বান্দরবানে পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রী মনোয়ারা বেগমকে হত্যার দায়ে স্বামী মো. আবুল কালামকে (৪৫) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। এছাড়াও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়।
আজ সোমবার (১০ জানুয়ারি) সকাল এগারোটায় জেলা ও দায়রা জজ মো. এহ্সানুল হকের আদালত এ রায় দেয়।
আদালত ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানায়, ২০১৩ সালে ১৭ মার্চ সকালে মো. আবুল কালাম তার বসতবাড়িতে পারিবারিক কলহের জেরে তার দ্বিতীয় স্ত্রী মনোয়ারা বেগমকে গাছের মোটা লাঠি দিয়ে মাথায় সজোরে আঘাত করে গুরুতর জখম করে হত্যা করে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় সেইদিন নিহত মনোয়ারা বেগমের বাবা মো. সৈয়দ আলম বাদী হয়ে জামাতা মো. আবুল কালামের বিরুদ্ধে নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় এজাহার দায়ের করলে পুলিশ ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর মো. আবুল কালামকে অভিযুক্ত করে চূড়ান্ত প্রতিদেন দাখিল করে। আসামি মামলার শুরু থেকে পলাতক থাকায় আদালত কর্তৃক আসামির জন্য এসডিএল নিয়োগ করা হয়।
আদালত ১১ জন স্বাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের পর মামলার যুক্তিতর্ক শুনানির জন্য দিন ধার্য করে। পরে আসামি মামলার যুক্তিতর্ক শুনানির পর্যায়ে ৩ নভেম্বর ২০২১ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রার্থনা করলে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
আসামিপক্ষ থেকে এ মামলায় ৪ জন সাফাই স্বাক্ষীকে পরীক্ষা করার পর আদালত এ রায় দেয়। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. আবুল কালাম নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ৩নং ঘুমধুম ইউনিয়নের বাইশফাঁড়ি ঠাণ্ডা ঝিরি ৩নং ওয়ার্ডের মৃত মকবুল আলীর ছেলে। তার স্ত্রী মনোয়ারা বেগম একই এলাকার মো. সৈয়দ আলমের মেয়ে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বান্দরবান জেলা ও দায়রা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) বেদারুল আলম জানান, রায় ঘোষণার সময় আসামি মো. আবুল কালাম আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলার বাদী ও মনোয়ারা বেগমের বাবা মো. সৈয়দ আলম রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।
অপরদিকে, জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, “আসামি মো. আবুল কালাম তার স্ত্রীকে হত্যা করে। এ ঘটনায় দায়রেকৃত মামলায় সাক্ষ্য-প্রমাণে বিষয়টি প্রমাণিত হয়। আদালতের বিচারক তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন।”