টেস্ট ক্রিকেটে গড়ে উঠছে না স্থায়ী উদ্বোধনী জুটি

ক্রীড়া প্রতিবেদক | রবিবার , ২৯ জুন, ২০২৫ at ৯:৫৪ পূর্বাহ্ণ

টেস্ট ক্রিকেটে ইনিংস সূচনা করার কাজ সবসময়ই কঠিন। এই সময়ে বিশ্বের বেশি ভাগ দলই ওপেনিং নিয়ে ভুগছে। তবে বাংলাদেশের জন্য সমস্যাটা আরও বেশি গভীর। বছরের পর বছর ধরেই নতুন বল সামলানোর দায়িত্বটা পালন করতে পারছেন না কেউই। তামিম ইকবাল ছাড়া উল্লেখযোগ্য মানের আর কোনো ওপেনার ২৫ বছরে পায়নি বাংলাদেশ। তামিম টেস্ট ক্রিকেট থেকে ক্রমাগত দূরে সরে যাওয়ার পর ওপেনিংয়ে দলের ভোগান্তিই কেবল দীর্ঘায়িত হয়েছে। সামপ্রতিক সময়ে একটা প্রান্তে কিছুটা আশার আলো দেখাচ্ছেন সাদমান ইসলাম। গত ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ফিফটি করেছেন। পরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করেছেন সেঞ্চুরি। এই শ্রীলঙ্কা সিরিজেও কিছু রানের দেখা পেয়েছেন বাঁহাতি ওপেনার। কিন্তু অন্য প্রান্ত থেকে কিছুই পাচ্ছে না বাংলাদেশ। দুই বছর ধরে ধারাবাহিক ব্যর্থতার পর ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ে সিরিজের দল থেকে বাদ পড়েন জাকির হাসান। তার জায়গায় প্রায় আড়াই বছর পর ফেরানো হয় এনামুলকে।

চলতি শ্রীলঙ্কা সফরের আগে মাহমুদুল হাসান জয়ও জায়গা হারালে, সাদমানের একমাত্র সঙ্গী হিসেবে থেকে যান ৩২ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান। জাতীয় ক্রিকেট লিগের সবশেষ আসরে ৭০০ রান করে দলে জায়গা ফিরে পাওয়া এনামুলকে সুযোগ দেওয়া হয় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্ট ও শ্রীলঙ্কা সফরের দুই ম্যাচেই। কিন্তু একটিতেও ঘরোয়া পারফরম্যান্সের পুনরাবৃত্তি তিনি করতে পারেননি। পাঁচ ইনিংসে ১২.৪০ গড়ে তার সংগ্রহ মোটে ৬২ রান।

তিন ম্যাচ বা পাঁচ ইনিংসেই কাউকে বাদ দেওয়ার জন্য হয়তো যথেষ্ট নয়। কিন্তু এনামুল টেস্ট ক্রিকেটে ব্যর্থ হয়েছেন আগেও। রান না পাওয়ার চেয়েও দৃষ্টিকটূ ক্রিজে তার উপস্থিতি। কোনো ইনিংসেই খুব স্বস্তিতে খেলতে পারেননি। কলম্বো টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংস ছাড়া বাকি ইনিংসগুলোয় তিনি যতক্ষণ ব্যাটিং করেছেন, মনে হয়েছে প্রতি বলেই হয়তো বেজে যাবে বিদায়ঘণ্টা। তামিম ইকবালের অনুপস্থিতিতে টেস্ট দলে নিয়মিত হয়ে উঠেছিলেন জাকির ও জয়। তাদের সঙ্গে ছিলেন সাদমান। গত দুই বছরের বেশি সময়ে এই তিনজনই ঘুরেফিরে বিভিন্ন ম্যাচে ইনিংস শুরু করেছেন। তিন জনের কেউই খুব ভালো করতে পারেননি।

এদের মধ্যে জয় ও জাকিরের অবস্থা বেশিই নাজুক। টানা সবশেষ ১৭ ইনিংসে ফিফটি নেই জয়ের। জাকির সবশেষ ১৩ ইনিংসে পঞ্চাশ ছুঁতে পারেননি। জয়জাকিরের জায়গায় সুযোগ পাওয়া এনামুলও ব্যর্থ হওয়ার পর সম্ভাব্য বিকল্প হিসেবে তানজিদ হাসানকে ভাবা হচ্ছে। তানজিদকে সুযোগ দিলে ব্যাটিং অর্ডারের প্রথম চার ব্যাটসম্যানের সবাই হয়ে যাবে বাঁহাতি। তানজিদের প্রথম শ্রেণির পরিসংখ্যান কিন্তু খারাপ নয়। যারা স্ট্রোক খেলতে পারে তারা সহজে রান বের করে নিতে পারে। যারা স্ট্রোক খেলতে পছন্দ করে টেস্ট ক্রিকেটে তাদের জন্য রান করার সম্ভাবনাটা বেশি। এটি তার জন্য বাড়তি সুবিধা হতে পারে। দবে কোচ হান্নান সরকারের ভাবনা অবশ্য কিছুটা ভিন্ন। তানজিদ বা নতুন কাউকে সরাসরি টেস্টে সুযোগ না দিয়ে ‘এ’ দলের খেলায় পারফর্ম করে আসার কথা বললেন তিনি। ওপেনিংয়ে সমস্যার সমাধান একটাই, ওপেনারদের ভালো খেলতে হবে। ওপেনাররা ভালোটা খেলবে কোথায়? ভালো খেলতে হবে ‘এ’ দলের যত খেলা আছে সেখানে তো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের একটা স্বাদ থাকে। ‘এ’ দলে যারা ভালো খেলবে, সেখান থেকে ওপেনিংয়ে সুযোগ পাবে। এটাই সমাধান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাঙ্গামাটি আন্তর্জাতিক রেটিং দাবা টুর্নামেন্ট ৫ম রাউন্ড শেষে রাসেদুল একক ভাবে শীর্ষে
পরবর্তী নিবন্ধটেস্ট ক্রিকেটের অধিনায়কত্ব ছাড়লেন শান্ত