চট্টগ্রামে ১৬ লাখ ৩২ হাজার শিশুকে টাইফয়েড টিকা প্রদানে লক্ষ্যমাত্রা

রেজিস্ট্রেশন করতে না পারলে দেয়া হবে টিকা সংবাদ সম্মেলনে সিভিল সার্জন

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ১০ অক্টোবর, ২০২৫ at ৬:২৯ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামে জেলায় ১৬ লাখ ৩২ হাজার ৪১ জন শিশুকে টাইফয়েড টিকা প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম। এর মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১১ লাখ ৩৪ হাজার ৭১ জন এবং কমিউনিটিতে ৪ লাখ ৯৭ হাজার ৯৭০ জন। গতকাল সকালে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে, আগামী ১২ থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ১০ কর্মদিবস শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও স্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রগুলোতে এবং ১ থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত ৮ কর্মদিবস স্থায়ী ও অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রগুলোতে টিকা দেয়া হবে। এই টিকা পেতে জন্ম নিবন্ধন সনদের তথ্য (১৭ ডিজিট) দিয়ে ওয়েব সাইটে নিবন্ধন করতে হবে। তবে এ বয়সী কেউ কোন কারণে রেজিস্ট্রেশন করতে না পারলে তাকেও টিসিভি টিকা দেয়া হবে। চট্টগ্রাম জেলা পর্যায়ে এবার স্কুল ও মাদ্রাসাসহ মোট ৬ হাজার ৫৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং কমিউনিটি পর্যায়ে সর্বমোট ১৬ লাখ ৩২ হাজার ৪১ জন শিশুকে টাইফয়েড টিকা প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

তন্মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১১ লাখ ৩৪ হাজার ৭১ জন ও কমিউনিটিতে ৪ লাখ ৯৭ হাজার ৯৭০ জন। এছাড়া ক্যাম্পেইনে ভ্রাম্যমাণ হিসেবে মপআপ টিম নিয়োজিত থাকবে। টাইফয়েড টিকা প্রদান ক্যাম্পেইন সফল করতে সর্বত্র প্রচার প্রচারণা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি যে কোন ধরণের গুজব রোধে প্রশাসন সতর্ক রয়েছে। এ টিকা নিতে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ৯ লাখ ৯২ হাজার ৮১ জন শিশু অনলাইন রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেছে, যাহার হার ৬১ শতাংশ এবং রাউজানে ৭৬ শতাংশ। শুক্রবার ও সরকারি ছুটি ব্যতীত নির্ধারিত তারিখে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত সময়ে ১ ডোজ করে টাইফয়েড ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে সিভিল সার্জন আরও জানান, জেলার ১৫ উপজেলার ২০০ ইউনিয়নের ৬০০ ওয়ার্ডে ১ হাজার ২১৫ জন প্রশিক্ষিত কর্মী, ১ হাজার ৮০০ জন স্বেচ্ছাসেবক, ৬০০ জন প্রথম সারির পরিদর্শক এবং ৬০ জন দ্বিতীয় সারির পরিদর্শক টিকাদান ক্যাম্পেইনে নিয়োজিত থাকবেন।

সংবাদ সম্মেলনে ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. তৌহিদুল আনোয়ার, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের এমওডিসি ডা. মো. নুরুল হায়দার, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এসআইএমও ডা. এফ.এম. জাহিদুল ইসলাম এবং কর্ণফুলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙের মেডিকেল অফিসার ডা. শাহাদাত হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, টাইফয়েড জ্বর একটি প্রতিরোধযোগ্য সংক্রামক রোগ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০১৯ সালের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর বিশ্বে প্রায় ৯০ লাখ মানুষ টাইফয়েডে আক্রান্ত হন এবং এর মধ্যে প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার জন মৃত্যুবরণ করেন। আক্রান্ত ও মৃত্যুবরণকারীদের অধিকাংশই দক্ষিণ এশিয়া ও সাবসাহারান আফ্রিকায় বসবাসকারী। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, বিশ্বের উন্নত দেশসমূহে এই রোগের প্রাদুর্ভাব অনেকাংশে কম হলেও বাংলাদেশসহ অনেক উন্নয়নশীল দেশে এটি অন্যতম জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে রয়ে গেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধটাইফয়েডের টিকা নিয়ে ভয়ের কিছু নেই
পরবর্তী নিবন্ধইসরায়েলের কারাগারে শহিদুল আলমসহ আটক অধিকারকর্মীরা