চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) স্টেশনে গতকাল শুক্রবার দুপুর ২ টায় মুজিববাদের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সাত দফা দাবিতে জুলাইয়ের কাফেলার ব্যানারে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেন।
মানববন্ধনে শহীদ ফরহাদের রুমমেট ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী অন্তর সফিউল্লাহ বলেন, আমাদের পাঠ্যপুস্তকে ৭২ থেকে ৭৫ এর ইতিহাস মুছে ফেলা হয়েছে। আমাদের পড়ানো হয়নি ৭৪ এর দুর্ভিক্ষ আর ফেলানীর কাপড় জড়ানো লাশের ইতিহাস। মুজিববাদী চেতনার ফলস্বরূপ আমরা দেখেছি ২০০৯ সালে দেশপ্রেমিক অফিসারদের কীভাবে হত্যা করা হয়। আমরা দেখেছি মুজিববাদীদের চালানো ২০১৩ এর শাপলা চত্বর গণহত্যা৷ সর্বশেষ ২৪ এর জুলাই অভ্যূত্থানে মুজিববাদের ফুটসোলজাররা আমার ভাই ফরহাদের মাথায় তিনটি গুলি করে। আমরা দেখেছি ওরা কীভাবে আমাদের ভাইবোনদের নির্বিচারে হত্যা করে। এত কিছুর পরেও মুজিববাদী আদর্শের ধারকবাহক আওয়ামী লীগকে কেন নিষিদ্ধ করা হচ্ছে না? সরকারকে এটা ভেবে দেখতে হবে।
ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী ইসতিয়াক হোসেন মজুমদার বলেন, অনেকে বলেন খুনি হাসিনা খারাপ কিন্তু বাকশালের মুজিব ভালো। এই সুশীলতা স্পষ্ট ভন্ডামী ছাড়া কিছুই না। সন্ত্রাসী ছাত্রলীগ, যুবলীগ এবং আওয়ামী লীগ মুজিববাদের আদর্শের দোহাই দিয়েই এত বছর গুম, খুন, হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট করে এসেছে। কম্বল চোর বাকশালী মুজিববাদের চেতনাকে সমূলে উৎপাটন না করা পর্যন্ত জুলাই অভ্যূত্থানের স্পিরিট প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। মুজিববাদের সাংস্কৃতিক বীজ থেকে গেলে আমাদেরকে আবার নতুন গণহত্যার শিকার হতে হবে। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ এবং মুজিববাদকে সমূলে উৎপাটনের মাধ্যমে গণহত্যা চালানো ফ্যাসিবাদের কফিনে সর্বশেষ পেরেকটি ঠুকে দিতে হবে। রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শাহাদাত চৌধুরী মুজিববাদী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জুলাইয়ের কাফেলার পক্ষ থেকে সাত দফা দাবিতে বলেন, স্বৈরাচারের মদদপুষ্ট শাহাবুদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি পদ থেকে অপসারণ করতে হবে। গণতদন্ত কমিশন গঠন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে শাপলা গণহত্যার বিচার করতে হবে। অনতিবিলম্বে জুলাই গণহত্যার সুষ্ঠু বিচারকার্য শুরু করতে হবে। গণহত্যার সাথে জড়িত খুনি কর্মকর্তাদের বিচার করতে হবে। বাকশালী মুজিববাদী চেতনা সমূলে উচ্ছেদ করতে হবে। আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। সকল রাষ্ট্রীয় স্থাপনা ও কার্যালয় থেকে বাকশালপন্থী স্বৈরাচার শেখ মুজিবের নাম ও ছবি অপসারণ করতে হবে। তদন্ত কমিশন গঠন করে আওয়ামী লীগের আমলে সংঘটিত সকল জুলুম, বেইনসাফির সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার করতে হবে। জুলাই অভ্যূত্থানের পর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের কেন পালিয়ে যেতে দেওয়া হলো এবং এই কাজে কারা সাহায্য করল, তার সুষ্ঠু তদন্ত, জবাবদিহিতা এবং বিচার করতে হবে। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।