বিপিএলের ১১তম আসর আগামী ৩০ ডিসেম্বর সোমবার শুরু হবে। দেশের পট–পরিবর্তনের পর ক্রিকেট বোর্ডেও পরিবর্তন আসে। নাজমুল হাসান পাপনের জায়গায় সভাপতি হয়েছেন ফারুক আহমেদ। এবারের বিপিএলে গতানুগতিকের চেয়ে বরং ভিন্ন কিছুই দর্শক দেখবে বলে জানিয়েছেন তিনি। আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি দুর্বার রাজশাহীর মুখোমুখি হবে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফরচুন বরিশাল। একইদিন দ্বিতীয় ম্যাচে লড়বে রংপুর রাইডার্স ও ঢাকা ক্যাপিটাল। সাত দলের অংশগ্রহণে এবার অনুষ্ঠিত হবে ৪৬টি ম্যাচ। সপ্তাহের ছয় দিন প্রথম ম্যাচ শুরু হবে দুপুর দেড়টা থেকে, দ্বিতীয় ম্যাচ সাড়ে ৬টা থেকে। শুধুমাত্র শুক্রবারে প্রথম ম্যাচ দুপুর ২টায় ও দ্বিতীয় ম্যাচ সন্ধ্যা ৭টায় শুরু হবে। ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে ঢাকার প্রথম পর্ব। সিলেট পর্ব চলবে ৬ জানুয়ারি থেকে ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত। ১৬ জানুয়ারি থেকে ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে চট্টগ্রাম পর্ব। এরপর লিগ পর্বের বাকি অংশ ও প্লে–অফ রাউন্ড খেলতে ঢাকায় ফিরবে সবগুলো দল। ৭ ফেব্রুয়ারি ফাইনালের মধ্য দিয়ে পর্দা নামবে আসরের। প্লে–অফের সবগুলোর ম্যাচের জন্যই থাকছে রিজার্ভ ডে। গতবার খেললেও এবারের আসরে অংশ নিচ্ছে না কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স, চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ও দুর্দান্ত ঢাকা। তাদের পরিবর্তে দুটি নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি–ঢাকা ক্যাপিটালস ও দুর্বার রাজশাহীর দেখা মিলবে এবার। এছাড়া ১১ বছর পর দল গড়েছে চিটাগং কিংস।
এদিকে বিপিএলের শুরু থেকেই একটি বিষয় ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সেটা হলো–পারিশ্রমিক সমস্যা। নতুন আসর যখন ঘনিয়ে আসছে, তখন গত আসরের পারিশ্রমিক নিয়ে বেশ কজন বিদেশি ক্রিকেটারের অভিযোগের কথা উঠে এসেছে। তাদের সেই বকেয়া অর্থ পরিশোধের ব্যবস্থা নিতে বিপিএল কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ওয়ার্ল্ড ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন (ডব্লিউসিএ)।
বিশ্বব্যাপী খেলোয়াড়দের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন ডব্লিউসিএ এ ব্যাপারে ইতোমধ্যেই একটি চিঠি পাঠিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি)। ক্রিকেটভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ক্রিকবাজের সঙ্গে আলাপকালে ডব্লিউসিএ’র প্রধান নির্বাহী টম মোফাট বলেন, ‘বিপিএলের গত আসরে খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক না পাওয়ার ও বিলম্বে পাওয়ার ব্যাপারে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অভিযোগ এসেছে আমাদের কাছে এবং এর বেশিরভাগই এখনো মীমাংসিত হয়নি।’ ‘আমাদের খেলায় এটি একটি চলমান বিস্তৃত সমস্যা এবং এই ধরনের সমস্যার অভিযোগ এখনো পাওয়া যাচ্ছে, যা হতাশাজনক। খেলাটির শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের এ সমস্যার সমাধানে এগিয়ে আসার জন্য আমরা ধারাবাহিকভাবে আহ্বান জানাচ্ছি এবং তারা যেন খেলোয়াড়দের প্রাপ্য অর্থ দ্রুত পরিশোধের নিশ্চয়তা দেন।’ গত বিপিএলে পারিশ্রমিক ইস্যু নিয়ে অন্তত ১৫ জন ক্রিকেটার অভিযোগ জানিয়েছেন। যা প্রায় আড়াই লাখ মার্কিন ডলারের মতো।
অন্যদিকে একটি ফ্র্যাঞ্চাইজি আছে যারা এবারের আসরের অংশ নিচ্ছে না, তারা প্রায় এক লাখ ডলারের মতো বকেয়া রেখে গেছে। পারিশ্রমিক ইস্যুটি নিয়ে অবগত আছেন বিপিএলের গভর্নিং কাউন্সিলের সচিব নাজমূল আবেদীন ফাহিম। তা সমাধানের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি। ফাহিম বলেন, ‘সেই সমস্যাটি সমাধানের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিসিবির প্রধান নির্বাহী বিষয়টি দেখছেন এবং তিনিই সঠিক উত্তর দিতে পারবেন এর। তবে ডব্লিউসিএ’র চিঠির বিষয়টি সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় কাজ করা হচ্ছে।’
ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত পাল জানান, ১৫ জন ক্রিকেটারের মধ্যে ১২ জনের বকেয়া পারিশ্রমিক ফ্র্যাঞ্চাইজিদের মাধ্যমে পরিশোধ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘তিনটি ফ্র্যাঞ্চাইজি থেকে তিনজন ক্রিকেটার আছেন যারা এখনো পারিশ্রমিক পাননি। তবে আমরা আশা করছি, দ্রুতই নিজেদের পারিশ্রমিক পাবেন তারা।’ পারিশ্রমিকসহ অন্যান্য ইস্যুর কারণে বিপিএলকে ‘যন্ত্রণা’ অ্যাখায়িত করেছিলেন বিসিবির সাবেক সভাপতি। এখন নতুন সভাপতি ফারুক আহমেদ সেসব ইস্যু সামলে কীভাবে বিপিএলকে একটি সফল টুর্নামেন্টে রূপ দেন, তা দেখার বিষয়। যিনি আবার বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যানও।