ঢাকার সাভার উপজেলার একটি মাদ্রাসার কবরস্থানে মাহমুদুর রহমান পরিচয়ে দাফন করা মরদেহটি বিএনপি নেতা আবুল হারিছ চৌধুরীর। পরিচয় নির্ধারণে কবর থেকে লাশ তোলার পর ডিএনএ পরীক্ষার ফল তার মেয়ে সামিরা তানজিন চৌধুরীর নমুনার সঙ্গে মিলেছে, এমন প্রতিবেদন দাখিলের পর হারিছ চৌধুরীর দেহাবশেষ তার ‘শেষ ইচ্ছা অনুসারে’ পছন্দমত কবরস্থানে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ‘যথাযথ সম্মান’ দিয়ে দাফনের অনুমতি দিয়েছে হাই কোর্ট। গতকাল বুধবার বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের হাই কোর্ট বেঞ্চ হারিছ চৌধুরীর মেয়ে সামিরা তানজিনের করা রিট আবেদন মঞ্জুর করে এ আদেশ দেয়। খবর বিডিনিউজের।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মাহদীন চৌধুরী। এজলাস থেকে বের হয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, গত ১৬ অক্টোবর সাভারের বিরুলিয়ায় জামিয়া খাতামুন্নাবিয়্যীন মাদ্রাসার কবরস্থান থেকে হারিছ চৌধুরীর দেহাবশেষ উত্তোলন করে ডিএনএ টেস্টের জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়। গত ৫ নভেম্বর ডিএনএ টেস্টের রেজাল্ট আসে। ডিএনএ টেস্টে পরিষ্কারভাবে পুলিশ প্রশাসন ও কনসার্ন ডিপার্টমেন্ট বলে, যে বডিটি কবর দেওয়া হয়েছিল উনি ব্যারিস্টার সামিরা তানজিনের জৈবিক পিতা। ১০ বা ১১ নভেম্বর হাই কোর্টে ডিএনএ টেস্টের রিপোর্ট দিয়ে যাওয়া হয়। তিনি বলেন, রিপোর্টের কপি পাওয়ার পর গতকাল বুধবার আমরা মহামান্য হাই কোর্ট ডিভিশনে দুইটি আবেদন দাখিল করি। ঢাকা মেডিকেলের মর্গে পড়ে থাকা উনার দেহাবশেষ যেন উনার পছন্দমত উনার স্থাপিত সিলেটের কানাইঘাটে শফিকুল হক চৌধুরী মেমরিয়াল অর্ফানেজে যেন দাফন করা হয় একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার প্রাপ্য সম্মানসহ, এটি উনার শেষ ইচ্ছা ছিল। আর এ বিষয়ে সহায়তা দিতে প্রশাসনসহ সরকারের সংশ্লিষ্টদের আরেকটি আবেদন দিয়ে এ আবেদনে বাদি করা হয়। মহামান্য আদালতের বেঞ্চ দীর্ঘ শুনানির পর দুটি আবেদনই অনুমোদন করেন। আদালত আদেশ দিয়েছেন, আমরা যেন উনার দেহাবশেষ উনার পছন্দমত উনার স্থাপিত কবরস্থানে প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধার প্রাপ্য সম্মান অনুযায়ী দাফন করি।
এসময় হারিছ চৌধুরীর মেয়ে সামিরা তানজিন বলেন, আমার বুকে আমার বাবা মারা গেছেন। আমি দাফন করেছি। সে সত্যটা বেরিয়ে এল। ঢাকা মেডিকেলে আব্বুর দেহাবশেষ সংরক্ষিত, সেখান থেকে আব্বুকে নিয়ে যাওয়া হবে সিলেটে। একটা প্রসেসের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। এখনও প্রশাসন সম্পূর্ণ ফ্যাসিস্টমুক্ত নয়।