চট্টগ্রাম নগরীতে লুডু খেলা নিয়ে মনমালিন্যের জের ধরে পিটিয়ে আলমগীর ফকির (৬৫) নামে এক রিক্সাচালককে খুন করে রিক্সা ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় মোঃ আরিফ (২৮) নামে মূল অভিযুক্তকে ২৪ ঘন্টায় গ্রেফতার করেছে বন্দর থানা পুলিশ।
রবিবার (২ মে) থানা সূত্রে নিশ্চিত করা হয়, নগরীর বন্দর থানাধীন ধুপপুল এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ও দোকানে কেজি হিসেবে ৩ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি করে দেওয়া রিকশার বিভিন্ন যন্ত্রাংশ এবং হত্যার কাজে ব্যবহৃত ১টি রেঞ্চ উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতার আসামি জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, নিহত ভিকটিম পূর্বে একই গ্যারেজে রিকশা চালাতো। গ্যারেজে মোবাইল অ্যাপসে লুডু খেলা নিয়ে দুজনের মধ্যে বাক-বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে নিহত ভিকটিম আসামিকে একটি থাপ্পড় মারে। একারণে ভিকটিমের প্রতি ক্ষোভ সৃষ্টি হয় আসামির। প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগের অপেক্ষায় থাকে আসামি।
ভিকটিমকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে সে একটি রেঞ্চ তার সাথে রাখতো। তারই ধারাবাহিকতায় গত ৩০ মে রাত ২.৫৫ টার দিকে সল্টগোলা ক্রসিং ফলের দোকানের সামনে থেকে তার পূর্বপরিচিত ভিকটিম আলমগীর ফকিরের রিকশায় উঠে।
রিক্সযোগে নগরীর ইসহাক ডিপোতে যাওয়ার পথে বন্দর থানাধীন কাস্টম ব্রিজের ১০০ গজ পশ্চিমে রাস্তার উপর পৌঁছালে সে আলমগীর ফকির (ভিকটিম)কে তার সাথে থাকা ১টি রেঞ্চ দিয়ে ভিকটিমের মাথার ডান পাশে আঘাত মেরে রিকশাটি নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।
তখন ভিকটিম তাকে বাধা প্রদান করলে উভয়ের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। পরবর্তীতে সে পুনরায় রেঞ্চ দিয়ে ভিকটিমের গলাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে একাধিকবার আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে।
লোকজন যেন তার মৃতদেহটি না দেখে সেজন্য আসামি তার মৃতদেহটি টেনেহিঁচড়ে একটু আড়ালে রেখে ঘটনায় ব্যবহৃত রেঞ্চটি ঘটনাস্থলের পাশে ফেলে দেয়।
থানা সূত্রে জানা যায়, ঐ এলাকায় খবর পেয়ে পূর্বে পিবিআইয়ের সহায়তায় সেখানে পড়ে থাকা অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশটি আলমগীর ফকির (৬৫) নামে এক ব্যক্তির বলে সনাক্ত করে।
পরে মামলা রুজুর ২৪ ঘন্টার মধ্যে ঘটনাস্থলের পাশে থাকা সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ও বিশ্বস্ত গুপ্তচর হতে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে একপর্যায়ে আসামি মোঃ আরিফ কে বন্দর থানাধীন ধুপপুল এলাকাতে অবস্থিত তার বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
এ ব্যাপারে বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মনজুর কাদের মজুমদার বলেন, আসামি ভিকটিমের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে তার ব্যবহৃত ফিচার ফোন ও রিকশাটি নিয়ে যায়।
রিক্সার যন্ত্রাংশ খুলে খুলশী থানাধীন সর্দার বাহাদুরনগর এলাকার খলিলের স্ক্র্যাপ এর দোকানে কেজি হিসেবে ৩,৫০০ টাকায় বিক্রি করে দেয়। প্রথমে অজ্ঞানামা লাশটি পরিচয় অজানা ছিল পরে লাশটির পরিচয় সনাক্ত করতে সক্ষম হয়। পরবর্তী মামলার প্রেক্ষিতে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।