সম্প্রতি ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৪০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আহত হয়েছেন ৭২ জন। নৌপথে দুর্ঘটনার এ চিত্র নতুন নয়। প্রতিবছর লঞ্চ দুর্ঘটনায় মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ১৯৯১ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ২৯ বছরে ৫৭০টি দুর্ঘটনায় ৩ হাজার ৬৫৪ জন মারা গেছেন। এসব ঘটনায় ৫১৬ জন আহত ও ৪৮৯ জন নিখোঁজ হন। এসব দুর্ঘটনার মধ্যে যাত্রীবাহী নৌযানের সংখ্যা ২৩৬টি। ২০১৯ সালে ২৬টি নৌদুর্ঘটনায় তিনজন মারা গেছেন। ৩৩ জন আহত ও ২০ জন নিখোঁজ হন। বিগত বছরগুলোয় বাংলাদেশের বিভিন্ন নদীতে সংঘটিত নৌদুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবে নৌযানের ত্রুটিপূর্ণ ডিজাইন, ডিজাইন না মেনে নৌযান নির্মাণ, ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত মালপত্র এবং যাত্রী বহন, মাস্টার-সারেংদের অদক্ষতা ও অসতর্কতা, সংঘর্ষ, নদীর নাব্য সংকট, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া, নৌযান মালিকদের দায়িত্বহীনতা এবং নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের অবহেলাকে চিহ্নিত করা হয়।বস্তুত দুর্বল আইন, সুষ্ঠু তদারকির অভাব এবং কতিপয় অসাধু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীর কারসাজিতে বছরের পর বছর ধরে নৌপথে বিদ্যমান অনিয়মের দায় সাধারণ মানুষকে নিজের জীবনের বিনিময়ে শোধ করতে হচ্ছে। মানুষের জীবন-মৃত্যুর প্রশ্ন যেখানে জড়িত, সেখানে কোনো ধরনের গাফিলতি বা অবহেলা যে ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ, তা বলাই বাহুল্য।
এ অবস্থায় প্রচলিত নৌ-পরিবহন আইন যুগোপযোগী করার পাশাপাশি এ খাতে বিদ্যমান সবধরনের অনিয়ম রোধে কালবিলম্ব না করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা এবং নৌরোটে সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
ইমরান হোসাইন
শিক্ষার্থী, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়।