অল্প বৃষ্টিতে খুশি চাষি

তবে চকরিয়া-পেকুয়ায় লবণ উৎপাদন ব্যাহত

চকরিয়া প্রতিনিধি | শনিবার , ২৫ মার্চ, ২০২৩ at ৫:৪৭ পূর্বাহ্ণ

মিঠাপানির অভাবে কক্সবাজারের চকরিয়ায় মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছিল বোরো ধানের আবাদ। দিগন্তজোড়া ধানক্ষেতের সেচ দেওয়া নিয়ে রাজ্যের দুশ্চিন্তা ভর করছিল কৃষকদের মাথায়। কখন বৃষ্টি নামবে সেই আশাতেই ছিলেন প্রান্তিক কৃষকেরা। অবশেষে মৌসুমের প্রথম বৃষ্টিপাতের দেখা মিলেছে।

 

বিরতি দিয়ে সেই বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় প্রাণ ফিরে পেয়েছে ধানক্ষেতসহ রকমারি সবজি ক্ষেত। এই বৃষ্টি ধান ও সবজি চাষিদের জন্য আশীর্বাদ হলেও উপকূলজুড়ে লবণ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। গত কয়েকদিন থেমে থেমে ঝড়ো হাওয়াসহ মাঝারি বৃষ্টির কারণে চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলায় লবণ উৎপাদন একেবারেই বন্ধ হয়ে পড়ে। একই অবস্থা লবণ উৎপাদনকারী অঞ্চল কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন উপজেলায়ও।

বৃষ্টিপাতের কারণে মাঠে মাঠে বিছানো পলিথিন মুড়িয়ে রাখতে দেখা গেছে লবণ চাষিদের। অবশ্য আধুনিক পদ্ধতির (পলিথিন পদ্ধতি) চাষিদের তেমন ক্ষতি না হলেও সনাতন পদ্ধতিতে (সরাসরি মাটিতে) যারা লবণ উৎপাদনে নেমেছেন তারা আর্থিকভাবে বেশ ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।

এই বিষয়ে বিসিক কক্সবাজার লবণশিল্প উন্নয়ন প্রকল্পের মাঠ পরিদর্শক মো. ইদ্রিস আলী গতকাল বিকেলে দৈনিক আজাদীকে বলেন, চলতি মৌসুমের প্রথম বৃষ্টিপাত হয়েছে কিছু সময়ের জন্য। এজন্য লবণ উৎপাদন তিন থেকে চারদিন ব্যাহত হতে পারে। এরপর থেকে আবারো দেদারছে লবণ উৎপাদন করতে পারবেন চাষিরা। যদি আবহাওয়া অনুকূলে থাকে।

তিনি আরো বলেন, বর্তমানে দেশের একমাত্র লবণ উৎপাদনকারী অঞ্চল কক্সবাজারের আট উপজেলা যথাক্রমে চকরিয়া, পেকুয়া, কুতুবদিয়া, মহেশখালী, কক্সবাজার সদর, ঈদগাঁও, উখিয়া ও টেকনাফ এবং চট্টগ্রামের বাঁশখালী ও আনোয়ারা উপজেলার (একাংশ) সিংহভাগ চাষি আধুনিক পদ্ধতি অবলম্বণ করেই

লবণ উৎপাদন করে থাকেন। এজন্য আধুনিক পদ্ধতির চাষিদের তেমন ক্ষতি হবে না। তবে সংখ্যায় কম হলেও সনাতন পদ্ধতির চাষিরা আর্থিকভাবে কিছুটা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। কারণ তাদেরকে নতুন করে মাঠকে লবণ উৎপাদনের উপযোগী করে তুলতে হবে। তবে সেই সমস্যাও কেটে গিয়ে ফের লবণ উৎপাদন আগের অবস্থায় ফিরবে।

কক্সবাজার লবণ চাষি সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক মকছুদ আহমদ দৈনিক আজাদীকে বলেন, বৃষ্টিপাতে লবণ উৎপাদন কিছুটা ব্যাহত হবে, সেটাই স্বাভাবিক। তবে এখনো চাষিদের হাতে আরো দেড়মাসের বেশি সময় রয়েছে। এই সময়টাই হচ্ছে প্রচণ্ড দাবদাহকাল। সেই দাপদাহের তাপেই দেদার লবণ উৎপাদন হবে। যদি আবহাওয়া পরিস্থিতি অনুকূলে থাকে। প্রতিবছরের ন্যায় এবারও দেদার লবণ উৎপাদন হবে বলে আশা করছি আমরা।

এদিকে চকরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এস এম নাসিম হোসেন দৈনিক আজাদীকে বলেন, এই বৃষ্টিপাত যদি আরো কিছুটা সময় ধরে হতো তাহলে ধান, সবজির আবাদকারীরা আরো বেশি উপকৃত হতো। কারণ কৃষকেরা মিঠাপানির জন্য হাহাকার করছিলেন। তাই মৌসুমের প্রথম এই বৃষ্টিপাত কৃষকদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধযাত্রী তিন হাজার, জাহাজ পারাপার করে এক হাজার
পরবর্তী নিবন্ধহলের ডাইনিংয়ে খাবারের দাম বাড়ায় শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ