সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন, বিদেশে অর্থ পাচার এবং বিভিন্ন দেশে ব্যবসা ও বাড়ি কেনার অভিযোগ অনুসন্ধান করবে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক)। আজিজের তোফায়েল আহমেদ ও জোসেফের অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগও খতিয়ে দেখবে দুদক। গতকাল বুধবার কমিশনের সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন সাংবাদিকদের বলেন, সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ দুর্নীতির মাধ্যমে রাজধানীসহ বিভিন্ন জায়গায় বাড়ি, ফ্ল্যাট ক্রয়, ভাইদের নামে ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় বাড়ি ও কয়েকশ বিঘা জমি ক্রয় করেছেন। এছাড়াও তার দেশে–বিদেশে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। গোয়েন্দা অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে এসব তথ্য সঠিক পরিলক্ষিত হওয়ায় প্রকাশ্য অনুসন্ধানের জন্য কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
২০১৮ সালের জুন থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত তিন বছর বাংলাদেশের চিফ অব আর্মি স্টাফ ছিলেন জেনারেল আজিজ আহমেদ। তার আগে ২০১২ সাল থেকে চার বছর বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির নেতৃত্ব দেন। সেনাপ্রধান হিসেবে মেয়াদের শেষ সময়ে আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে আজিজ আহমেদের বিরুদ্ধে দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগ তোলা হলে সরকার এবং সেনাসদর সে সময় প্রতিবাদ জানিয়েছিল। আজিজ আহমেদও অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন। এরপর দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগে চলতি বছরের ২০ মে আজিজ আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয় দেশটি। তখনও দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করেন সাবেক এই জেনারেল। দুদকের এক প্রতিবেদনে আজিজের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে রাজধানীসহ বিভিন্ন জায়গায় বাড়ি, ফ্ল্যাট ক্রয়সহ শত কোটি টাকা বিনিয়োগ করে আলিশান বাংলো নির্মাণের অভিযোগ উঠে এসেছে। এছাড়া মিরপুর ডিওএইচএসে বাড়ি, ঢাকার নিকুঞ্জে আজিজ রেসিডেন্স নামের বাড়ি রয়েছে তার। ছোট ভাই তোফায়েল আহমেদ ও জোসেফের নামে ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় বাড়ি ও কয়েকশ বিঘা জমি কিনেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
আজিজের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনসহ বিভিন্ন ব্যাংক ও হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে অর্থ পাচার করে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও দুবাইয়ে ব্যবসা পরিচালনা ও বাড়ি কেনার অভিযোগ এসেছে দুদকের দৈনিক ও সাম্প্রতিক অভিযোগ সেলের এক চিঠিতে।
ফেনী–২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. নিজাম হাজারীর বিরুদ্ধে ওঠা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগও অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক। দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন জানান, সাবেক সংসদ সদস্য নিজাম হাজারীর নিজের, স্ত্রী ও পরিবারের নামে কোটি কোটি টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়াও দেশে–বিদেশে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের তথ্যও পাওয়া গেছে বলে জানান তিনি।