অতিরিক্ত রোগীর চাপ, জনবল সংকটে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত

পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গণশুনানি

পটিয়া প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ২৬ জুন, ২০২৫ at ১০:১৯ পূর্বাহ্ণ

পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল সংকট ও অতিরিক্ত রোগীর চাপে কাঙ্ক্ষিত সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না বলে মনে করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও সেবা গ্রহীতারা। গতকাল বুধবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবার মানোন্নয়নে সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) পটিয়ার উদ্যোগে সেবাগ্রহীতাদের অংশগ্রহণে গণশুনানিতে এমন অভিমত ব্যক্ত করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও সেবাগ্রহীতারা।

সনাক পটিয়ার সাবেক সভাপতি এস.এম..কে. জাহাঙ্গীরের সভাপতিত্বে ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর এরিয়া কোঅর্ডিনেটর এ.জি.এম. জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত গণশুনানিতে প্রধান অতিথি ছিলেন পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আবু তৈয়ব। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সনাক পটিয়ার সহসভাপতি সাংবাদিক আবদুর রাজ্জাক। হাসপাতালে সেবার মানোন্নয়নে গৃহীত নানা পদক্ষেপ তুলে ধরেন আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সাজ্জাদ ওসমান।

বক্তব্যে সেবাগ্রহীতারা হাসপাতালের সেবার বিষয়ে অভিযোগ তুলে বলেন, যথাসময়ে নার্সদের সেবা পাওয়া যায় না। সব সময় ওয়ার্ড ও টয়লেট পরিস্কারপরিচ্ছন্ন থাকে না। আন্তঃবিভাগে সকালবিকাল দুই বার ডাক্তার ভিজিট করার কথা থাকলেও ১ বার ভিজিট করা হয়। দালালের খপ্পরে পড়ে অনেকে সাশ্রয়ী মূল্যে সেবা নিতে এসে গেইট থেকেই ফিরে যায়। বহির্বিভাগে ওষুধ কোম্পানি প্রতিনিধিদের উপস্থিতির কারণে সাধারণ রোগীরা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কখনো কখনো রোগীদের বাইরের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পাঠানো হচ্ছে। পাশাপাশি অনেক ক্ষেত্রে আন্তরিকতা ও সেবা প্রাপ্তিতে গভীর সন্তুষ্টি প্রকাশ করা হয়। সেবাগ্রহীতাদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সমস্য তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন আবুল হাসেম, জেসমিন আকতার, সাকিবুল ইসলাম, মোহাম্মদ ছৈয়দ, কহিনুর আকতার, পারভিন আক্তার, খতিজা আকতার, জাহাঙ্গীর আলম, আবদুল মান্নান। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. মোসাম্মৎ সুলতানা আকতার, সিনিয়র স্টাফ নার্স অর্পিতা দত্ত, সিনিয়র স্টাফ নার্স শাহিদা পারভিন, তালহা রহমান, মো. মারুফ উল আলম।

প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, গত কয়েক মাসের মধ্যে পূর্বের অবস্থা থেকে অনেক পরিরর্তন হয়েছে। নতুন নতুন সেবা যুক্ত হয়েছে। বিশেষ করে আলট্রাসনোগ্রাফি ও রক্ত সঞ্চালন সেবা চালু হয়েছে। প্রতিদিন নরমাল ডেলিভারি হচ্ছে। এনেস্থেসিস্ট না থাকার কারণে সপ্তাহে মাত্র ১ বার সিজারিয়ান ডেলিভারি চালু করা হয়। আজ থেকে ডেঙ্গু পরীক্ষাও চালু করা হয়েছে। একজন এফসিপিএস ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে সপ্তাহে ৬ দিন গর্ভবতী ও প্রসব পরবর্তী মাথদের সেবা দেওয়া হচ্ছে। বহির্বিভাগে গড়ে ৪০০ এর অধিক রোগীকে সেবা দেয়া হয়। যার মধ্যে পটিয়ার বাইরে আনোয়ারা, চন্দনাইশ, বোয়ালখালী ও কর্ণফুলী উপজেলার রোগীও আছেন। আন্তঃবিভাগে ৫০ বেডের হাসপাতালে গড়ে ৮০ জনের বেশি রোগী ভর্তি থাকে। অথচ সে অনুযায়ী ডাক্তার, নার্স, ওয়ার্ডবয় ও অন্যান্য কর্মচারী নাই। যার ফলে প্রত্যেক রোগীকে কাঙ্ক্ষিত সেবা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে কাউকে সেবা বঞ্চিতও করা হচ্ছে না। সবাইকে যথাসাধ্য সেবা প্রদান করা হয়।

তিনি আরো বলেন, আজকের সভায় যে সব অভিযোগ ও পরামর্শ এসেছে তার সঠিক তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। এসব ছাড়াও আরো কোনো অভিযোগ ও পরামর্শ থাকলে নির্ভয়ে ও নিঃসংকোচে যে কোন সময় জানানোর আনুরোধ জানান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম জেলা সিমেন্ট ডিলার এন্ড মার্চেন্ট গ্রুপের প্রশাসকের দায়িত্বে মাহবুবুল হক
পরবর্তী নিবন্ধমহেশখালী সীমান্ত খাল উদ্ধারের দাবিতে বিভাগীয় কমিশনারকে স্মারকলিপি