কর্ণফুলী পেপার মিল সচল রেখে নতুন কারখানা করার চিন্তা করছে সরকার

কেপিএম পরিদর্শনে শিল্প উপদেষ্টা

কাপ্তাই প্রতিনিধি | শনিবার , ২৮ জুন, ২০২৫ at ১১:২২ পূর্বাহ্ণ

ছোটবেলা থেকে আমরা কর্ণফুলী পেপার মিলের নাম শুনে আসছি। এই মিলের কাগজ দিয়ে স্কুল জীবনে লেখাপড়া করেছি। বয়সের ভারে বর্তমানে কেপিএম জরাজীর্ণ হয়ে আছে। এই জরাজীর্ণ অবস্থাতেও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ কেপিএমের উৎপাদন সচল রেখেছেন তা অবশ্যই প্রশংসনীয়। বর্তমানে জীর্ণশীর্ণ হয়ে গেলেও এই অবস্থায় কেপিএম সচল রেখে এখানে নতুন কারখানা বসানোর চিন্তা করতে হবে। এবং কর্ণফুলী পেপার মিলকে নিয়ে আমরা সেভাবেই কাজ করে যাচ্ছি। গতকাল শুক্রবার চন্দ্রঘোনায় অবস্থিত কর্ণফুলী পেপার মিল পরিদর্শনে গিয়ে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের সাথে কেপিএম অতিথি ভবনে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় উল্লেখিত বক্তব্য রাখেন অন্তবর্তীকালীন সরকারের শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। এ সময় কেপিএমের সার্বিক অবস্থা তুলে ধরেন কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শহীদ উল্লাহ্‌।

মতবিনিময় সভায় শিল্প উপদেষ্টা বলেন, কর্ণফুলী পেপার মিলের সার্বিক বিষয় সম্পর্কে উপদেষ্টা পরিষদ অবগত আছেন। কেপিএমের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ চন্দ্রঘোনায় ৬টি কারখানা স্থাপন বিষয়ে আরো আগেই প্রস্তাবনা দিয়েছেন। সেই প্রস্তাবনাকে আরো রিভিউ করা দরকার বলে আমরা মনে করছি। রিভিউ শেষে কর্ণফুলী পেপার মিলের বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসবে বলেও তিনি জানান। বর্তমানে কেপিএমের স্থাপনাসমূহের সাথে সাথে এর মেশিনারিজগুলোও প্রায় অকার্যকর অবস্থায় এসে পৌঁছেছে। নানাবিধ প্রতিকূলতা থাকা সত্ত্বেও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এবং শ্রমিক কর্মচারী ও কর্মকর্তারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে কেপিএমের উৎপাদন সচল রেখেছেন। ঐতিহ্যের সাক্ষী কেপিএম যাতে আরো দীর্ঘ সময় ধরে কাগজ উৎপাদন করে দেশ ও জাতির প্রয়োজনে ভূমিকা রাখতে পারে সরকারের সেই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি জানান।

এ সময় উপদেষ্টার সাথে উপস্থিত ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব ওবায়দুর রহমান, বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান মো. ফজলুর রহমান, কেপিএমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহীদ উল্লাহ্‌, রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ মারুফ, জেলা পুলিশ সুপার ড. এস এম ফরহাদ হোসেন, কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রুহুল আমিন, কেপিএমের মহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্যিক) আব্দুল্লাহ আল মামুন, মহাব্যবস্থাপক (উৎপাদন) মো. মইদুল ইসলাম, মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ এবং কেপিএম সিবিএ সভাপতি মো. আবদুল রাজ্জাক।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব ওবায়দুর রহমান বলেন, কেপিএমের প্রচুর নিজস্ব জমি রয়েছে। যার পরিমাণ প্রায় ১ লাখ ২৭ হাজার একর। এই জমিগুলোকে কাজে লাগানোর জন্যও আমরা চিন্তা করছি। নতুন কারখানার জন্য কেপিএম যে প্রস্তাবনা দিয়েছে তা বাস্তবায়ন হলে প্রচুর কাঁচামালের প্রয়োজন হবে। এই কাঁচামাল প্রাপ্তির জন্য কেপিএমের খালি জমিগুলোকে কাজে লাগাতে হবে।

বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান মোঃ ফজুলর রহমান বলেন, পুরাতান কারখানা হলেও বাজারে কেপিএম উৎপাদিত কাগজের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। বাজারে কাগজের চাহিদা পূরণ করতে হলে কেপিএমকে আধুনিকায়ন করে চালাতে হবে। যা বর্তমান কারখানার মাধ্যমে সম্ভব নয়। তবে সার্বিক বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।

কর্ণফুলী পেপার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শহীদ উল্লাহ্‌ বলেন, চন্দ্রঘোনায় বর্তমানে যে স্থানে কেপিএম কারখানার অবস্থান সেখানেও পর্যাপ্ত খালি জমি রয়েছে। সেই জমিগুলোকে কাজে লাগাতে এবং কাগজের চাহিদা পূরণে পূর্বেই প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছিল। তবে সার্বিক বিবেচনায় বর্তমান অবস্থায় পূর্বে প্রদত্ত প্রস্তাবনা রিভিউ করার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। শিল্প উপদেষ্টা মহোদয়ও প্রস্তাবনা রিভিউ করার উপর গুরুত্বারোপ করেছেন। এ ব্যাপারে শিল্প মন্ত্রণালয় দ্রুতই কার্যকর পদক্ষেপ নেবে বলে কারখানার এমডি মো. শহীদ উল্লাহ্‌ আশা প্রকাশ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঘোষিত সময়ের মধ্যে স্থানীয় নির্বাচন করা অসম্ভব : সালাহউদ্দিন
পরবর্তী নিবন্ধ৭৮৬