অফডকে আটকা পড়েছে বিপুল গার্মেন্টস পণ্য

যুদ্ধের প্রভাব

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ২৫ মার্চ, ২০২২ at ৭:৫৬ পূর্বাহ্ণ

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বড় ধাক্কা লাগতে যাচ্ছে দেশের গার্মেন্টস সেক্টরে। রাশিয়ায় তৈরি পোশাক রপ্তানি একেবারে তলানিতে এসে ঠেকছে। ইতোমধ্যে আটকা পড়া বিপুল পরিমাণ পণ্য পোল্যান্ড এবং তুরস্ক হয়ে সড়ক পথে রাশিয়া পাঠানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর বাইরেও বিভিন্ন কারখানায় উৎপাদিত বিপুল পরিমাণ পণ্য বিভিন্ন অফডকে আটকা পড়ে রয়েছে। যুদ্ধ পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং জাহাজ চলাচল ঠিকঠাকভাবে না হলেও রাশিয়ার বাজার হারানোর আশংকা করা হচ্ছে।
সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের অন্যতম বড় বাজার রাশিয়া। ইউরোপ আমেরিকার মতো বিশাল না হলেও রাশিয়ায়ও কোটি কোটি টাকার তৈরি পোশাক রপ্তানি করা হয়। দেশের বিভিন্ন গার্মেন্টস কারখানা রাশিয়ার বিভিন্ন খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠানের জন্য পোশাক প্রস্তুত করে। চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে বাংলাদেশ ৪৮১ দশমিক ২৩ মিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক রাশিয়ায় রপ্তানি করেছে। চলতি বছরের প্রথম দুই মাসেই রপ্তানি হয়েছে ১৪০ দশমিক শূন্য ৩ মিলিয়ন ডলারের পণ্য। জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারি মাসে বড় ধরনের বেশ কয়েকটি চালান কলম্বো হয়ে রাশিয়ায় পৌঁছে। কিন্তু মার্চের শুরুতে যুদ্ধের কারণে পোশাক রপ্তানিতে ধস নামে। এই সময় রাশিয়া থেকে নতুন অর্ডার আসা বন্ধ হয়ে যায়। আগের অর্ডারে প্রস্তুতকৃত পণ্যের চালান বিভিন্ন কারখানা এবং অফডকে আটকা পড়ে।
বিজিএমইএর দেয়া তথ্য মতে, যুদ্ধের প্রেক্ষিতে চট্টগ্রামের ৯টি অফডকে রাশিয়ামুখী ১৬৯ টিইইউএস কন্টেনার আটকা পড়ে। এসব কন্টেনারে কয়েক কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রয়েছে। তবে বিদেশি ক্রেতাদের তৎপরতায় আটকা পড়া কন্টেনারগুলোর মাঝে কিছু কন্টেনার পোল্যান্ড এবং তুরস্ক হয়ে রাশিয়ায় পাঠানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সরাসরি জাহাজে রাশিয়া পাঠানো সম্ভব না হওয়ায় কন্টেনারগুলো জাহাজের মাধ্যমে পোল্যান্ড এবং তুরস্ক পাঠানো হচ্ছে। সেখান থেকে সড়কপথে কন্টেনারগুলো রাশিয়ায় নিয়ে যাওয়া হবে। আটকে পড়া কন্টেনারগুলোর মধ্যে ৮৬ কন্টেনার পণ্য পোর্ট লিংকস লজিস্টিকস নামের অফডক থেকে রাশিয়ায় পাঠানোর উদ্যোগ নেয়া হয়। এরমধ্যে ৬৮ কন্টেনার পণ্য শ্রীলংকার কলম্বো পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে পোল্যান্ড হয়ে পণ্যগুলো সড়কপথে রাশিয়ায় প্রবেশ করবে। বাকি ১৮ টি কন্টেনার তুরস্কের মারসিন বন্দর হয়ে রাশিয়া নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলেও সূত্র নিশ্চিত করেছে।
বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কন্টেনার ডিপো অ্যাসোসিয়েশনের (বিকডা) মহাসচিব রুহুল আমিন সিকদার গতকাল দৈনিক আজাদীকে বলেন, আমাদের বিভিন্ন ডিপোতে আরো ১০১ টিইইউএস কন্টেনার আটকা পড়ে আছে। এগুলো বিকল্প পথে রাশিয়ায় পাঠানোর উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
বিজিএমইএর প্রথম সহ সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম দৈনিক আজাদীকে বলেন, যুদ্ধ পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে রাশিয়ার অনেক বড় একটি বাজার আমাদের জন্য অনিশ্চিত হয়ে উঠবে। এতে তৈরি পোশাক খাতে বড় ধরনের সংকট তৈরি হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, যেসব পণ্যভর্তি কন্টেনার বিভিন্ন অফডকে আটকা পড়ে রয়েছে সেগুলো হয়তো বিকল্প পথে রাশিয়ায় পৌঁছবে। কিন্তু নতুন অর্ডার যদি না আসে তাহলে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হবো। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে তৈরি পোশাকে নতুন অর্ডার পাওয়া অনিশ্চিত বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপণ্যের দাম কমার দাবিতে হরতাল অযৌক্তিক : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধভয়াল কালরাত আজ