জমে উঠেছে বিজয় মেলা দর্শনার্থীদের ভিড়

ইমাম ইমু | শুক্রবার , ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ at ৯:০৯ পূর্বাহ্ণ

নগরে শীতের তীব্রতা বাড়তে শুরু করেছে। এর মধ্যে নগরের সার্কিট হাউজের পাশে জিয়া স্মৃতি জাদুঘরের সামনে খোলা জায়গায় বসেছে বিজয় মেলা। গতকাল ছিল মেলার দ্বিতীয়দিন। মেলা চলবে আগামী ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এর মধ্যে জমে উঠেছে বিজয় মেলা। গতকাল সন্ধ্যার পর সরেজমিনে দেখা গেছে মেলায় দশনার্থীদের প্রচুর ভিড়। কাজীর দেউড়ি পেরিয়ে সামনে যেতেই লোক সমাগমের উপস্থিতি দেখা যায়। স্টলে স্টলে পসরা সাজানো নানা বই, মাটির জিনিস, নারীদের বিভিন্ন অলংকারসহ দেশীয় পণ্য। রয়েছে নার্সারি, রেস্টুরেন্ট, বিনোদনমূলক ও অন্যান্য ধরনের স্টল। শিশু থেকে বৃদ্ধ সব বয়সের মানুষ মেলায় এসেছেন। কেউ এসেছেন বাবামায়ের হাত ধরে কেউ প্রিয় মানুষের। সবাই ঘুরে দেখছেন মেলা এবং স্টলে সাজানো নানান পণ্য। পছন্দ হলে কিনছেন সেসব পণ্য। শতাধিক স্টল তৈরি হয়েছে বিজয় মেলায়। বেশিরভাগ স্টলে পণ্যের পসরা সাজিয়েছেন দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। অনেক তরুণ শখের বশে দোকান দিয়েছেন মেলায়। আর বেশি স্টল নারীদের নানা জুয়েলারি নিয়ে। এসব দোকানে ভিড়ও বেশি লক্ষ্য করা গেছে। গত বুধবার বিজয়ের মাস উপলক্ষ্যে চট্টগ্রাম নগরে শুরু হয় ছয় দিনের বিজয় মেলা। ঘোষণাপত্র পাঠের মাধ্যমে এ মেলার উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. জিয়া উদ্দিন। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এবং বিজয় মেলা উদযাপন পরিষদের সহযোগিতায় বিজয়ের ৫৩ বছর পূর্তিতে অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ বিনির্মাণে বিজয় মেলার আয়োজন করা হচ্ছে। এই মেলায় সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ও বিজয়ের কথামালার আয়োজন করা হচ্ছে। প্রতিদিন অনুষ্ঠিত হচ্ছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে ৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ, ৯০ এর গণঅভ্যুত্থান ও ২৪ এর ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানের মূল্যবোধকে সামনে রেখে দলীয় সংগীত, একক সংগীত, নাচ, আবৃত্তি পরিবেশন করছেন সংস্কৃতিকর্মী ও শিল্পীরা। বিজয় মেলার অংশ হিসেবে আজ শুক্রবার বেলা ১১টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে শিশুদের জন্য চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে।

মেলা ঘুরে দেখা যায়, মৃৎশিল্প সামগ্রীর স্টলে নানা বয়সী মানুষের ভীড়। মাটির তৈরি পণ্যের প্রতি এখনো কদর রয়েছে সব বয়সী মানুষের। মেলায় মেয়েদের বাহারি ওড়না, প্লাস্টিকের খেলনা ও হাত ব্যাগসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী বিক্রি হচ্ছে। টক ঝাল মিষ্টি স্বাদের আচারপ্রেমীদের জন্য রয়েছে বাহারি রকমের আচার। মুড়ি, মুড়কি, তিলের খাজা, গজা, বাতাসা, চানাচুর, বাদামভাজা, চটপটি, ফুচকা ইত্যাদি মুখরোচক খাবারের স্টল রয়েছে অনেকগুলো। রয়েছে বিখ্যাত বগুড়ার দই। যে যার পছন্দের খাবার আর পণ্য কিনতে ভীড় করছেন স্টলে স্টলে। মেলায় ঘুরে দর্শনার্থী এবং বিভিন্ন স্টল মালিকের সাথে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। আগ্রাবাদ থেকে আসা ফারজানা আক্তার জানান, তার স্বামীর সাথে মেলায় এসেছেন। এর আগেও বিজয় মেলায় এসেছিলেন তিনি। মেলায় বিভিন্ন ধরনের জিনিস পাওয়া যায় যেটা সব সবসময় পাওয়া যায় না। আর অনেক পণ্য কম মূল্যে পাওয়া যায়। তিনি জানান, জব্বারের বলীখেলার মেলা আর বিজয় মেলা চট্টগ্রামের ঐতিহ্য। সারা দেশের কুটির শিল্প, গৃহস্থালি সামগ্রী এসব মেলায় পাওয়া যায়। সালাউদ্দিন নামে একজন বলেন, বিজয় মেলায় আসার অন্যরকম একটা অনুভূতি রয়েছে। স্টল মালিক ইকবাল হোসেন বলেন, মেলা অল্প ক’দিনের। এর মধ্যে যা বিক্রি হয়। ইতোমধ্যে মানুষের ভীড় হচ্ছে। গ্রাহক আসতেছে স্টলে, বিক্রিও আশানুরূপ হচ্ছে। বিক্রি আরও বাড়বে আশা করি।

বিজয় মেলা উদযাপন পরিষদের সদস্যসচিব আহমেদ নেওয়াজ বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা ফারুকআজম বীরপ্রতীকের ইচ্ছায় এবারের মেলার আয়োজন। সরকার এ মেলা আয়োজনে আমাদের অনেক সহযোগিতা করেছে। এটা সবার মেলা, জনগণের মেলা। বায়ান্ন, ঊনসত্তর, একাত্তর, নব্বই, চব্বিশে কী হয়েছিল সেই বিষয়গুলো প্রজন্মকে জানানোর জন্য এ মেলার আয়োজন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহত্যার পর স্কুলব্যাগে পাথর ভরে ডোবায় ফেলা হয় স্কুলছাত্রের লাশ
পরবর্তী নিবন্ধলোহাগাড়ায় লুণ্ঠিত স্বর্ণালঙ্কার ও টাকা উদ্ধার, গ্রেপ্তার এক