আমাদের দেশে সাধারণত বৈশাখ-জৈষ্ঠ্য মাসে মৌসুমী আমের ফলন হয়। তাই ওই সময়টা মধু মাস হিসাবে পরিচিত। প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় এই স্বাভাবিক নিয়ম এখন বদলে যেতে শুরু করেছে। কৃষি বিজ্ঞানীদের সফল গবেষণায় বর্তমানে ফল ও সবজির উৎপাদন আর মৌসুমের জন্য হাটহাজারী অপেক্ষা করে না। এখন দেশে আগাম ফল ও সবজির ফলন উৎপাদন শুরু হয়েছে। তারই প্রকৃষ্ট উদাহরণ হাটহাজারী উপজেলায় আগাম আম উৎপাদন। উপজেলা কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তরের পরামর্শ এবং সহযোগিতায় আগাম আম উৎপাদন করে চমক সৃষ্টি করেছেন হাসান ফারুকী নামে এক খামারি। কাটিমন জাতের এই আম এখন তার খামারে পরিপুষ্ট হচ্ছে। প্রত্যেক গাছে এই আম ধরে ঝুলে রয়েছে। পোকা মাকড়ের আক্রমণ থেকে আম রক্ষায় প্রত্যেকটি আমে ব্যাগিং করা হয়েছে। একেকটি গাছে ৫ থেকে ৭ কেজি আম ধরে ঝুলে রয়েছে।
খামারি হাসান ফারুকী বলেন, আনুমানিক দশ একর জায়গা রয়েছে হাটহাজারী উপজেলার উদালিয়া এলাকায়। এসব জায়গায় এক সময় বনজ গাছ ছিল। উপজেলা কৃষি অফিসার আল মামুন সিকদারের সাথে পরিচয় হওয়ার পর জায়গার বিষয় নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি জায়গা দেখতে আগ্রহ প্রকাশ করে। তিনি কৃষি অফিসারকে জায়গা দেখানোর পর এই জায়গায় ফলদ বাগান করার পরামর্শ দেন। আর বাগান করলে উপজেলা কৃষি বিভাগ তাকে সার্বিক সহযোগিতা করার বিষয় নিশ্চিত করেন। উপজেলা কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় এবং এই বিভাগের কাটিমন আমের চারা, মাল্টা, বিভিন্ন জাতের কুল, পেঁপে, ড্রাগন, কাগজী লেবুসহ নানা জাতের ফলদ গাছ ছাড়াও বরবটি, লাউ, বেগুন, তরমুজ, টমেটো, তিত করলা, শশা, বিভিন্ন জাতের সবজির আবাদ শুরু করেন তিনি। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক, বিষমুক্ত এবং হাইজেনিক উপায়ে খামারের কাজ শুরু করেন। এবার গাছে যে পরিমাণ আম রয়েছে এতে তিনি বেশ খুশি। বিক্রি ভালো হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
কাটিমন থাইল্যান্ডের আমের একটি জাত। কাটিমনের পাশাপাশি তার বাগানে দেশি ‘বারি-১১’ জাতের আমও রয়েছে। শীত মৌসুম থেকে এই খামারি আম বিক্রি শুরু করেছে। তার বাগানে প্রায় হাজারখানেক আমগাছ আছে। এসব গাছ থেকে আনুমানিক দুই থেকে আড়াই লাখ টাকার আম বিক্রি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার আল মামুন সিকদার জানান, ফারুকের জমিতে একসময় বনজ গাছ ছিল। তার সাথে পরিচয় হওয়ার পর তাকে কাটিমন জাতের আমের বাগান করার পরামর্শ প্রদান করি। রাসায়নিক সার বাদ দিয়ে জৈব বালাইনাশক ব্যবহার, মালচিং পদ্ধতিতে বাগান করা হলে সেচের পরিমাণ কম লাগবে।