এবারের বিশ্বকাপের সবচাইতে বড় চমকের নাম মরক্কো। একেকটি সাফল্য খুলে দেয় নতুন স্বপ্নের দুয়ার। মরক্কোর জন্য এখন বিষয়টি ঠিক এমনই। কাতার বিশ্বকাপে অবিশ্বাস্য পথচলায় প্রথম আফ্রিকান দল হিসেবে সেমিফাইনালে খেলা। চতুর্থ হয়ে আসর শেষ করার পর দলটির কোচ ওয়ালিদ রেগরাগি দেখছেন আরও বড় স্বপ্ন। এবারের অর্জন ছাপিয়ে একদিন বিশ্বকাপ জয়ের লক্ষ্য স্থির করে ফেলেছেন তারা।
এর আগে পাঁচবার বিশ্বকাপে অংশ নিয়ে একবার কেবল শেষ ষোলো পর্যন্ত যেতে পেরেছিল মরক্কো। সেটিও ১৯৮৬ সালে। ফলে কাতার আসর শুরুর আগে দলটিকে নিয়ে কোনো মাতামাতি ছিল না। তা ছাড়া গ্রুপে ছিল বেলজিয়াম ও ক্রোয়েশিয়ার মতো দুই পরাশক্তি। তবে সবাইকে চমকে দিয়ে অপরাজিত থেকে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয় উত্তর আফ্রিকার দেশটি। দ্বিতীয় ম্যাচে বেলজিয়ামকে হারায় ২-০ গোলে।
শেষ ষোলোয় মরক্কোর সামনে ছিল আরও বড় পরীক্ষা। তবে সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন স্পেনকে টাইব্রেকারে হারিয়ে চমক অব্যাহত রাখে তারা।
এরপর পর্তুগালকে হারিয়ে রচনা করে নতুন ইতিহাস। শেষ চারে অবশ্য ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের কাছে ২-০ গোলে হেরে যায় দলটি। আর গত শনিবার তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচ ক্রোয়েশিয়ার কাছে ২-১ গোলে হেরে চতুর্থ হয়ে বিদায় নেয় তারা। ম্যাচের পর নিজেদের অর্জন নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন রেগরাগি। বিশ্বের যেকোনো দলের সঙ্গেই সমানে সমান লড়াই করার সামর্থ্য মরক্কোর আছে বলে মনে করেন ৪৭ বছর বয়সী কোচ। তিনি বলেন আমরা ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে দুবার খেলেছি।
যারা বিশ্বের সেরা তিন দলের একটি। আমরা স্পেন, পর্তুগাল, ফ্রান্স, বেলজিয়াম ও কানাডার বিপক্ষে খেলেছি, এটি চমৎকার। আমরা আমাদের ভক্তদের আনন্দ দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমরা এখনও খুশি। আমরা বিশ্বের সেরা চারটি দলের মধ্যে আছি। আমাদের লক্ষ্য একদিন বিশ্বকাপ জেতা। মরক্কো দেখিয়েছে যে, আমরা এই দলগুলোর সঙ্গে চোখে চোখ রেখে লড়াই করতে পারি। আমরা সম্মান পাওয়ার যোগ্য। ছেলেরা শেষ অবধি লড়াই করেছে। লড়াকু মানসিকতা দেখিয়েছে। এটাই ফুটবল। কিছু দেশ আমাদের চেয়ে শক্তিশালী। সেমিফাইনালে ফ্রান্স ছিল আর তৃতীয় স্থান নির্ধারনী ম্যাচে ক্রোয়েশিয়া ছিল। তবে তারা কেবল সামান্য শক্তিশালী ছিল। মরক্কোর এমন সাফল্য আফ্রিকার অন্য দলগুলোরও বিশ্বাস বাড়িয়ে দেবে বলে মনে করেন রেগরাগি।
আমরা আমাদের সামর্থ্য দেখিয়েছি। আমরা দেখিয়েছি যে, আফ্রিকান ফুটবল দক্ষতার সঙ্গে সর্বোচ্চ স্তরে খেলার এবং বিশ্বের শীর্ষ দলগুলোর মুখোমুখি হতে প্রস্তুত। আমি নিশ্চিত ১৫ বছরের মধ্যে একটি আফ্রিকান দল বিশ্বকাপ জিতবে।