকোত্ত্বর ডিগ্রী প্রদান করা হয়। এ বিভাগে পাঠদানকৃত বিষয়ের মধ্যে রিপোর্টিং, এডিটিং, এডভার্টাইজিং, ফিল্ম থিউরি, ম্যাগাজিন এডিটিং, উন্নয়ন যোগাযোগ, গণমাধ্যম গবেষণা, ব্রডকাস্ট জার্নালিজম, ফটো জার্নালিজম, শান্তি সাংবাদিকতাসহ যুগোপযোগী কোর্সসমূহউল্লেখযোগ্য। এছাড়াও যুগোপোযুগী আউটকাম বেইজড কারিকুলামে অনুসরণ করে পাঠদান করা হয়।
শুধু সাংবাদিকতা বিভাগ চালু নয়, বিভাগের শিক্ষার্থীদের সাংবাদিকতার যথাযথ পাঠ দিতে নিয়োগ দেয়া হয়েছে সাংবাদিকতার বাস্তব অভিজ্ঞতা রয়েছে এমন শিক্ষকদের। শুরু থেকেই পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভর্ার্সিটির সাংবাদিকতা বিভাগের হাল ধরেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ও পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভর্ার্সিটির জার্নালিজম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের কোঅর্ডিনেটর ড. মোহাম্মদ সহিদ উল্লাহ। বিভাগের ৫ জন পূর্ণকালীন শিক্ষকসহ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বেশ কয়েকজন অভিজ্ঞ শিক্ষক খন্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে পাঠদান করছেন।
মূলধারার সাংবাদিকতায় অভিজ্ঞতা সম্পন্ন এসব শিক্ষকদের গভীর তত্ত্বাবধানে পাঠদান করা হয় শিক্ষার্থীদের। আর অভিজ্ঞ শিক্ষকদের যথাযথ পরিচর্যায় বিশ্ববিদ্যালয় শুরুর মাত্র ৯ বছরের মধ্যে পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগ থেকে পড়াশোনা শেষ করে দেশের প্রথম সারির গণমাধ্যমে কাজ করছেন অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী। তাছাড়া বিভিন্ন মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির গণযোগাযোগ বিভাগ, ব্যাংকিং সেক্টর ও বিভিন্ন কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন বিভাগের বেশ কয়েকজন সাবেক শক্ষার্থী।
পোর্ট সিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগ চট্টগ্রামে প্রথম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে শুধু সাংবাদিকতা বিভাগ চালু করেছে তা নয়, সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীদের হাতে কলমে গণমাধ্যমের খুটিনাটি বিষয়গুলো শেখাতে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে অত্যাধুনিক মানের ব্রডকাস্ট স্টুডিও ল্যাব। যেখানে ইলেক্ট্রনিক জার্নালিজম, ফটো জার্নালিজম ও ভিডিও এডিটিং এবং সংবাদপত্রের পৃষ্ঠাসজ্জার আদ্যোপান্ত ব্যাবহারিকভাবে দেখানো হয় শিক্ষার্থীদের। তাছাড়া প্রতি ট্রাইমিস্টারে নির্দিষ্টি কোর্স সংক্রান্ত বিষয়ে শিক্ষার্থীদের গণমাধ্যম, জনসংযোগ ও উন্নয়ন যোগাযোগের ব্যবহারিক কাজ সম্পর্কে ধারণা দিতে নগরে অবস্থিত বিভিন্ন গণমাধ্যমের অফিস, জনসংযোগ বিভাগ, এনজিও এবং সামাজিক উন্নয়নমূলক প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনের ব্যবস্থা করা হয় বিভাগের পক্ষ থেকে। এছাড়াও ফিল্ডওর্য়াক ও গবেষণার ধারণা দিতে রয়েছে থিসিস, প্রজেক্ট ও ইন্টার্নশিপের সুযোগ।
ইতোমধ্যে দৈনিক পূর্বকোণ, দৈনিক আজাদী, দৈনিক সমকাল, বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার, চ্যানেল টুয়েন্টিফিোর, পরিবেশ অধিদপ্তর, আবহাওয়া অধিদপ্তর, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট, কাফকো, জাতীয় সংসদ ভবনসহ শিক্ষার্থীদের জন্য প্রথমসারির বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমের অফিস পরিদর্শন করার ব্যবস্থা করেছে সাংবাদিকতা বিভাগ। পাশাপাশি বিভাগের সাথে সম্পৃক্ত বিভিন্ন বিষয়ে প্রতি ট্রাইমেস্টারে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রিসোর্স পারসনের মাধ্যমে নিয়মিত সেমিনার, ওয়েভিনার, ওয়ার্কশ ও লেকচার সিরিজের আয়োজন করা হয়। ফলে শিক্ষার্থীরা বিশেষায়িত জ্ঞান ও দেশী-বিদেশী যোগাযোগ ও সাংবাদিকতার স্কলার ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পান। সাংবাদিকতা বিভাগ শুধু শিক্ষার্থীদের বিদ্যায়তনিক পাঠের উপরই গুরুত্ব দেয় না, একইসাথে তাদেরকে সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়ামনস্ক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিচালিত ডিবেট ফোরাম, কালচারাল ফোরাম ও স্পোর্টস ফোরামে বিভাগের শিক্ষার্থীরা নিয়মিত সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্ত্বিক চর্চা করছেন।
প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় পড়তে কাড়ি কাড়ি টাকা লাগে, এই বিষয়টাও অমূলক প্রমাণ করেছে পোর্ট সিটি বিশ্ববিদ্যালয়। কারণ পোর্ট সিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতাসহ সব বিভাগের অর্থনৈকিতভাবে অসচ্ছল এবং মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তাছাড়া ভালো রেজাল্ট অনুযায়ী প্রতি ট্রাইমিস্টারে টিউশন ফি ছাড়েরও ব্যবস্থা রয়েছে। তাই পোর্ট সিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো মেধাবী শিক্ষার্থীকে আর্থিক অসচ্ছলতা নিয়ে খুব একটা ভাবতে হয় না।
এদিকে ২০২০ সালের মার্চে দেশে প্রথম করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হলে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা নিশ্চিতে সারাদেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মত পোর্ট সিটি ইন্টার্নেশনাল ইউনিভার্সিটিও বন্ধ ঘোষণা করা হয়। অফলাইন ক্লাশ বন্ধ করা হলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের মূল্যবান সময়ের কথা ভেবে দ্রুত অনলাইন ক্লাশ চালুর সিদ্ধান্ত নেয়। শুধু তাই নয় সাংবাদিকতা বিভাগ সহ সব বিভাগের শিক্ষার্থীদের মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা নিয়মিত কাউন্সিলিং করেছেন শিক্ষার্থীদের। আবার ভার্চুয়াল প্লাটফর্ম জুমে ক্লাশ করার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের কারিগরি সহায়তা এবং অন্যান্য সুযোগ সুবিধাও দেয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। অনলাইন কা্লশের মত সময় উপযোগী সিদ্ধান্ত দ্রুত গ্রহণ করায় পোর্ট সিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থীকে করোনার কারণে ট্রাইমিস্টার গ্যাপ দিতে হয়নি। তাই প্রতিষ্ঠার মাত্র নয় বছরে চট্টগ্রামে যোগাযোগ ও সাংবাদিকতায় আগ্রহী শিক্ষার্থীদের একমাত্র ভরসাস্থলে পরিণত হয়েছে পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধউজাড় হচ্ছে বনভূমি : কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি
পরবর্তী নিবন্ধসংবাদপত্রের যুগসন্ধিক্ষণ : সংকট ও সম্ভাবনা