ইয়াবা বিক্রি ও সেবন করতে বাধা দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে কথা কাটাকাটির জের ধরে সাতকানিয়ায় ছদাহা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারন সম্পাদক শাহাদাত হোসেনকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছে এক মাদক কারবারি। এসময় নিহতের ভাই ছদাহা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন এগিয়ে আসলে তাঁর বুকে ও পেটে ছুরিকাঘাত করে গুরুতর সহ তাদের অপর সহোদর শাহ নেওয়াজও আহত হয়।
মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) রাত আনুমানিক সাড়ে দশটার সময় উপজেলার ছদাহা ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের মিঠাদিঘী এলাকার এ ঘটনা ঘটেছে। ছুরিকাঘাতে নিহত শাহাদাত হোসেন (৩৩), আহত আনোয়ার হোসেন (৩৮) এবং তাদের অপর আরেক সহোদর শাহ নেওয়াজ (২৫) একই এলাকার রোয়াজির পাড়ার মৃত মোহাম্মদ ইউনুচের ছেলে।
ঘটনার সাথে সাথেই হত্যাকারী ছদাহা ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের রোয়াজির পাড়া এলাকার মোঃ ইসমাইলের পুত্র মাদক ব্যাবসায়ী মোঃ তারেককে স্থানীয়রা আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। ছদাহা ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি আবদুর রহিম জয় দৈনিক আজাদীকে জানান, ঘাতক মোঃ তারেক ইয়াবা বিক্রেতাও সেবনকারী। তাঁর বিরুদ্ধে সাতকানিয়া থানায় অনেক মামলা আছে।
ইয়াবা বিক্রি ও সেবন করতে বাধা দেওয়ার কারণে সোমবার (২০ নভেম্বর) রাতে নিহতের চাচা আবু তালেবকে মারধর করে তারেক ও এলাহী। মঙ্গলবার রাতে তারেককে দেখা পেয়ে চাচাকে কেন মারধর করা হয়েছে জানতে চাইলে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে তারেক শাহাদাতকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করতে থাকে। এসময় শাহাদাতের ভাই আনোয়ার হোসেন এগিয়ে আসলে তাঁর বুকে ও পেটে ছুরিকাঘাত করা হয়। ভাইদের বাঁচাতে গিয়ে তাঁদের আরেক সহোদর শাহ নেওয়াজ আহত হয়।
গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের প্রথমে উপজেলার কেরানীহাটের একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শাহাদাতকে মৃত ঘোষণা করেন এবং আহত আনোয়ার হোসেনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে প্রেরণ করেন। তাদের আরেক সহোদর শাহ নেওয়াজ সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছে।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি ও সাতকানিয়া পৌর মেয়র মোহাম্মদ জোবায়ের দৈনিক আজাদীকে বলেন, হত্যাকারী মোঃ তারেক একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। সে বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল। এই নৃশংস হত্যাকান্ডের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং সর্বোচ্চ শাস্তির দাবী জানাচ্ছি। পাশাপাশি এসব মাদক ব্যাবসায়ীদের গডফাদারদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবী জানাচ্ছি।
সাতকানিয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রিটন সরকার দৈনিক আজাদীকে বলেন, প্রতিবেশী তারেক ও এলাহীর সঙ্গে আগে থেকেই বিরোধ চলে আসছিল। ঘটনার দিন কাটাকাটির জের ধরে তারেক এর ছুরিকাঘাতে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা শাহাদাত হোসেন এর মৃত্যু হয়েছে। এসময় ভাইকে বাঁচাতে গিয়ে অপর সহোদর ২ ভাই আনোয়ার হোসেন ও শাহ নেওয়াজ আহত হয়। গুরুতর আহত আনোয়ার হোসেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। ঘাতক মোঃ তারেককে গ্রেফতার করা হয়েছে সে পুলিশ হেফাজতে উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছে। এব্যাপারে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এদিকে ছদাহা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারন সম্পাদক শাহাদাত হোসেনের হত্যাকান্ডের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও গভীর শোক জানিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি এম এ মোতালেব সিআইপি, সাধারণ সম্পাদক কুতুবউদ্দিন চৌধুরী, সাতকানিয়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি সাইফুল ইসলাম সুমন, সাধারণ সম্পাদক নবাব মিয়া রকিব। তাঁরা নিহতের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।