অল্প বৃষ্টিতে জলজট

বৃষ্টির মধ্যেও বেশি তাপমাত্রা রেকর্ড, ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ১০ জুন, ২০২৩ at ৪:৫০ পূর্বাহ্ণ

অল্প বৃষ্টিতেই জলজট হয়েছে নগরে। এতে দুর্ভোগে পড়েন নগরবাসী। এ অবস্থায় আসছে বর্ষায় ভারী বৃষ্টি হলে ‘জলাবদ্ধতা’র শঙ্কা প্রকাশ করেন তারা। একইসঙ্গে জলাবদ্ধতা নিরসনে চলমান একাধিক প্রকল্পের সুফল কতটা মিলবে সে প্রশ্নও করেন ভুক্তভোগীরা। এদিকে বৃষ্টির মধ্যেও গতকাল স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে নগরে।

জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে হালকা বৃষ্টি হয়েছে। এরপর গতকাল শুক্রবার দপুরেও বৃষ্টি হয়। মাঝখানে বন্ধ থাকলেও সন্ধ্যায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে। এদিকে আবহাওয়া অফিস গতকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় নগরে ২২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করে। এদিকে অল্প এ বৃষ্টিতে ওয়াসা মোড়, কাতালগঞ্জ, চকবাজার, কাপাসগোলা, পশ্চিম বাকলিয়া ডিসি রোডসহ নগরের বিভিন্ন নিচু এলাকায় তীব্র জলজটের সৃষ্টি হয়। এতে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোকজন এবং পথচারীরা অসহনীয় দুর্ভোগে পড়েন। এছাড়া বৃষ্টিতে জুমার নামাজ পড়তে যাওয়া মুসল্লিদের ভোগান্তি ছিল বেশি।

স্থানীয়রা জানান, পশ্চিম বাকলিয়া ডিসি রোড, কাজী অফিস, জামাল বিল্ডিং এর সামনে গোড়ালি সমান পানি জমে ছিল দীর্ঘক্ষণ। বিকেল সাড়ে ৪টায়ও ডুবে ছিল চকবাজার কাতালগঞ্জ বৌদ্ধ মন্দিরের সামনের সড়ক। চকবাজারের বাসিন্দা আবদুল হামিদ দৈনিক আজাদীকে বলেন, চকবাজারের আশেপাশে জমে থাকা পানি দুই ঘণ্টায় নেমে গেছে। তবে আধুনিক চক সুপার মার্কেটের পূর্ব দিকের রাস্তা রাত ৮ টায় ও ডুবে ছিল। সেখানে পানির পরিমাণ এত বেশি রিকশার অর্ধেক চাকা ডুবে গেছে। সৌরভ নামে এক পথচারী বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে হাজার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এরপরও অল্পবৃষ্টিতে জলজট হচ্ছে। ভারী বৃষ্টি হলে পরিস্থিতি যে আরো খারাপ হবে না তা বলা মুশকিল।

এদিকে আজ শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, আকাশ আংশিক মেঘলা থেকে সাময়িকভাবে মেঘাচ্ছন্ন থাকতে পারে। সে সাথে অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। তবে কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।

আগারগাঁও আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাসে বলা হয়, দক্ষিণপশ্চিম মৌসুমি বায়ু চট্টগ্রাম এবং সিলেট বিভাগ পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছে। উত্তরপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ তৈরি হয়েছে। চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশালল ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের কিন্তু কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রনসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসাথে কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।

৩ নম্বর সতর্ক সংকেত : গতকাল আগারগাঁও ঝড় সতর্কীকরণের সতর্কবর্তায় চট্টগ্রাম, কঙবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরসমূহকে ৩ নম্বর নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালণশীল মেঘমালা তৈরি অব্যাহত থাকায় উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে ওই সতর্কবতায়।

বৃষ্টিতেও তাপমাত্রা বেশি : তীব্র গরমে অস্বস্তি থাকা নগরবাসীর প্রত্যাশা ছিল বৃষ্টি। বৃষ্টিতে কমবে তাপমাত্রা গরম। তবে প্রত্যাশিত সেই বৃষ্টি হলেও কমেনি গরম। বরং গতকাল স্বাভাবিকের চেয়ে শূন্য দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বেশি রেকর্ড হয়। ফলে পুরোপুরি গরমের তীব্রতা কমেনি। পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানায়, গতকাল নগরে সর্বোচ্চ ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়। এদিকে গতকাল দেশের সর্বোাচ্চ ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে চুয়াডাঙায়। এছাড়া রাজশাহী, পাবনা ও চুয়াডাঙ্গা জেলাসমূহের উপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে গতকাল। তবে তা প্রশমিত হতে পারে বলে জানায় আবহাওয়া অধিদপ্তর।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাঙামাটি জেলা পরিষদের সদস্যসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে দুদকের ৪ মামলা
পরবর্তী নিবন্ধরোহিঙ্গা ক্যাম্পে যুবককে গুলি করে হত্যা