‘নিয়মিত ভূমি উন্নয়ন কর প্রদান করি, নিজের জমি সুরক্ষিত রাখি’– এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সারাদেশের ন্যায় চট্টগ্রাম বিভাগেও আগামী ২৫ মে রোববার থেকে ২৭ মে মঙ্গলবার পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী ভূমি মেলা– ২০২৫’ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনসহ ১১টি জেলা, ১০৩টি উপজেলা/সার্কেল ভূমি অফিস ও ইউনিয়ন ভূমি অফিসসমূহ নিজ নিজ উদ্যোগে ‘ভূমি মেলা’ আয়োজন করবে। মেলায় ভূমি সেবা প্রদান ও ভূমি সেবা বিষয়ক জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালিত হবে। গতকাল নগরীর সার্কিট হাউসের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দিন।
ভূমি মন্ত্রণালয়, ভূমি সংস্কার বোর্ড ও ভূমি ব্যবস্থাপনা অটোমেশন প্রকল্পের সার্বিক সহযোগিতায় এ মেলা অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানান বিভাগীয় কমিশনার।
বিভাগীয় কমিশনার বলেন, আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের অন্যতম একটি ক্ষেত্র হল জনবান্ধব ভূমিসেবা জনসাধারণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া। ভূমি মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে ভূমি সংক্রান্ত সেবা সমূহ অটোমেশনের মাধ্যমে জনগণের নিকট পৌঁছানোর লক্ষ্যে নানাবিধ কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। এ সকল কার্যক্রম সর্বসাধারণের মাঝে ব্যাপক আকারে প্রচার প্রচারণা করা আবশ্যক। বিভাগীয় কমিশনার বলেন, ‘ভূমি মেলা’ উপলক্ষ্যে ২৫ মে সকাল ১০টায় নগরীর সার্কিট হাউস প্রাঙ্গণে বিভাগীয় পর্যায়ে জেলা প্রশাসন, চট্টগ্রামের সাথে সমন্বয়পূর্বক ‘ভূমি মেলা–২০২৫’–এর আনুষ্ঠানিক বর্ণাঢ্য র্যালি ও উদ্বোধন পরবর্তী গণ্যমান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, সমাজকর্মী, বিভিন্ন সরকারি–বেসরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, সেবাগ্রহীতা তথা সাধারণ নাগরিকগণের অংশগ্রহণে জনসচেতনতামূলক সভার আয়োজন করা হয়েছে। মেলা চলাকালীন চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস প্রাঙ্গণে ১২টি স্টলের মধ্যে ৬টি স্টলে মহানগরের ৬টি সার্কেলের যাবতীয় ভূমি সেবা প্রদান করা হবে। ২টি স্টলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের এল.এ শাখা ও রেকর্ডরুমের সেবা, ২টি স্টলে চট্টগ্রাম জেলার জরিপ ও ভূমির রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত সেবা এবং অপর ২টি স্টলের মাধ্যমে বাংলাদেশের যে কোনো প্রান্তের ভূমি বিষয়ক সেবা অর্থাৎ ভূমি উন্নয়ন কর প্রদান, ই–নামজারির আবেদনসহ অন্যান্য সেবা প্রদান করা হবে।
মেলার প্রধান আকর্ষণসমূহ : সংবাদ সম্মেলনে বিভাগীয় কমিশনার মেলার প্রধান আকর্ষণসমূহ তুলে ধরেন। সেগুলো হলো– অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর প্রদান ও রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত কার্যক্রম, ই–নামজারির আবেদন গ্রহণ, নিষ্পত্তিকৃত এলএ কেইসের ক্ষতিপূরণের চেক প্রদান, অনলাইনে খতিয়ানের সার্টিফাইড কপি প্রাপ্তির আবেদন গ্রহণ এবং তাৎক্ষণিকভাবে তা সরবরাহ।
এছাড়া মেলা চলাকালীন অনলাইনে মৌজা ম্যাপ ডাক বিভাগের মাধ্যমে সরবরাহ, জরিপ কার্যক্রম বিষয়ক সেবা, ভূমিহীনদের মধ্যে বন্দোবস্তকৃত কৃষি খাস জমির কবুলিয়ত ও দলিল হস্তান্তর, অংশগ্রহণকারী দপ্তরসমূহের সিটিজেন চার্টার অনুযায়ী কার্যক্রম উপস্থাপন, সেবা গ্রহীতাদের সেবা সম্পর্কিত বিভিন্ন জিজ্ঞাসার জবাব সরাসরি উত্তর প্রদানের জন্য সেবা বুথে একজন কর্মকর্তা নিয়োজিত থাকবেন। সকল নাগরিককে ভূমি মেলা–২০২৫–এ অংশগ্রহণ করে আধুনিক ও ডিজিটাল ভূমি সেবা গ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানান চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দীন। সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম বলেন, আগামী ২৫ থেকে ২৭ মে সার্কিট হাউসে অনুষ্ঠিতব্য ভূমি মেলায় জেলা প্রশাসনের নির্ধারিত স্টলে এসে গ্রাহকেরা তাদের জমির ই–নামজারির আবেদন করতে পারবেন এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট ঠিক থাকলে কোনো ধরনের হয়রানি ছাড়াই দিনে দিনে পর্চা সরবরাহের ব্যবস্থা থাকবে। একইসাথে আবেদনের তিন দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি সাপেক্ষে এল.এ কেইসের ক্ষতিপূরণের চেক প্রদান, মৌজা ম্যাপ সরবরাহ, অনলাইনে খতিয়ানের সার্টিফাইড কপি প্রাপ্তির আবেদন গ্রহণ এবং তাৎক্ষণিকভাবে তা সরবরাহের টার্গেট থাকবে। দুর্নীতি ও হয়রানিমুক্ত ভূমিসেবা নিশ্চিত করা আমাদের উদ্দেশ্য। অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) মোহাম্মদ নুর উল্লাহ নূরী ও অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা উপস্থিত ছিলেন।