সাগর তীরে উঠল গড়ে একটি জাতি
ব–দ্বীপ জুড়ে জালের মতো নদীর শাখা,
কাদার মতো কোমল এবং নির্বিবাদী
আত্মাজুড়ে আত্মীয়তার গভীর রেখা।
লোকগুলো সব ঈষৎ কালো শীর্ণ কায়া
শ্রমেই শুধু আহার জুটে দিন প্রতিদিন,
বুকের ভিতর পলির মতো কোমল মায়া
চৈত্র মাসের খরার মতো নয়তো কঠিন।
দীর্ঘকায়ার ডাকাত আসে সাগর বেয়ে
নতুন হাওয়া আছড়ে পড়ে পলির বুকে,
বিরুদ্ধস্রোত উথাল পাথাল কাঁপছে নেয়ে
আসলো শোষক, অত্যাচারী ভাটির দিকে।
হাজার বছর পেরিয়ে গেল শোষণ জালে
ক্যালেন্ডারের পাতায় এলো উনিশ্শো বিশ,
টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম নিল একটি ছেলে
শেখ মুজিবুর নামটি তাহার রটলো নিমিষ।
ত্রস্ত বৃটিশ ভারত জুড়ে নিজের পাপে
ফণার মতো উঠলো আঙুল শেখ মুজিবের,
কোলকাতা আর ফরিদপুরের মানুষ কাঁপে
মুজিব দেখে বিচিত্র ফাঁদ শোষণ জালের।
দাঙ্গা হলো ধর্ম নিয়ে কোলকাতাতে
দেখল মুজিব মরছে মানুষ সব বাঙালি,
ধর্ম কোথায়? ভাসছে সবাই রক্তস্রোতে
ছুরির নিচে প্রাণ দিয়ে যায় সব কাঙালি।
অত্যাচারীর নেই কোথাও ধর্ম বিবেক
নিজের গড়া স্বাধীন দেশেই বুঝল মুজিব,
হাজার বছর যেই গরাদে ছিলাম আটক
ভাঙতে হবে সেই গরাদের সবকটি শিক।
‘ভায়েরা আমার!’
শীর্ণ কায়া উঠল কেঁপে
হাজার বছর চৈত্র খরায় দগ্ধ পলি,
ঢাল্লো সাহস আঙুল তুলে, উঠল ফেঁপে
খরার বুকে দাঁড়িয়ে গেল বীর বাঙালি।
ছুটল পাকি পাখির মতো বজ্রাহত
মোমের মত খসলো গলে লোহার গারদ,
ঈষৎ কালো লোকগুলো সব ছুটল দ্রুত
ঝাণ্ডা হাতে লাল–সবুজের ঝেঁটিয়ে আপদ।