২০২৪ এর বিদায়ের ঘণ্টা বেজে উঠেছে। সেই সাথে বিরাজ করছে শীতের মায়াময় আমেজ! বন্ধ হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বছরের শেষে এসে সরকারি–বেসরকারি নানা প্রতিষ্ঠানে কর্মের হালকা ভাব। বেড়ানোর জন্য এর চেয়ে মোক্ষম সময় আর হতে পারে না!
এমন সুন্দর মুহূর্তে মনকে আনন্দে আন্দোলিত করতে পর্যটন রাজধানী কক্সবাজারে বেড়াতে আসতে লাইন পড়েছে পর্যটকদের! ইতিমধ্যে ১০ ডিসেম্বর থেকে কক্সবাজারে বেজায় বেড়েছে পর্যটকের পদচারণা। এরপর শুক্রবার–শনিবারের সাপ্তাহিক ছুটি ও সম্মুখে কড়া নাড়া ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসকে উপলক্ষ্য করে বর্তমানে পর্যটকের ঢল নেমেছে পর্যটনের রাণী কক্সবাজারে।
পর্যটন সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, গতকাল শুক্রবার কক্সবাজারে বেড়াতে এসেছেন অন্তত দেড় লাখ পর্যটক! বেড়াতে আসা এসব পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে সমুদ্র সৈকত, সেন্টমার্টিন, ইনানী পাথুরে বীচ ও মহেশখালীর আদিনাথ মন্দিরসহ অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রগুলো।
কক্সবাজার হোটেল–মোটেল গেস্টহাউজ মালিক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার থেকে হোটেল–মোটেল ও কটেজের ৯০ শতাংশ কক্ষ বুকিং রয়েছে। ১৫ ও ১৬ ডিসেম্বরের জন্য তা শতভাগ অগ্রিম বুকিং হয়েছে। শুক্রবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, দেশের বিভিন্ন প্রান্তের পর্যটকরা বেড়াতে এসেছেন কক্সবাজারে। আগত পর্যটকদের বেশিভাগ কক্সবাজারে সমুদ্র সৈকতে ঘুরে বেড়িয়েছেন। পরিবার–পরিজন এবং বন্ধুবান্ধবের সাথে বেড়াতে আসা পর্যটকরা সমুদ্র সৈকতে গোসল এবং ঘোড়া, বীচবাইক, জেটস্কি চড়ে আনন্দ আর হৈ–হুল্লোড় করছেন। পর্যটকের পদচারণায় পুরো সমুদ্র সৈকত কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে উঠে। পর্যটন জোন কলাতলীতেও তিল ধারণের ঠাঁই নেই। কলাতলী–মেরিন ড্রাইভ হোটেল–রিসোর্ট মালিক সমিতির সভাপতি মুকিম খান বলেন, ‘পর্যটন মৌসুম বহু আগে শুরু হলেও সেন্টমার্টিন পর্যটক গমণ নিষেধ থাকায় এতদিন পর্যটন ব্যবসা জমেনি। ডিসেম্বরের শুরুতে সেন্টমার্টিনে জাহাজ চলাচল শুরু হলে চাঙ্গা হয়ে উঠে পর্যটন শিল্প। এর ফলে বেড়েছে পর্যটক। বর্তমানে সব ধরণের হোটেলে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত কক্ষ বুকিং রয়েছে। আগামী ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্তও ইতিমধ্যে বুকিং হয়ে গেছে।’
কঙবাজার হোটেল–মোটেল গেস্টহাউজ মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম সিকদার বলেন, ‘বহু চাহিদা থাকলেও সেন্টমার্টিনে যাচ্ছে দৈনিক মাত্র দুই হাজার পর্যটক। একারণে আগ্রহ থাকলেও অনেক পর্যটক এবছর কঙবাজারে আসছে না। তবে ভারতে বাংলাদেশীদের গমণ বন্ধ থাকায় সেই শূন্যতা অনেকটা পূরণ হয়েছে। ভারত যেতে না পেরে অনেকে কঙবাজারে বেড়াতে আসছেন।’
এদিকে বর্তমানে কঙবাজার আগত পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কঠোর নিরাপত্তা জোর রাখা হয়েছে। ট্যুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি জেলা ও থানা পুলিশ, র্যাবসহ অন্যান্য বাহিনীর নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা বলয় রাখা হয়েছে সর্বত্র।
এ ব্যাপারে কঙবাজারের পুলিশ সুপার মোঃ রহমত উল্লাহ বলেন, ‘পুলিশ ও র্যাবসহ সব আইন–শৃঙ্খলাবাহিনী সমন্বিতভাবে পর্যটকদের নিরাপত্তায় কাজ করছে। সেই সাথে সাদা পোশাকে রাতদিন গোয়েন্দা নজরদারিও রাখা হয়েছে।’