কক্সবাজারের টেকনাফে অপহৃত নয়জন কৃষককে দুইদিন পর ছেড়ে দিয়েছে অপহরণকারী চক্র। গতকাল সোমবার সকালে দুই রোহিঙ্গাসহ অপহৃত নয়জন বাড়ি ফিরেছেন। হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ আনোয়ারী এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অপহৃতদের পরিবারের লোকজনের বরাতে তিনি জানান, জনপ্রতি দেড় লাখ টাকা দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন তারা। তবে পুলিশ দাবি করছে, পুলিশের সক্রিয় অভিযানের মুখে অপহৃত নয় কৃষককে ছেড়ে দিয়েছে অপহরণকারী চক্র। মুক্তিপ্রাপ্তরা হলেন হোয়াইক্যংয়ের নুরুল ইসলামের ছেলে আনোয়ার, বাঁচা মিয়ার ছেলে গিয়াস উদ্দিন, জালাল আহমদের ছেলে বেলাল উদ্দিন, আবুল হোছনের ছেলে আবু বকর, নুরুল আলমের ছেলে মুহাম্মদ আলম, আজিজুর রহমানের ছেলে কফিল ও নুরুল হোছন। তবে দুই রোহিঙ্গার নাম ঠিকানা পাওয়া যায়নি। ইউপি চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ আনোয়ারী জানিয়েছেন, গত শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের কানজরপাড়ার করাচি পাড়া পাহাড়ি এলাকা থেকে ওই কৃষকদের অপহরণ করা হয়। এরপর জনপ্রতি দেড় লাখ টাকা করে সাড়ে ১৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহৃতদের পরিবারে ফোন করা হয়েছিল। এর প্রেক্ষিতে গোপনে মুক্তিপণের টাকা পরিশোধ করার পর এদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানিয়েছেন চেয়ারম্যান। কিন্তু কত টাকা, কীভাবে, কাকে দিয়েছে এটি বলতে রাজী হচ্ছে না অপহৃতদের স্বজনরা।
টেকনাফ মডেল থানার ওসি মো. গিয়াস উদ্দিন অপহৃত নয়জন ছাড়া পাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, অপহরণের পরপরই ঘটনা জানার পর পুলিশ উদ্ধার অভিযান শুরু করে। দুইদিনে পুলিশ পাহাড়ে সক্রিয় অভিযান অব্যাহত রেখেছে। এতে চাপে পড়ে অপহৃদের ছেড়ে দিয়েছে অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা।
তিনি বলেন, আমরা মুক্তিপণ পরিশোধের বিষয়ে অবগত নই। তবে মুক্তিপ্রাপ্ত কৃষকদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে অপহরণকারী চক্রের সদস্যদের শনাক্ত করতে কাজ করছি।
পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের তথ্য মতে, শুধুমাত্র গত একবছরে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ১৪৫ জন লোক অপহরণের শিকার হয়েছেন। এরমধ্যে ৮৮ জন স্থানীয় বাসিন্দা এবং ৫৬ জন রোহিঙ্গা। অপহরণের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ৭৮ জন মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন।