চকরিয়া উপজেলার কোনাখালী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের (নিষিদ্ধ) সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন মোহাম্মদ কানন। ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আত্মগোপনে চলে যান। তবে সম্প্রতি তিনি এলাকায় ফিরে নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দেওয়া ছাড়াও সমন্বয়ক হিসেবে নিজেকে জাহির করে সরকারি সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে চাঁদাবাজি শুরু করেন। সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার জন্য অখ্যাত মিডিয়া প্রতিষ্ঠানের নামে তৈরি করেন ভুয়া পরিচয়পত্র। তবে শেষ রক্ষা হয়নি; কথিত সেই সমন্বয়ক ও সাংবাদিক কাননকে আটকের পর চকরিয়া থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে, হয়েছে মামলাও। গতকাল বুধবার ঢেমুশিয়া ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশ আবু তাহের মানিক বাদী হয়ে এই প্রতারকের বিরুদ্ধে মামলাটি রুজু করেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, গত মঙ্গলবার দুপুরে কানন নিজেকে সমন্বয়ক দাবি করে পরিষদের নারী উদ্যোক্তা আসমাউল হুসনার কক্ষে প্রবেশ করেন। এ সময় কানন বলেন– এখানে জনসাধারণের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে, আমি সমন্বয়ক এবং ক্রাইম রিপোর্টারও। আমাকে ৫ হাজার টাকা দিতে হবে। না হলে নিউজ করে দেব। এ সময় কানন উদ্যোক্তা আসমাউল হুসনাকে চাকরিচ্যুত ও মানহানিকর অপপ্রচারের ভয়ও দেখান। তাৎক্ষণিক বিষয়টি ইউনিয়ন পরিষদ প্রশাসনিক কর্মকর্তা, গ্রাম পুলিশ, দফাদারকে জানালে অভিযুক্ত কানন তখন তাদের প্রতিও অশোভন আচরণ, হুমকি ও সরকারি কাজে বাধার সৃষ্টি করেন। তখন উপস্থিত লোকজনের সন্দেহ হয় তার কথাবার্তায়। এর পর ৯৯৯–এ ফোন করে খবর দিলে পুলিশ এসে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চকরিয়া উপজেলা ছাত্র প্রতিনিধি মোবারক হোসেন জিসান ও সাঈদ হাসান বলেন, নিজেকে সমন্বয়ক ও কথিত সাংবাদিক পরিচয় দেওয়া কানন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বা জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) চকরিয়া উপজেলার প্রতিনিধিত্বমূলক কোনো কমিটিতে নেই। মূলত সে একজন নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, পুলিশের জাতীয় জরুরি সেবার ৯৯৯ মারফত ফোন পেয়ে ঘটনাস্থল ঢেমুশিয়া ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কানন নামের এক প্রতারককে চাঁদাবাজির অভিযোগে আটক করা হয়। এর আগে তাকে উপস্থিত জনতা গণধোলায় দেয়। কানন কোনাখালী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কুতুবদিয়া পাড়ার জাকারিয়ার ছেলে।
চকরিয়া সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার অভিজিত দাস বলেন, প্রতারণা, চাঁদাবাজি, সরকারি কাজে বাধা ও নারীকে হেনস্তার অপরাধ সংঘটনের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর তার বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।