অর্থনীতিতে সরকার পাঁচ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে : সিপিডি

| সোমবার , ৩ জুন, ২০২৪ at ৯:০৬ পূর্বাহ্ণ

অর্থনীতিতে সরকার বর্তমানে পাঁচ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। চ্যালেঞ্জগুলো হলো কম রাজস্ব আদায় ও রাজস্ব আদায়ের সুযোগ কমে আসা, সরকারের বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণের প্রবণতা অব্যাহত থাকা ও তারল্য কমে আসা, মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক লেনদেনের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ আরও বৃদ্ধি পাওয়া এবং রিজার্ভ অবস্থার অবনতি। গতকাল রোববার ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি : ২০২৩২৪ তৃতীয় অন্তর্বর্তীকালীন পর্যালোচনা’য় মূল প্রবন্ধে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম এসব তথ্য দেন। খবর বাংলানিউজের।

গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, অর্থনীতি ধারাবাহিকভাবে কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। ২০২০২১ অর্থবছরে করোনাভাইরাস মহামারিতে অর্থনীতিতে যে সংকট তৈরি হয়েছিল, পরের বছর কিছুটা কমে এলেও সঙ্গে যোগ হয়েছে রাশিয়াইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতি। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে নীতির দুর্বলতা, সুশাসনের অভাব ও প্রয়োজনীয় সংস্কারের ব্যর্থতা। এগুলো ধারাবাহিকভাবে চলেছে। তিনি বলেন, এসব চ্যালেঞ্জ চলতি বছরেই নতুন না। আগের বছরেও ছিল। এগুলো মোকাবিলা করতেই সরকার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সঙ্গে অর্থনৈতিক সংস্কারে গেছে, ঋণ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কিন্তু এই সংস্কার কর্মসূচি বড় ধরনের কোনো ফল দেবে, এখন পর্যন্ত তা চোখে পড়েনি। সরকারের সামনে দুটি পথ রয়েছে, উচ্চ প্রবৃদ্ধি আর সামগ্রিক স্থিতিশীলতা। উচ্চ প্রবৃদ্ধির চেয়ে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ধরে এগুনো উচিত। কিন্তু সরকারের সূচকগুলো ধরার ক্ষেত্রে এক ধরনের গতানুগতিক পথে রয়েছে। সূচকগুলো উচ্চ লেবেলে ধরা হয়। চলতি ২০২৪ অর্থবছরে জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল সাড়ে ৬ শতাংশ। এডিবি বলছে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৬ দশমিক ১ শতাংশ। আইএমএফ বলছে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ। বিশ্ব ব্যাংক বলছে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। যে প্রবৃদ্ধি সরকারি সংস্থাগুলো দিচ্ছে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর আরো কম প্রাক্কলন করছে। আমরা দেখতে চাই এই নিম্ন প্রবৃদ্ধি নিয়ে সামষ্টিক স্থিতিশীলতা অর্জন করতে পেরেছে কিনা। তা না পারলের দুদিক থেকে ক্ষতি হবে। বাজেটের প্রাক্কলনে সরকার গতানুগতিক ভুল পদ্ধতির ওপর রয়েছে উল্লেখ করে গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, প্রথম ছয় মাসের হিসাব প্রাক্কলন করা হয়েছে। এখানে ছয় মাসের মূল সূচকগুলো নেওয়া হয়েছে এবং একই সাথে যেগুলোর তথ্যউপাত্ত নেই সেগুলোর ক্ষেত্রে বাজেটে যে টার্গেট ধরা হয়েছিল সেটি ধরে প্রবৃদ্ধির এই হিসাব করা হয়েছে। এই পদ্ধতিকে আমরা ভুল (ভ্রমাত্মক) বলে মনে করি। কারণ যে বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা ইতোমধ্যে অর্জন করা থেকে অনেক দূরে রয়েছে। সেই বাজেটের প্রাক্কলন যদি এখনকার প্রাক্কলন করা হয় তাহলে সেটিও অর্জনযোগ্য হবে না। যেটা আগের বছরগুলোয় আমরা দেখেছি। তিনি বলেন, অর্থনীতিতে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য কৃষি খাতে এখনো যেখানে উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব সেখানে বৃদ্ধি; সিলেট ও দক্ষিণাঞ্চলের এক ফসিল জমিকে কমপক্ষে দুই ফসলি জমিতে রূপান্তর; সৌদি আরবের মতো যেসব দেশে লোক বেশি গেলেও সে হারে প্রবাসী আয় বৃদ্ধি করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা এবং ডলারের ক্রলিং প্যাকের মাধ্যমে ডলারের বাজার স্থিতিশীল করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত রাখতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধছিনতাইয়ের প্রতিবাদ করায় ব্যবসায়ীর মাথা ফাটালো ছিনতাইকারীরা
পরবর্তী নিবন্ধকক্সবাজার থেকে অপহৃত দুই পর্যটক টেকনাফে উদ্ধার