ফরাসিদের কাঁদিয়ে ইউরোর ফাইনালে স্পেন

ক্রীড়া প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার , ১১ জুলাই, ২০২৪ at ৯:১২ পূর্বাহ্ণ

কপালটাই যেন মন্দ কিলিয়ান এমবাপের। গত বিশ্বকাপের ফাইনালে হারের পর এবার ইউরো কাপের সেমিফাইনালে হেরে বিদায় নিতে হলো তাকে এবং তার দল ফ্রান্সকে। ইউরোর প্রথম সেমিফাইনালে স্পেনিশদের বিপক্ষে ফরাসিরাই ফেবারিট ছিল। কিন্তু মাঠের লড়াইয়ে সবকিছু এলোমেলো করে দিল ১৬ বছরের এক কিশোর। আর তাতে এমবাপের ইউরো জয়ের স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল। হাই ভোল্টেজ ম্যাচে প্রথমে পিছিয়ে পড়েও দারুনভাবে ফিরে আসে স্পেন। আর তাতেই ম্যাচ জিতে ফাইনালে জায়গা করে নেয় স্পেন। জার্মানির মিউনিখের আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় মঙ্গলবার রাতে প্রথম সেমিফাইনালে ২১ গোলে জিতেছে লুইস দে লা ফুয়েন্তের দল স্পেন। গতি আর নান্দনিক ফুটবলে আসরে ছয় ম্যাচ খেলে সবগুলোই জিতল স্পেন। অপরাজিত থেকেই ২০১২ সালের ইউরো চ্যাম্পিয়নরা আবার ফাইনালে। রোমাঞ্চকর এই লড়াইয়ের তিনটি গোলই হয় ২৫ মিনিটের মধ্যে। রান্দাল কোলো মুয়ানির গোলে পিছিয়ে পড়া স্পেন সমতায় ফিরে ইয়ামালের গোলে। তাদের জয়সূচক গোলটি করেন দানি ওলমো।

ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক স্পেন। দারুণ ছন্দে থাকা ইয়ামাল পঞ্চম মিনিটে দারুণ এক সুযোগও তৈরি করেন। কিন্তু তার ক্রস ছয় গজ বক্সে পেয়েও হেডে উড়িয়ে মারেন ফাবিয়ান রুইস। এরপরই পাল্টা আক্রমণে স্প্যানিশদের বুকে আঘাত হানে ফরাসিরা। অষ্টম মিনিটে সতীর্থের পাস পেয়ে বঙে থেকে শট নিতে পারতেন এমবাপে। কিন্তু কোনো উচ্চাভিলাষী প্রচেষ্টায় না গিয়ে দূরের পোস্টে দারুণ এক ক্রস বাড়ান তিনি। আর নিখুঁত হেডে গোল করে দলকে এগিয়ে নেন কোলো মুয়ানি। আসরে নিজেদের প্রথম ম্যাচে মাঠে নেমেই ইউরোয় সবচেয়ে কম বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে খেলার ইতিহাস গড়া ইয়ামালের অসাধারণ নৈপুণ্যে ২১ মিনিটে সমতায় ফিরে স্পেন। মোরাতার পাস পেয়ে বঙের অনেকটা বাইরে থেকে জোরালো শট নেন এই কিশোর। বল সামান্য বাঁক খেয়ে পোস্টে লেগে জড়ায় জালে। দলকে সমতায় ফেরানোর স্বস্তি দেওয়ার পাশাপাশি আরেকটি রেকর্ড গড়েন ইয়ামাল। এই প্রথম ১৬ বছর বয়সী কোনো খেলোয়াড় ইউরোয় ােল করার কীর্তি গড়লেন। সেটাও সেমিফাইনালের মঞ্চে। চার মিনিট পর আবারও ফ্রান্সের জালে বল। এবারের গোলদাতা পেদ্রির অনুপস্থিতিতে শুরুর একাদশে সুযোগ পাওয়া ওলমো। ডান দিক থেকে হেসুস নাভাসের শট রক্ষণে প্রতিহত হওয়ার পর বঙেই পেয়ে যান ওলমো। ঠান্ডা মাথায় জোরাল কোনাকুনি শট নেন ওলমো। বল জুল কুন্দের পা ছুঁয়ে জালে জড়ায়। উল্লাসে মাতে স্পেন শিবির। এরপর ম্যাচে ফিরতে জেগে ওঠার চেষ্টা করে ফরাসিরা। সমানতালে উঠতে থাকে পাল্টা আক্রমণে। কিন্তু বিরতির আগে সমতা টানার মতো উল্লেখযোগ্য কিছু করতে পারেনি তারা। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই অনেক বড় বিপদে পড়তে পারতো ফ্রান্স। উড়ে আসা বলের পেছনে একা ছুটে যান নিকো উইলিয়ামস। ওই সময় পোস্ট ছেড়ে অনেকটা বেরিয়ে এসেছিলেন মাইক মিয়াঁ। দ্রুত ছুটে গিয়ে স্লাইড করে প্রতিপক্ষ থেকে বল কেড়ে নেন ফ্রান্স গোলরক্ষক। ৫৬ মিনিটে পাল্টা আক্রমণে বাঁ দিক থেকে বঙে ঢুকে পড়েন এমবাপে। কিন্তু দুরূহ কোণ থেকে প্রতিপক্ষের দুই খেলোয়াড়ের মধ্যে দিয়ে গোলরক্ষক বরাবর শট নিয়ে হতাশ করেন তিনি। চার মিনিট পর অন্যপাশ দিয়ে আক্রমণে ওঠে ফ্রান্স। এবার দেম্বেলের জোরাল শট এক হাত দিয়ে ঠেকিয়ে দেন উনাই সিমন। সময় গড়ানোর সঙ্গে এমবাপেদেম্বেলেরা মরিয়া হয়ে উঠতে থাকেন। কিন্তু ম্যাচে ফিরতে পারছিলনা ফ্রান্স। শেষ পর্যন্ত চোখের জলে ভেসে বিদায় নিতে হয় ফ্রান্সকে। আর চতুর্থ শিরোপার আশায় এখন স্পেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধইউরোতে সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতার রেকর্ড ইয়ামালের
পরবর্তী নিবন্ধপিডিবি হারালো লিটল ব্রাদার্সকে