সরবরাহ সংকটের অজুহাতে চাক্তাই খাতুনগঞ্জের পাইকারী বাজারে আবারও বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারী ও খুচরা বাজারে দেশিসহ কয়েকটি দেশের পেঁয়াজে দাম বেড়েছে কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত। চাক্তাই–খাতুনগঞ্জের আড়তদাররা বলছেন, সম্প্রতি চট্টগ্রাম, ফেনী–কুমিল্লাসহ দেশের কয়েকটি জেলায় বন্যার কারণে পেঁয়াজের সরবরাহ বিঘ্ন ঘটেছে। এর ফলে চাহিদার তুলনায় পেঁয়াজের ঘাটতি দেখা যায়। এর প্রভাবে বাজারের দাম বেড়ে যায়।
গতকাল চাক্তাই খাতুনগঞ্জের পাইকারী বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ১০৬ টাকা, মিশরের পেঁয়াজ ৮৫ টাকা এবং চীনা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকায়। তবে খুচরা বাজারে সেই পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজিতে ১০ টাকা বেশি। পেঁয়াজের আড়তদাররা বলছেন, চাক্তাই খাতুনগঞ্জের আড়তে ব্যবসায়ীরা কমিশনের ভিত্তিতে পেঁয়াজ বিক্রি করেন।
আমদানিকারকরা যে দরে পেঁয়াজ বিক্রি করতে বলেন, আড়তদাররা সেই দরে পেঁয়াজ বিক্রি করেন। আড়তদারদের পক্ষে পেঁয়াজের কৃত্রিম সংকট তৈরি করা সম্ভব নয়। কিন্তু আমাদের দেশে পেঁয়াজের দর বৃদ্ধির সাথে সাথে প্রশাসনের লোকজন আড়তে অভিযান পরিচালনা করে। এতে আতঙ্ক তৈরি হয়। অথচ আড়তদাররা পেঁয়াজ আমদানি করেন না। সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন জেলার বন্যার কারণে পণ্যের সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। এছাড়া ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানিও কমেছে। তাই দামে প্রভাব পড়েছে।
চাক্তাই আড়তদার ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম দৈনিক আজাদীকে বলেন, এতদিন বাজারে দেশি পেঁয়াজ ছিল না। আশার কথা হচ্ছে, এখন প্রচুর পরিমাণে দেশি পেঁয়াজ আসা শুরু হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য পেঁয়াজের মজুদও পর্যাপ্ত রয়েছে। এ কয়েকদিন বন্যার কারণে পেঁয়াজের সরবরাহ ব্যবস্থা বাঁধাগ্রস্ত হয়, তাই দাম বেড়েছে। তবে সরবরাহ বাড়লে আবার দাম কমে যাবে।
খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস দৈনিক আজাদীকে বলেন, পেঁয়াজের বাজারে এখন কিছুটা সরবরাহ সংকট রয়েছে। সরবরাহ সংকটের কারণে মূলত দাম বাড়ছে। সরবরাহ স্বাভাবিক হলে দাম কমে যাবে।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এসএম নাজের হোসাইন দৈনিক আজাদীকে বলেন, পেঁয়াজ নিয়ে ব্যবসায়ীদের কারসাজি নতুন কিছু নয়। ব্যবসায়ীরা একেক সময় একেক অজুহাতে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি করেন। ব্যবসায়ীরা যেন কোনোভাবে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দামবৃদ্ধি করতে না পারে সে জন্য প্রশাসনকে বাজার মনিটরিং অব্যাহত রাখতে হবে।
