টীম চিটাগংয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

আজাদী অনলাইন | বুধবার , ২৮ এপ্রিল, ২০২১ at ১২:২৩ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামের তরুণদের দক্ষতা উন্নয়ন, দলগতভাবে সুবিধাবঞ্চিতদের জীবনমানের উন্নয়ন এবং একইসাথে চট্টগ্রামকে বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরার লক্ষ্যে ২০১৫ সালের ২৫ এপ্রিল যাত্রা শুরু করেছিলো টীম চিটাগং। নানা কার্যক্রম, সাফল্যকে সাথে নিয়ে ছয় বছরে পদার্পন করলো এ সংগঠনটি। চায়ের আড্ডা থেকে শুরু হওয়া এ সংগঠনটি বিগত বছরগুলোয় নিজেকে পরিণত করেছে চট্টগ্রামের তরুণদের আস্থার জায়গায়। ২০১৫ সালে এক আড্ডায় নিজের স্বপ্ন ও পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে এ সংগঠনটির জন্ম দেন ইমতিয়াজ উদ্দীন জিহাদ নামের এক স্বপ্নবাজ তরুণ। এরপর বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়া সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে।

তাদের চিন্তা ছিলো কিভাবে চট্টগ্রাম শহরের তরুণদের কীভাবে আরো দক্ষ ও সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে সাহায্য করা যায়, বিশ্বমঞ্চে প্রতিনিধিত্ব করতে পারবে এমন ব্যক্তিত্ব গড়ে তোলা যায়। এই প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে এ শহরের তরুণরা যাতে নিজের অবস্থানকে টিকিয়ে রাখতে পারে, সে লক্ষ্যেই মূলত এই উদ্যোগ।

শুরুর পথটি সহজ না হলেও স্বল্প সময়ে টীম চিটাগাং তরুণদের কাছে জনপ্রিয়তা পায়। শুরুর দিকেই টীম চিটাগাং দক্ষতা উন্নয়ন নিয়ে ওয়ার্কশপসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তরুণদের নিজ নিজ দক্ষতা উন্নয়নে সাহায্য করেছে। তারই প্রেক্ষিতে এই প্রতিষ্ঠানের অনেক তরুণ নিজেদের দক্ষতাকে আরো পরিপক্ব করে বিভিন্নভাবে দেশের সেবা করে যাচ্ছে। শূন্য থেকে বর্তমানে এ সংগঠটির সদস্য সংখ্যা ৪শতাধিক। এখানে প্রত্যেক সদস্যকে ক্যাপ্টেন হিসেবে ডাকা হয়।

টীম চিটাগং-এর বেশ কিছু প্রোগ্রাম রয়েছে, যেমন একটি প্রোগ্রামের নাম ‘স্কুল অব ফোর এস’, এই প্রোগ্রামেটি ডিজাইন করা হয়েছে ৬ষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য। এ প্রোগ্রামের মাধ্যমে তাদের দেশের বাইরে পড়ালেখার সাধারণ ধারণা দেয়া থেকে শুরু করে কম্পিউটার প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন সফট স্কিলে দক্ষ করে তোলা হয়। ‘একসেস টু ফিউচার’ প্রোগ্রামের মাধ্যমে তরুণদের কর্মজীবনে প্রবেশের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় দক্ষতা দেয়া হয়। এ প্রোগ্রামে দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফল ব্যক্তিত্বরা দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য ও পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এছাড়া ‘ব্লাড ফর লাইফ’ ‘ঈদ ফর অল’ এসব প্রোগ্রামের মাধ্যমে ক্যাপ্টেনদের মাঝে সামাজিক দায়বদ্ধতা ও মানবিকবোধ গড়ে তোলা হয়। এ সংগঠনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রোগ্রাম হলো ‘প্রজেক্ট স্বাবলম্বীকরণ’। এর মাধ্যমে অস্বচ্ছল পরিবাকে স্বাবলম্বী করে তুলতে উপার্জনের বন্দোবস্ত, যেমন রিক্সা, সেলাই মেশিন প্রদান বা ছোট দোকান গড়ে দেয়া হয়। এবং পরবর্তী দুই বছর পরিবারগুলোকে সংগঠনের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়, যাতে এর মাঝে তাদের কোনো সমস্যায় সাহায্য করা যায়।
সংগঠনটির স্বপ্নদ্রষ্টা, সভাপতি ইমতিয়াজ উদ্দীন জিহাদ বলেন, আমরা কতটুকু সফল তা
এখনো ভেবে দেখার সময় হয়নি। তবে আমরা মনে করি যে লক্ষ্যে আমাদের যাত্রা, তাতে কিছুটা হলেও স্বার্থকতা অর্জন করতে পেরেছি এ ৫ বছরে। আমাদের ক্যাপ্টেনদের মধ্যে গ্রাজুয়েশন শেষ করেছে এমন একজনও আজ বেকার নেই। প্রত্যেকে ভালো ভালো প্রতিষ্ঠানে কাজ করছে। এই কঠিন চাকরির বাজারে এটাই আমাদের স্বার্থকতা। এছাড়া আমরা তিনটা পরিবারকে ৩টা রিক্সা দিয়েছিলাম এবং পরবর্তী এক বছর নিজেদের তত্ত্বাবধানে রেখে বিভিন্ন সমস্যায় সাহায্য করেছি। পরিবারগুলো এখন স্বচ্ছল জীবনযাপন করছে, এখানেই আমাদের সাফল্য।

তিনি আরো বলেন, আমরা চট্টগ্রামের তরুণদের নিয়ে কাজ করছি। আশা করি ভবিষ্যতে আমাদের এ কাজ পুরো বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়বে। আমাদের স্বপ্ন, বাংলাদেশে অদক্ষ তরুণের সংখ্যা শূনে্যং নেমে আসবে এবং একটি স্বাবলম্বী বাংলাদেশ তৈরি হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমামুনুলের ব্যাংক একাউন্টে ৬ কোটি টাকা লেনদেনের তথ্য পেয়েছে পুলিশ
পরবর্তী নিবন্ধখালেদা হাসপাতালে