নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য সার্চ কমিটি গঠনের মধ্য দিয়ে নির্বাচনের যাত্রা শুরু হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্কের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে। আজকালের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। নির্বাচন কমিশন গঠন করা হলে ভোটার তালিকা নিয়ে কাজ শুরু করা হবে। নির্বাচন নিয়ে ফলকার টুর্কের সঙ্গে কোনো কথা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে তাদের সঙ্গে কোনো কথা হয়নি। তবে আপনাদেরকে আমি একটা কথা বলতে পারি, সরকারের নির্বাচনমুখী প্রক্রিয়া গ্রহণ করার যে কাজ সেটা শুরু হয়ে গেছে। বলতে পারেন নির্বাচনমুখী যাত্রা শুরু হয়ে গেছে। খবর বাংলানিউজের।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ফলকার টুর্ককে বলেছি, আমাদের আইনগত যে সংস্কার, সেটাতে তারা জড়িত আছেন, প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারে আমাদের যদি ফরেনসিক সহায়তা প্রয়োজন হয়, সেটা তারা দেবেন। আমরা এখানে সুবিচার করব, প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য বিচার করছি না। আগের আদালতে যেভাবে হয়েছে, সেভাবে আমরা অবিচার করব না। আমাদের কোনোকিছু লুকানোর নেই। কীভাবে বিচার করা হচ্ছে যে কেউ এসে সেটা দেখতে পারবেন।
আওয়ামী লীগ ভোটে সুযোগ পাবে? সিদ্ধান্ত বিচারের পর : বিডিনিউজ জানায়, গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ জুলাই গণহত্যার বিচার হওয়ার আগে আর নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কিনা, সে বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন আইন উপদেষ্টা। তিনি বলছেন, রাজনীতিতে এখন এই দলটি কতটুকু গ্রহণযোগ্যতা আছে তা নিয়েও কথা থেকে যায়।
ফলকার টুর্কের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এটা আমার বলার স্টেজ না। যারা হাজার হাজার মানুষ হত্যা করেছে, ৪০ থেকে ৫০ হাজার মানুষকে অঙ্গহানি করেছে এবং এখনও তারা ওটার পক্ষে কথা বলে। তাদের নেত্রীর ২৮৭ জনকে দেখে নেওয়ার রেকর্ডটা যদি কারেক্ট হয়, যে সন্ত্রাসী হুমকি দিচ্ছে অন্য দেশে বসে, যিনি একটা গণহত্যা মামলার আসামি, আমার মনে হয় না বাংলাদেশের মানুষ একসেপ্ট করবে এই দলকে। বিচার প্রক্রিয়ার পরে দেখা যাবে এ বিষয়ে কি পদক্ষেপ নেওয়া যায়।
আসিফ নজরুলের ভাষ্য, তাদের বিচার এবং রিডেম্পশন আমরা যেটাই বলি, এগুলোর আগে তারা পলিটিক্যাল কর্মসূচি চালাবে কি হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করার জন্য? তাদের কথাবার্তা শুনে তো এ রকম মনে হয়। ফলে এগুলো একটা প্রসেসের মধ্য দিয়ে আসবে।
মৃত্যুদণ্ডের বিধান বাতিল করা সম্ভব নয় : দেশে ফৌজদারি আইনে মৃত্যুদণ্ডের যে বিধান রয়েছে তা বাস্তবতার নিরিখে বাতিল করা সম্ভব নয় বলে জাতিসংঘকে জানানোর কথা বলেছেন আইন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এটা নিয়ে উনি (তুর্ক) বেশি প্রশ্ন তুলেছেন। উনি বলেছিলেন যে, মৃত্যুদণ্ড রহিত করার কোনো সুযোগ আছে নাকি। আমি বললাম এটা তো বর্তমান বাস্তবতায় সম্ভব না। কারণ আমাদের পেনাল প্রভিশন; আমাদের শত বছরের যে ক্রিমিনাল জাস্টিস সিস্টেম, যেখানে মৃত্যুদণ্ডের বিধান আছে। এখন আমরা হুট করে যে ফ্যাসিস্টদের হাতে হাজার হাজার তরুণ নিহত হয়েছে, হঠাৎ করে তার বিচারকে সামনে রেখে মৃত্যুদণ্ড বাতিল করার প্রশ্নই আসে না।