অপেক্ষা আড়াই কিলোমিটারের

বঙ্গবন্ধু টানেল সংযোগ সড়ক

আনোয়ারা প্রতিনিধি | শনিবার , ২২ অক্টোবর, ২০২২ at ৫:১৮ পূর্বাহ্ণ

আর মাত্র আড়াই কিলোমিটার কাজ শেষ হলে পুরোপুরি প্রস্তুত হয়ে যাবে ছয় লেনের টানেল সংযোগ সড়কের চারটি লেন। এইটুকু কাজ শেষ হলে টানেলের পতেঙ্গা প্রান্ত থেকে আনোয়ারা হয়ে শাহ আমানত সেতু পর্যন্ত পুরো এলাকায় তৈরি হবে নিরবচ্ছিন্ন সড়ক নেটওয়ার্ক। আগামী নভেম্বরের মধ্যে ২ কিলোমিটার ও ডিসেম্বরের মধ্যেই বাকিটুকু শেষ করে ডিসেম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের সঙ্গে একই সাথে চালু হয়ে যাবে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি। এটি চালু হলে চট্টগ্রাম শহরের পতেঙ্গাপ্রান্ত থেকে টানেল হয়ে সংযোগ সড়কের শহরের অপরপ্রান্তে যুক্ত হবে। আবার শাহ আমানত সেতু ব্যবহার করেও দ্রুতগতিতে চলে আসা সম্ভব হবে টানেল পর্যন্ত।

বর্তমানে টানেলের চট্টগ্রাম শহরের পতেঙ্গা প্রান্তে টোল ব্রিজ ও প্রবেশ মুখে শেড তৈরিতে রাতদিন কাজ করছেন শতাধিক শ্রমিক। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে দেশের প্রথম আন্ডারওয়াটার এক্সপ্রেসওয়ে টানেল চালু হবে আগামী ডিসেম্বরে। মূল টানেলের সঙ্গে পশ্চিম ও পূর্ব প্রান্তে ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক থাকবে। এই সড়কের কাজ শেষ। এখানে চট্টগ্রাম আউটার রিং রোড, লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত নির্মাণাধীন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, সৈকত সড়ক, বিমানবন্দর সড়ক টানেলের সাথে যুক্ত করতে চলছে শেষ মুহূর্তের কাজ। টানেল পার হয়ে আনোয়ারা প্রান্তে রয়েছে ৭২৭ মিটার দীর্ঘ উড়ালসড়ক। এরপর প্রায় ৪ কিলোমিটার সড়ক যুক্ত হয়েছে ছয় লেনের সড়কে। টানেলের মূল সড়কের কাজ শেষ করে চলছে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ। এখন যত ব্যস্ততা ছয় লেনের সংযোগ সড়ক নিয়ে। ৪০৭ কোটি টাকা ব্যয়ে টানেল সংযোগ সড়কের ছয় লেনের মধ্যে চার লেন চালু করতে চলছে জোর চেষ্টা। এখানে কার্পেটিং কাজ বাকি মাত্র আড়াই কিলোমিটার। আগামী নভেম্বরের মধ্যে ২ কিলোমিটার ও ডিসেম্বরের মধ্যেই বাকিটুকু শেষ করে চার লেনের সড়ক খুলে দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগের। এছাড়া মূল সড়কের ২১টি কালভার্টের মধ্যে ১৯টির কাজ প্রায় শেষ বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।

সওজ সূত্র জানায়, শিকলবাহা ওয়াই জংশন থেকে কালা বিবিরদীঘি পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার সংযোগ সড়কে কাজ বিলম্বিত হওয়ার পেছনে কারণ ছিল তিনটি। বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ও পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) ২৪৩ খুঁটি দীর্ঘদিন না সরানো, সড়কের মাঝখানে ওয়াসার পানির পাইপলাইন ও বিভিন্ন স্পটে পকেট ল্যান্ড অধিগ্রহণের কাজ শেষ না হওয়া। এক বছর আগে পিডিবি ও আরইবিকে খুঁটি সরানোর জন্য টাকা দেওয়া হলেও মাত্র গতমাসে তারা এই কাজ শেষ করতে পেরেছে।

অভিযোগ পাওয়া গেছে, রাস্তার মূল অ্যালাইনমেন্ট মাঝখান বরাবর চট্টগ্রাম ওয়াসার পানির পাইপ বসানো ছিল। এ নিয়ে দীর্ঘ দেন-দরবারে সওজ কর্তৃপক্ষকে থানায় চারটি জিডি করতে হয়। অবশেষে বিষয়টির গ্রহণযোগ্য সমাধান হয়েছে। সব প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে এখন চলছে ফিনিশিং ওয়ার্ক। সূত্র জানায়, ব্যস্ততম এই সড়কের ২১ কালভার্টের কাজ করতে গিয়ে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। গাড়ি চলাচলের ব্যবস্থা রেখে ২/৩ ভাগে এসব কালভার্টের কাজ করতে গিয়ে সময় লেগেছে তাই বেশি। কালভার্টগুলোর মধ্যে ১৪টির কাজ আগেই শেষ হয়েছে। ৭টির কাজ এ মাসে শেষ করার চেষ্টা চলছে। বাকি ২টির কাজ ডিসেম্বরে আগে শেষ হবে। এতদিন শিকলবাহা ওয়াই জংশন থেকে আনোয়ারা কালাবিবির দীঘি পর্যন্ত যাতায়াতে ছিল ধুলাবালির ভোগান্তি। সেই কষ্টের অবসান হয়ে নভেম্বরের মধ্যে ৮ কিলোমিটার রাস্তার সাড়ে ৭ কিলোমিটারের কার্পেটিং শেষ করার কথা বলেছে সওজ। বর্তমানে সাড়ে ৫ কিলোমিটার অংশের কাজ শেষ। বাকি আড়াই কিলোমিটার প্রস্তুত করতে কাজ চলছে রাতদিন।

নগর পরিকল্পনাবিদ আশিক ইমরান বলেন, টানেল এখন অনেকটাই প্রস্তুত। এর সঙ্গে আনোয়ারা প্রান্তে সংযোগ সড়কের কাজ শেষ করা না গেলে টানেলের সুফল পাওয়া যাবে না। এজন্য কাজ দ্রুত শেষ করতে হবে, একই সাথে গুণগত মানের দিকেও নজর রাখতে হবে। সংযোগ সড়কের প্রকল্প পরিচালক ও সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী সুমন সিংহ জানালেন, ছয় লেন নয়, ডিসেম্বরের মধ্যে চার লেনের কাজ শেষ করে খুলে দেয়া হবে। এই কাজ শেষ করতে এখন আর কোন প্রতিবন্ধকতা নেই। টানেল চালুর সঙ্গে সঙ্গে চার লেইনের সংযোগ সড়ক খুলে দেয়া সম্ভব হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসুপার টুয়েলভ শুরু আজ
পরবর্তী নিবন্ধমীরসরাই শিল্পনগরে চারটিসহ ৫০ শিল্প ইউনিটের যাত্রা ২৬ অক্টোবর