রামুতে বৈদ্যুতিক শকে হাতি হত্যার অভিযোগ

কক্সবাজার বনাঞ্চলে ২ বছরে ১৩ বন্যহাতি হত্যা

কক্সবাজার প্রতিনিধি | রবিবার , ১৫ নভেম্বর, ২০২০ at ৯:৩৭ অপরাহ্ণ

কক্সবাজারের রামুর দক্ষিণ মিঠাছড়ি বনাঞ্চলে বৈদ্যুতিক শকে একটি বন্যহাতি হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
মৃত হাতিটি আজ রবিবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা পর্যন্ত রামু উপজেলার দক্ষিণ মিঠাছড়ির বনের পাশে পড়েছিল।
এনিয়ে গত দুই বছরে কক্সবাজার বনাঞ্চলে অন্তত ১৩টি হাতিকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছে স্থানীয় পরিবেশবাদীরা।
কক্সবাজার (দক্ষিণ) বনবিভাগের পানের ছড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা তৌহিদুর রহমান বলেন, “রবিবার বেলা ১১টার দিকে স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে একটি বন্যহাতির মৃত্যুর খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে যাই। হাতির শরীরের উপরের অংশে কোনো আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়নি। তবে হাতিটি বেশ বয়ষ্ক। হাতিটির মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে ময়নাতদন্তের জন্য ভেটেরিনারি সার্জনকে ডেকে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে মৃত্যুর আসল কারণ তবে স্থানীয় লোকজনের সন্দেহ বৈদ্যুতিক শকে হাতিটির মৃত্যু হয়েছে।”
তিনি জানান, যেখানে মৃত হাতিটি পড়ে রয়েছে সেটি জোতজমি। এর পাশেই বন। আর ঘটনাস্থলের প্রায় ২০০ মিটার দূরেই রয়েছে লোকালয়। লোকালয়ের বাড়িঘরে বৈদ্যুতিক সংযোগ আছে।
এর আগে গত ৬ নভেম্বর জেলার চকরিয়ার খুটাখালীর কালাপাড়া গহীন জঙ্গলে তিন বছর বয়সী একটি বন্যহাতিকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এরপর ঐ হাতিকে মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়। ঘটনার ২ দিন পর গত ৮ নভেম্বর সকালে স্থানীয় বনকর্মীরা ঘটনাস্থল থেকে মাটি খুঁড়ে মরদেহটি উদ্ধার করে।
চকরিয়া উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সুপন নন্দী ও ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের সহকারী ভেটেরিনারি সার্জন মোস্তাফিজুর রহমান হাতিটির ময়নাতদন্ত করেন।
তারা বলেন, “আনুমানিক তিন বছর বয়সী ঐ স্ত্রী হাতিটির কপালে একটি গুলি করা হয়েছে। গুলির কারণে মস্তিষ্কে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়ায় হাতিটি মারা গেছে।”
স্থানীয় বনকর্মীরা জানান, বনাঞ্চল উজাড় হওয়ায় খাবারের সন্ধানে হাতির দল লোকালয়ে নেমে এসে লোকজনের ধানক্ষেত খেয়ে ফেলে। হাতির পাল ধানক্ষেতে ঢুকলেই গুলি করা হয় অথবা ধানক্ষেত ঘিরে রাখা বৈদ্যুতিক তারে স্পৃষ্ট হয়ে হাতির মৃত্যু হয়।
এ নিয়ে গত ২ বছরে কক্সবাজারে অন্তত ১৩টি বন্যহাতি হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেন কক্সবাজারের পরিবেশবাদী সংগঠন ইয়ুথ এনভায়রনমেন্ট সোসাইটি (ইয়েস)-এর কক্সবাজারের প্রধান নির্বাহী ইব্রাহিম খলিল মামুন।
তিনি বলেন, “ধানক্ষেত রক্ষার জন্যই লোকজন বৈদ্যুতিক শক ও গুলি করে বন্যহাতি হত্যা করছে।”
কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) তৌহিদুল ইসলাম বলেন, “গুলি করে হাতি হত্যার ঘটনায় চকরিয়া থানায় চিহ্নিত দুই ব্যক্তিসহ অজ্ঞাতনামা আরও পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। রামুতে হাতি মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান করে অনুরূপ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

পূর্ববর্তী নিবন্ধহেফাজতের নতুন কমিটি প্রত্যাখ্যান শফী অনুসারীদের
পরবর্তী নিবন্ধবাঁশখালীর পুকু‌রিয়ায় গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু