বিএনপির আন্দোলনের ঘোষণা কাগুজে বাঘ ছাড়া কিছু নয় : তথ্যমন্ত্রী

| সোমবার , ২২ মে, ২০২৩ at ৭:৪৯ পূর্বাহ্ণ

তথ্য ও সমপ্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ক’দিন পরপর বিএনপির নানা আন্দোলনের ঘোষণা আসলে ‘কাগুজে বাঘ’ এবং ‘খালি কলসি বাজে বেশি’র মতো। গতকাল দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকরা ‘বিএনপি এখন সরকার পতনের এক দফা দাবির আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে’ এ নিয়ে প্রশ্ন করলে মন্ত্রী বলেন, এই এক দফা বহু আগে থেকেই তারা দিয়েছে। বিএনপি মাঝে মধ্যেই এক দফায় যায় আবার দফা বাড়ে, কিছুদিন পরপর এই ঘটনা ঘটে। আগেও তারা এ রকম ১০ দফা, ১৪ দফা, ১২ দফা, সর্বশেষ ১৭ দফা দিয়েছিলো। তাদের জোটের আকারও বাড়ে আবার কমে, অ্যামিবার মতো নিজেরা ভাগ হয়ে আবার দ্বিখন্ডিতত্রিখন্ডিত হয়। খবর বাসসের।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপির এই সার্কাস আমরা বহুদিন ধরে দেখে আসছি। আর মির্জা ফখরুল সাহেবের বক্তব্যের সার্কাসও মানুষ দেখছে। মানুষের কাছে এগুলো এখন হাস্যরস আর কৌতুক। বিএনপির এসব ঘোষণা ‘কাগুজে বাঘ’ আর ‘খালি কলসি বেশি বাজা’ ছাড়া অন্য কোনো কিছুই নয়।’

একটি দৈনিক পত্রিকার রিপোর্ট উদ্ধৃত করে সাংবাদিকরা দেশের ওপর ‘স্যাংশন’ সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন করলে সমপ্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, যে পত্রিকা লিখেছে তাদের জিজ্ঞাসা করুন, আমার এ বিষয়ে কোনো কিছু জানা নেই। আরেকটি কথা হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আমাদের উন্নয়ন সহযোগী, তাদের সাথে আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার। গত ৫১ বছর ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ বিনির্মাণে সহায়তা করে আসছে, আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীকেও প্রশিক্ষণসহ নানা সহায়তা দিয়ে আসছে এবং সেই সহায়তা অব্যাহত আছে। আমরা মনে করি, আমাদের যারা উন্নয়ন সহযোগী, তাদের সহযোগিতায় দেশ আজ সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে। সেই ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র আমাদের এক অত্যন্ত ‘প্রোফাউন্ড ডেভালপমেন্ট পার্টনার’।’

আর নিষেধাজ্ঞা আর পাল্টানিষেধাজ্ঞা এগুলো দিয়ে কোনো লাভ হয় না, সেটি ইতিমধ্যেই প্রমাণিত হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘ইরানের বিরুদ্ধে অনেকেই স্যাংশন দিয়ে রেখেছে ইরানের সরকার তো পড়ে যায় নাই, বহাল তবিয়তে আছে। বহু বছরের স্যাংশনেও কিউবাকে টলানো যায় নাই, সরকারও পরিবর্তন হয় নাই। মিয়ানমারের বিরুদ্ধে বহু বছর ধরে বহু স্যাংশন, সেখানকার সরকার তো পরিবর্তন হয় নাই। রাশিয়ার বিরুদ্ধে বহু স্যাংশন, সেগুলো অমান্য করেই ইউরোপের বিভিন্ন দেশ এবং অনেকেই তাদের কাছ থেকে পণ্য আমদানি করছে। অর্থাৎ এগুলো দিয়ে আসলে লাভ হয় না।

ভোগ্যপণ্যের অবৈধ মজুতদারী ও দ্রব্যমূল্য নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তথ্য ও সমপ্রচারমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে পণ্যের কোনো সংকট নাই। সমস্ত ভোগ্যপণ্য যথেষ্ট মজুত আছে এবং ভোগ্যপণ্য আসছেও। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, কয়েকজন ব্যবসায়ী এগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করার অপচেষ্টায় থাকে। কিছু আড়ৎদার মজুতদার অস্বাভাবিকভাবে তাদের মুনাফা লাভের জন্য দাম বাড়ায়। এটি অনৈতিক, আইনবিরুদ্ধ। বাংলাদেশে মজুত সংক্রান্ত এবং মজুতদারীর বিরুদ্ধে আইন আছে। ভোক্তা অধিকার সংস্থা এ নিয়ে কাজ করছে, কিছু সুফলও আমরা পেয়েছি। এখনও যারা অস্বাভাবিকভাবে বিভিন্ন পণ্যের দাম অহেতুক বাড়াচ্ছে, জনগণের ভোগান্তি তৈরি করছে বা তৈরির অপচেষ্টা চালাচ্ছে, সরকার প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর হস্তে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

এর আগে তথ্যমন্ত্রী রাজনীতি গবেষক এইচএম মেহেদী হাসান গ্রন্থিত ‘সাবাস বাংলাদেশ’, ‘ছোটদের বঙ্গবন্ধু’ ও মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক উপন্যাস ‘ভালোবাসার ফুল’ শীর্ষক তিনটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন। এ সময় হাছান মাহমুদ বই তিনটির লেখককে ও প্রকাশক অনার্য পাবলিকেশনস এবং অর্জন প্রকাশনকে অভিনন্দন জানান। গ্রন্থকার মেহেদী হাসান ও প্রকাশক আবু হাশেম সরকার মোড়ক উন্মোচনে অংশ নেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা খর্ব হয়নি, বরং বেড়েছে
পরবর্তী নিবন্ধবিএনপি ২০১৮ সালের নির্বাচনকে দিনে সুষ্ঠু বললেও সন্ধ্যায় বক্তব্য পরিবর্তন করেছিল : জয়