অলস দিন গুনছে চট্টগ্রাম ছেড়ে যাওয়া ফিডার জাহাজ

কলম্বো বন্দরে তীব্র জট

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ৩১ মার্চ, ২০২২ at ৫:৪৬ পূর্বাহ্ণ

ভয়াবহ রকমের অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে পড়া শ্রীলংকার কলম্বো বন্দরে মারাত্মক রকমের জট দেখা দিয়েছে। চট্টগ্রাম কলম্বো রুটে চলাচলকারী ফিডার ভ্যাসেলগুলোকে জটের কবলে পড়ে বাড়তি সময় সাগরে ভাসতে হচ্ছে। দিনের পর দিন অলস বসে থাকতে গিয়ে মাদার ভ্যাসেল মিস করার পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। কলম্বো বন্দরের দুর্দিনে দেশের আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়ারও আশংকা প্রকাশ করা হয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, কলম্বো বিশ্বের শীর্ষ বন্দরগুলোর মধ্যে অন্যতম। ভারত মহাসাগরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থিত কলম্বো একটি ট্রান্সশিপমেন্ট পোর্ট হিসেবে পরিচালিত হয়। বিশ্বের শীর্ষ ৩৫ বন্দরের মধ্যে কলম্বো একটি। এই বন্দরে বছরে অন্তত ৫০ লাখ টিইইউএস কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করে। এটি ১৫ মিটার বা ৪৯ ফুট ড্রাফটের জাহাজ ভিড়াতে সক্ষম। চট্টগ্রাম বন্দরে কখনো চলাচল করতে পারে না এমন বড় বড় মাদার ভ্যাসেলগুলো কলম্বো থেকে চলাচল করে। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ফিডার সার্ভিসের মাধ্যমে সিংগাপুর, কলম্বো এবং মালয়েশিয়ার পোর্ট কেলাং এ অবস্থানরত মাদার ভ্যাসেলে কন্টেইনার আনা-নেয়া করে। বাংলাদেশের আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যে কলম্বো বন্দরের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, ভয়াবহ রকমের অর্থনৈতিক মন্দার কবলে পড়া কলম্বো বন্দরে মারাত্মক রকমের জট দেখা দিয়েছে। এই জটের করুণ শিকারে পরিণত হচ্ছে দেশের আমদানি রপ্তানি খাত। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে কন্টেইনারবাহী একটি ফিডার জাহাজকে কলম্বোর বন্দরে গিয়ে গড়ে ১০ থেকে ১১ দিন বার্থিংয়ের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এতে করে চট্টগ্রাম থেকে ইউরোপ আমেরিকাগামী কন্টেইনারগুলো নিয়ে এক একটি জাহাজ ১০/১১ দিন বহির্নোঙরে অলস সময় কাটাচ্ছে। এসব কন্টেইনার ঠিকঠাকভাবে মাদার ভ্যাসেল ধরতে ব্যর্থ হওয়ার শংকা তৈরি হয়েছে।
ইউরোপ আমেরিকা কিংবা চীনসহ বিশ্বের নানা দেশ থেকে তৈরি পোষাক কারখানার কাঁচামাল সিংগাপুর, কলম্বো এবং পোর্ট কেলাং বন্দর হয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে আসে। আবার একইভাবে ইউরোপ আমেরিকাসহ পুরো পৃথিবীতে রপ্তানিযোগ্য তৈরি পোষাকসহ অন্যান্য পণ্য উক্ত তিনটি বন্দর হয়ে গন্তব্যে যাতায়ত করে। কলম্বোর বন্দরের পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠায় এই বন্দর হয়ে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যে স্থবিরতা দেখা দেয়ার আশংকা প্রকাশ করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট একাধিক শিপিং এজেন্সির কর্মকর্তারা পরিস্থিতির ভয়াবহতা তুলে ধরে বলেছেন, বিশ্বব্যাপী কন্টেইনার পরিবহন এবং জাহাজভাড়া আকাশচুম্বি হয়ে উঠেছে। এই অবস্থায় কলম্বো বন্দরে গিয়ে জাহাজের অলস বসে থাকা জাহাজ ভাড়ার পরিস্থিতি আরো নাজুক করে তুলবে। শুধু ভাড়ার ক্ষেত্রে নয়, বিষয়টি আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যে সংকট তৈরি করছে বলেও তারা মন্তব্য করেছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআমেনাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন তার স্বামী
পরবর্তী নিবন্ধরোজায় ব্যাংকে লেনদেন বেলা আড়াইটা পর্যন্ত