খাগড়াছড়ির দীঘিনালা হয়ে রাঙামাটির লংগদু যেতে মেরুং ইউনিয়ন। মেরুংয়ে সড়ক ধরে কিছুদূর অগ্রসর হলে চংড়াছড়ি। হঠাৎ সড়কের পাশে দেখা মিলল অচেনা ফলে পরিপূর্ণ একটি ছোট গাছ। সামনে আরও কয়েকটি একই ফলের গাছ। মাঝারি আকারের গাছে পাতার চেয়ে ফলের সংখ্যা বেশি। সুদর্শন ফল, অনেকটা ছোট সাইজের কমলালেবুর মতো। গ্রীষ্মের তাপে ফলের খোলস ফেটে যাচ্ছে। ভেতরে সাদা বীজ। স্থানীয়রা নাম না জানলেও এই ফল পাখিদের পছন্দ বলে জানেন।
ফলটির নাম বন নারাঙ্গা। বিরল উদ্ভিদ। অনেক এলাকায় এটিকে তেলকাঁকড়া বলা হয়। গাছটির ইংরেজি নাম ঋধষংব ষরসব, বৈজ্ঞানিক নাম ঝঁৎবমধফধ সঁষঃরভষড়ৎধ। জানা যায়, ‘নারঙ্গ’ মানে কমলালেবু। ল্যাটিন বানান ঘধৎধহমব, ইংরেজিতে এটিই অপভ্রংশিত হয়ে হয়েছে ঙৎধহমব (ধহ ড়ৎধহমব)। পাকা ফলের রঙ কমলা বা কদমফুলের ভেতরের থ্যালামাসটার মতো, পাকলে ফলটা ফেটে যায়। তাই কোথাও কোথাও একে বলে ফাটা কদম।
বন গবেষণা ইনস্টিটিউট চট্টগ্রামের সাবেক মুখ্য গবেষণা কর্মকর্তা মো. খায়েরুল আলম বলেন, বন নারাঙ্গা পাহাড়ি বন, শালবন, গ্রামীণ বনসহ প্রায় সব জায়গাতেই হয়। এই ফল পাখিদের বেশ প্রিয়।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের সদ্য সাবেক বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম বলেন, বন নারাঙ্গা ফল হর্নবিল বা ধনেশ পাখির কাছে এটি বেশ প্রিয় ফল। বায়োডাইভারসিটি কনজারভেশন সোসাইটি অব সিএইচটির সংগঠক সবুজ চাকমা জানান, বন নারাঙ্গা আগের মতো সচারচর দেখা যায় না। মূলত জ্বালানি কাঠ সংগ্রহের জন্য নির্বিচারে অনেক গাছ কাটা হয়। এসব বিরল গাছগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রকৃতি ও পরিবেশের সুরক্ষায় স্বর্ণচাপা, গর্জন, উদালসহ আমাদের দেশীয় প্রজাতির বৃক্ষের সমপ্রসারণ করতে হবে। একই সাথে প্রকৃতিবান্ধব বৃক্ষের সুরক্ষা দিতে হবে।