গত কয়েক বছরের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে এবারও টঙ্গীর তুরাগতীরে দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হবে তাবলীগ জামাতের সবচেয়ে বড় জমায়েত বিশ্ব ইজতেমা। আগামী বছর যথারীতি প্রথম পর্বে ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি ইজতেমায় অংশ নিবেন ‘জুবায়েরপন্থিরা’ এবং দ্বিতীয় পর্বে ৭ থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি অংশ নিবেন ‘সাদপন্থিরা’। খবর বিডিনিউজের।
তাবলীগ জামাতের দুই পক্ষ দিল্লির মাওলানা সাদ কান্ধলভি এবং বাংলাদেশের কাকরাইল মারকাজের মাওলানা জুবায়ের আহমদের অনুসারীদের বিরোধের শুরু ২০১৯ সালে। আগে এক মঞ্চ থেকে একবারই বিশ্ব ইজতেমা হলেও মতভেদের কারণে দুই পক্ষ বিশ্ব ইজতেমা দুইবারে করার সিদ্ধান্ত নেয়। মাঝে কোভিড মহামারীর কারণে ইজতেমা দুই বছর বন্ধ থাকে। ২০২২ সাল থেকে ফের ইজতেমা হচ্ছে দুই পর্বের আয়োজনে।
গতকাল রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এমন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্মসচিব কাজী মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এবারও বিশ্ব ইজতেমা দুই পর্বে পালনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। আশা করি উভয়পক্ষ বিষয়টি মেনে নেবে।’
প্রথম পর্বের আয়োজকরা তাদের আয়োজন শেষে ঢাকার বিভাগীয় কমিশনারের নেতৃত্বে গঠিত বিশ্ব ইজতেমার মাঠ প্রস্তুতি সংক্রান্ত কমিটিকে ৪ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৩টার মধ্যে ইজতেমার মাঠ বুঝিয়ে দেবেন। দ্বিতীয় পর্বের আয়োজনকারীরা একই দিন বিকালে কমিটির কাছ থেকে ইজতেমার মাঠ বুঝে নেবেন। দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা শেষে ১১ ফেব্রুয়ারি দুপুরে তারা কমিটির কাছে মাঠ হস্তান্তর করবেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জুবায়েরপন্থিদের একজন মাহফুজ হান্নান জানান, তারা সরকারের এই সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন। অন্যদিকে সাদপন্থী রেজা আরিফ জানিয়েছেন, সরকারের সিদ্ধান্ত জানার পর তারা নিজেদের মধ্যে বৈঠকে বসেছেন।
সমপ্রতি তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি বক্তব্যের জেরে তাদের মধ্যে চলমান বিবাদ নতুন রূপ পায়। গত ৫ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘ওলামা–মাশায়েখদের ইসলামি মহাসম্মেলন’ থেকে সাদপন্থিদের নিষিদ্ধ করাসহ ৯ দফা দাবি জানান জুবায়েরপন্থিরা, যারা নিজেদের ‘শুরায়ে নিজাম’ পরিচয় দিয়ে থাকেন। এরপর ১২ নভেম্বর কাকরাইল মসজিদ ও টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমার মাঠে সাদপন্থিদের প্রবেশের সুযোগ দিলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা অচলের হুঁশিয়ারি দেন জুবায়েরপন্থিরা। এমন উত্তেজনার মধ্যেই দুই পক্ষের ‘সমঝোতার ভিত্তিতে’ গত ১৫ নভেম্বর ঢাকার কাকরাইল মসজিদে সাদপন্থিদের ব্যাপক জমায়েত দেখা যায়। ‘চার সপ্তাহ থাকবেন জুবায়েরপন্থিরা আর দুই সপ্তাহ থাকবেন সাদপন্থিরা’ এমন সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে সেদিন কাকরাইল মসজিদে দুই সপ্তাহের অবস্থান শুরু করেন সাদপন্থিরা।