বেঁচে থাকলে উদযাপন করতেন ৭২তম জন্মদিন

| বৃহস্পতিবার , ৩০ মে, ২০২৪ at ৭:৪০ পূর্বাহ্ণ

অভিনয় দিয়ে মানুষকে বিমোহিত করতেন। তিনি ছিলেন অভিনেতাদের অভিনেতা। তার অভিব্যক্তি, অট্টহাসি, ব্যক্তিত্বের ভক্ত কে না ছিলেন! তিনি কিংবদন্তি অভিনেতা হুমায়ূন ফরিদী। প্রখ্যাত এই অভিনেতা গতকাল বুধবার বেঁচে থাকলে হয়ত নিজের ৭২তম জন্মদিন উদযাপন করতেন। ১৯৫২ সালের এই দিনে ঢাকার নারিন্দায় জন্মগ্রহণ করেন হুমায়ূন ফরিদী। আর ২০১২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে যান তিনি।

আশি ও নব্বইয়ের দশকে মঞ্চ ও টিভি নাটককে জনপ্রিয় করার পেছনে হুমায়ূন ফরীদির অবদান ছিল উল্লেখযোগ্য। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে দাপটের সঙ্গে অভিনয় করে গেছেন তিনি। এখনও তিনি সবার হৃদয়ে জায়গা করে আছেন। ভক্তদের ভালোবাসায় তিনি একজন অমর অভিনেতা। খবর বাংলানিউজের।

১৯৬৪ সালে মাত্র ১২ বছর বয়সে কিশোরগঞ্জের মহল্লার নাটক ‘এক কন্যার জনক’এ প্রথম অভিনয় করেন হুমায়ূন ফরিদী। ১৯৭৬ সালে নাট্যজন সেলিম আল দীনের উদ্যোগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয় নাট্যোৎসব। ফরিদী ছিলেন এর অন্যতম প্রধান সংগঠক। এই উৎসবে ফরিদীর নিজের রচনায় এবং নির্দেশনায় মঞ্চস্থ হয় ‘আত্মস্থ ও হিরন্ময়ীদের বৃত্তান্ত’ নামে নাটক। ওই সময় নাটকটি সেরা হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল।

ঢাকা থিয়েটারে শকুন্তলা, ফণীমনসা, কীত্তনখোলা, কেরামত মঙ্গল, মুনতাসীর ফ্যান্টাসি, ভূতের মতো তুমুল জনপ্রিয় মঞ্চ নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে ফরিদী হয়ে উঠেন ঢাকা থিয়েটারের প্রাণ ভোমরা। বনে যান সে সময়ের মঞ্চ নাটকের অদ্বিতীয় ব্যক্তি। আতিকুল ইসলাম চৌধুরীর ‘নিখোঁজ সংবাদ’র মধ্য দিয়ে টিভি পর্দায় আগমন তার। তবে ১৯৮৩ সালে সেলিম আল দীনের রচনা এবং নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চুর পরিচালনায় সেই সময়কার জনপ্রিয় নাটক ‘ভাঙনের শব্দ শুনি’তে গ্রামের মিচকা শয়তান সেরাজ তালুকদারের যে চারিত্রিক রূপ তিনি দিয়েছিলেন আর সেই নাটকে তার সেই সংলাপ ‘আরে আমি তো পানি কিনি, পানি, দুধ দিয়া খাইবা না খালি খাইবা বাজান’ বেশ শ্রোতাপ্রিয় হয়ে উঠেছিল।

বাঙালির মধ্যবিত্ত সামাজিক জীবনধারাকে তিনি আনন্দিত করে তুলেছিলেন, ফরিদীর নাটক মানেই বিটিভির সাদাকালো পর্দায় পুরো বাঙালির চোখ আটকে যাওয়া। হতাশ করতেন না তিনি, এত প্রাণবন্ত, এত জীবন্ত, যেন আমাদের চারপাশের মানুষগুলোই জীবন্ত হয়ে যেত ফরিদীর অভিনয়ে। ‘সংশপ্তক’ নাটকে হুমায়ূনের ‘কান কাটা রমজান’ চরিত্রের অভিনয় যারা দেখেছেন তারা ফরিদীকে স্থান দিয়েছেন হৃদয়ের মাঝখানে।

নব্বই দশকে এসে নাম লিখিয়েছিলেন ‘বাণিজ্যিক ধারার বাংলা চলচ্চিত্রে। ‘হুলিয়া’ দিয়ে প্রথম সিনেমাতে অভিনয়। ফরিদী অভিনয়ে এতটাই অনবদ্য ছিলেন যে একসময় নায়কের চেয়ে বাংলা সিনেমাপ্রেমীদের কাছে ভিলেন হুমায়ূন ফরিদী বেশি প্রিয় হয়ে উঠেন। বাণিজ্যিকভাবে সফল ২৫০টির মতো চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন ফরিদী।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবৈষ্টমী রকফেস্ট : গাইবেন মিজান ও কেএইচএন
পরবর্তী নিবন্ধলন্ডন যাচ্ছেন ফারিণ