অঙ্গন : মৌলিক সৃজনের অঙ্গীকার

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ২৭ জানুয়ারি, ২০২২ at ৮:২১ পূর্বাহ্ণ

 

 

মৌলিক সৃজনের অঙ্গিকার নিয়ে ১৯৭১ সালের ১ জানুয়ারি অঙ্গন থিয়েটার ইউনিটের প্রতিষ্ঠা। প্রতিষ্ঠাতা প্রধান নাট্যকার ও নির্দেশক মিলন চৌধুরী, শান্তুনু বিশ্বাস, সনজীব বড়ুয়া, শিমুল বড়ুয়া এবং ঢালী আল মামুনকে সঙ্গে নিয়ে অঙ্গন থিয়েটার গঠনের উদ্যোগ নেন। নানা সংকট অতিক্রম করে চুয়াল্লিশ বছর ধরে অঙ্গন তার যাত্রা অব্যাহত রেখেছে । অঙ্গনের যাত্রা শুরু হয় মুক্তাঙ্গনে। ১৯৭৮ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যাল মডেল হাই স্কুলের মাঠে ‘যায় দিন ফাগুনো দিন’ নাটকের পর পর পাঁচটি প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে অঙ্গনের পথ পরিক্রমার সূচনা।

অঙ্গন থিয়েটার ইউনিট বিশ্বাস করে, শিল্পকলার যে কোনো মাধ্যম মানুষের আত্মিক, সামাজিক ও পারিপার্শ্বিকতার গণ্ডিটাকে বিস্তৃত করতে পারে; তার মধ্যে নাটক এমনই একটি যৌথ স্বনির্ভর শিল্প মাধ্যম, যা মানুষকে আনন্দের সঙ্গে সঙ্গে সুস্থ সুন্দর ভবিষ্যতেরও দিক নির্দেশ করে। অঙ্গন থিয়েটার ইউনিট ১৯৮০ সাল থেকে একাধিকবার জাতীয় নাট্যোৎসবে অংশগ্রহণ করেছে। জাতীয় নাট্যোৎসবের অভিনীত নাটকগুলো হলো : মহেশ, যায় দিন ফাগুনো দিন, অভ্যন্তরীণ খেলাধুলা, পাথর প্রতিমা। ১৯৮৪ সালে শিল্পকলা একাডেমির বিশেষ আয়োজনে ঢাকার একজন পিরামিড নাটকের মঞ্চায়ন করে অঙ্গন। ২০০১ সালে বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনুদানে আনে ‘নিবারণের স্বপ্ন স্বদেশ’। নাটকটি পরবর্তীতে ঢাকায়ও অভিনীত হয়। ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় ছড়া উৎসবে অঙ্গন পরিবেশন করেছে ছড়া নাটক ‘বাজলো রাজার বারোটা’ প্রযোজনা করে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম গ্রুপ থিয়েটার সমন্বয় পরিষদ ও চট্টগ্রাম থিয়েটার ফোরাম আয়োজিত সকল নাট্যোৎসবে অঙ্গন অংশগ্রহণ করেছে ।

অঙ্গনের সপ্তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত অঙ্গন উৎসবে বরেণ্য শিল্পী বিনয় বাঁশীকে সংবর্ধনা জ্ঞাপন করা হয়। পরবর্তীতে অঙ্গনের পঁচিশ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত নাট্যোৎসবে সংবর্ধিত করা হয় নাট্যকার, নির্দেশক মিলন চৌধুরীকে। অঙ্গন থিয়েটার ইউনিট দেশের একাধিক জেলায় নাটক মঞ্চায়ন করেছে। অভিনয় করেছে শহর ও গ্রামের নানা স্থানে। অঙ্গন থিয়েটার ইউনিট এ পর্যন্ত ঊনিশটি নাটকের চার শতাধিক প্রদর্শনী করেছে। অঙ্গনের সামপ্রতিক প্রযোজনা বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ‘স্বল্পব্যয়ে নতুন স্থানে নতুন নাটক’ কার্যক্রমের অধীনে সনজীব বড়ুয়া রচিত ও নির্দেশিত ‘এই সেই হাত’। মৌলিক নাটক নির্মাণে বিশ্বাসী বলেই অঙ্গনের অধিকাংশ নাটক দলের সদস্য নাট্যকারদের রচনায়। এর মধ্যে মিলন চৌধুরী রচিত যায় দিন ফাগুনো দিন, একজন পিরামিড, অভ্যন্তরীণ খেলাধুলা, নিবারণের স্বপ্ন স্বদেশ, দায়ভার অন্যতম। শান্তনু বিশ্বাসের লেখা কালো গোলাপের দেশ, দপ্তরী রাজ দপ্তরে, নবজন্ম এবং সনজীব বড়ুয়া রচিত বাজলো রাজার বারোটা, মহারাজ অসুস্থ, এই সেই হাত উল্লেখ যোগ্য। অঙ্গন সপ্তম বর্ষপূর্তি ও পঁচিশ বছর পূর্তিতে দুটি উৎসব আয়োজন করে। দীর্ঘ পথচলায় মাত্র দুটি উৎসব আয়োজন এ কারণেই যে, তারা মনে করে উৎসব আয়োজনের চাইতে নিয়মিত চর্চায় থাকা জরুরি। আর এ লক্ষ্য নিয়েই নানা বাধা বিপত্তিকে অতিক্রম করে অঙ্গন তার যাত্রা সচল রেখেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতালে ডায়ালাইসিস মেশিন দিল জেলা পরিষদ
পরবর্তী নিবন্ধচসিকে সুরক্ষাসামগ্রী দিলেন ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনার