সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) সহযোগী সংগঠন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের দুই নেত্রীকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। গত মঙ্গলবার রাঙামাটি শহরে জেএসএস–ইউপিডিএফের সংঘর্ষের মধ্যে তাদের অপহরণের অভিযোগ ওঠে প্রসিত খীসার নেতৃত্বাধীন ইউপিডিএফের বিরুদ্ধে।
গতকাল বুধবার এক যৌথ বিবৃতিতে ২ নেত্রীকে অপহরণের অভিযোগ তোলে সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জেএসএসের ছাত্র সংগঠন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন। সংগঠন দুটি জানিয়েছে, অপহৃত ২ নেত্রী হলেন হিল উইমেন্স ফেডারেশন রাঙামাটি জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সুষ্টি চাকমা এবং তথ্য ও প্রচার সম্পাদক কাঞ্চনমালা চাকমা। তাদেরকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করা হয় বলে অভিযোগ করা হয়।
পিসিপি কেন্দ্রীয় তথ্য প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক অন্বেষ চাকমার সই করা যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, মঙ্গলবার ইউপিডিএফ (প্রসিত গ্রুপ) রাঙামাটি শহরে সহিংসতা ও নাশকতা সৃষ্টির অপচেষ্টার হীন উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে দেশীয় অস্ত্র, ইট, গুলতি, লাঠিসোটা নিয়ে মানিকছড়ি–রাঙামাটি সড়ক এবং রাজবাড়ি–শিল্পকলা একাডেমি এলাকা হয়ে দুই দিক থেকে প্রবেশ করে শহরের জিমনেশিয়াম প্রাঙ্গণে গণসমাবেশ করার ঘোষণা দেয়। এ উদ্দেশ্যে জেলার কাউখালী, ঘাগড়া, কুতুককছড়ি, সাপছড়ি, নান্যচর, বন্দুকভাঙা এলাকা থেকে কয়েক হাজার সাধারণ জনগণকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ১০টির অধিক জিপ ও ১৫টির অধিক ট্রলার বোট নিয়ে রাঙামাটি শহরে প্রবেশ করতে থাকে।
বিবৃতিতে বলা হয়, রাঙামাটি শহরে স্থিতিশীলতা রক্ষা ও জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে পিসিপি ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের দুটি টিম তাদেরকে স্ব–স্ব এলাকায় ফিরে যাওয়ায় আহ্বান জানায়। কিন্তু এ আহ্বান উপেক্ষা করে মানিকছড়ি থেকে শহরে প্রবেশ করার সময় পিসিপি ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের দুটি টিমের ওপর জিপ ও ট্রলার থেকে ইট–গুলতি নিক্ষেপ করতে থাকে এবং যানবাহন থেকে নেমে লাঠিসোটা নিয়ে হামলা করতে থাকে। এ সময় অস্ত্রের মুখে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের ২ নেত্রীকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। অপরাপর কর্মীদের হামলা করলে যুব সমিতি, পিসিপি ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের ২০ জনের অধিক নেতাকর্মী আহত হন এবং তার মধ্যে ১৭ জন কর্মী রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিতে বাধ্য হয়। বিবৃতিতে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন ২ নেত্রীকে দ্রুত নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান।
তবে অপহরণের অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপিডিএফ মুখপাত্র অংগ্য মারমা বলেন, আমরা নিজেরা সমাবেশ করতে গিয়ে মার খেলাম। আমাদের নেতাকর্মীরা আহত হয়েছেন। ৮–৯ জন এখনো তাদের হেফাজতে রয়েছেন। এই ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করার জন্য তারা এমন অভিযোগ করছে। আমরা এটার তীব্র নিন্দা জানাই।