অনেক মিত্রই আজ হঠকারীর ভূমিকায় : মাহফুজ আলম

| মঙ্গলবার , ২৬ নভেম্বর, ২০২৪ at ১০:২৪ পূর্বাহ্ণ

সরাসরি না বললেও রাজধানীর তিন কলেজের সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অন্যতম উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। যেখানে তিনি একটি দল ও দেশিবিদেশি সুযোগ সন্ধানীদের বিষয়ে লিখেছেন। অনেক মিত্র আজ হঠকারীর ভূমিকায়, এমন মন্তব্যও করেছেন। খবর বাংলানিউজের।

গতকাল সোমবার বিকেলে নিজের ভ্যারিফাইড ফেসবুক আইডিতে এ সংক্রান্ত একটি পোস্ট দেন মাহফুজ। গণঅভ্যুত্থান ও ছাত্রতরুণ বিরোধী শক্তি শিরোনামে তিনি পোস্টে লিখেছেনমুক্তিযুদ্ধের পরের দশপনের বছরের ইতিহাস মুক্তিযোদ্ধাদের একে অপরকে হত্যার ইতিহাস। যারা চায়নি বাংলাদেশ শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়াক, তারা মুক্তিযোদ্ধাদের একে অপরকে দিয়ে হত্যা করিয়েছে। তাদের নিজেদের ভুল ছিল না তা নয়, কিন্তু আমাদের মুক্তিযোদ্ধাগণের একের পর এক হত্যা বাংলাদেশকে কীভাবে পিছিয়ে দিল, তা ইতিহাস একদিন বলবে।

এবারের আন্দোলন সাহসী ছাত্র তরুণদের নেতৃত্বে জনগণের আন্দোলন। কিন্তু, একটি দল এবং দেশি বিদেশি সুযোগ সন্ধানী ইস্টাবলিশমেন্ট গত ৩ মাসে ছাত্রদের ভিলিফাই করেছে, বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন দিয়ে ছাত্রদের মধ্যে বিভেদ ঘটিয়েছে, অন্য একটি তরুণ দলকে লেলিয়ে দিয়েছে ছাত্রদের বিরুদ্ধে, তদুপরি ছাত্রদের সাথে সম্মানজনকভাবে ডিল তো করেইনি, বরং ছাত্রদের তারা শত্রু গণ্য করেছে। তার পরিণতি কি ভালো হচ্ছে, বা হবে? মনে রাখতে হবে, বিদেশি শক্তির কোনো সাধ্য নাই এ দেশের মানুষকে পদানত করার।

কিন্তু, গোলামির মানসিকতার কিছু গাদ্দার আর হঠকারীর এ শক্তি আছে। তারা গত তিন মাসে তা দেখাল। ছাত্রদের আজ সংঘাতের মুখে ঠেলে দিয়ে হত্যার মাধ্যমে ছাত্রদের বৈধতার সঙ্কট হলে, যারা যারা লাভবান হবে, তারা সবাই এ উসকানি এবং প্রশাসনিক ব্যর্থতার সাথে জড়িত। ধীরে ধীরে আমরা সবই বলব। অথবা, আপনারা চোখ খুললেই দেখতে পাবেন। এদিকে, বাম এবং ডান মানসিকতার কতিপয় নেতৃত্ব বা ব্যক্তিগণ অভ্যুত্থানে, এবং পরবর্তীতে সরকারে নিজেদের শরিকানা নিশ্চিত না করতে পেরে উন্মত্ত হয়ে গেছেন। তাদের উন্মত্ততা, বিপ্লবী জোশ এবং উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড দেশটাকে অস্থির করে রেখেছে। অনেক মিত্রই আজ হঠকারীর ভূমিকায়। আমরা আমাদের ব্যর্থতা স্বীকার করি। আমরা শিখেছি এবং ব্যর্থতা কাটানোর চেষ্টাও করছি। আমরা আরও চেষ্টা করব সবাইকে নিয়ে এগুনোর। কিন্তু, হঠকারিতা এবং ছাত্রদের অন্যায্যতার চেষ্টা এ জাতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

হঠকারিতা, উসকানি, ছাত্রতরুণদের মধ্যে বিভেদ ও বিরোধ তৈরি, অভ্যুত্থানের শক্তিকে প্রতিক্রিয়াশীল করে তোলার অপচেষ্টাসবই ব্যর্থ করে দেওয়া হবে, ইন শা আল্লাহ। আমরা ৫ আগস্টের সকালের মতন ঐক্যবদ্ধ হওয়ার দিকে অগ্রসর হচ্ছি। এবারের সাংগঠনিকভাবে গড়ে ওঠা ঐক্য দীর্ঘস্থায়ী মুক্তির সুযোগ তৈরি করবে, ইন শা আল্লাহ।

উল্লেখ্য, সোমবার সকাল থেকে মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজ (ডিএমআরসি), কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে ওই এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। বেলা ১২টার দিকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল কলেজের হাজারো শিক্ষার্থী একত্রিত হয়ে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে হামলা চালায়। সংঘর্ষে আহত হয়ে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকক্সবাজার-সেন্টমার্টিন রুটে জাহাজ চলবে বৃহস্পতিবার থেকে
পরবর্তী নিবন্ধবাংলাদেশ ব্যাপক শ্রম সংস্কারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ : ড. ইউনূস